
ছবি: সংগৃহীত।
আজকের দুনিয়ায় মানসিক চাপ, অনিয়মিত জীবনযাপন আর প্রযুক্তিনির্ভরতা আমাদের মস্তিষ্কের ওপর ফেলছে গভীর প্রভাব। ভুলে যাওয়া, মনোযোগে ঘাটতি বা সিদ্ধান্তহীনতা হয়ে উঠছে সাধারণ সমস্যা। কিন্তু বিজ্ঞান বলছে, কিছু অভ্যাস ও পদ্ধতি নিয়মিত চর্চা করলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা আবারও ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
চলুন জেনে নিই এমন দু'টি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত উপায়, যা মস্তিষ্ককে করবে আরও সজাগ, স্মরণশক্তিতে আনবে উন্নতি।
১. নিয়মিত এক্সারসাইজ – মস্তিষ্কের জন্য সুপারফুড!
আমরা প্রায়ই ভাবি শরীরচর্চা শুধু শরীরের জন্য, কিন্তু বাস্তবে এটি মস্তিষ্কের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। বিজ্ঞান বলছে, প্রতিদিন ৩০ মিনিটের মতো হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম—যেমন হাঁটা, সাইক্লিং বা যোগব্যায়াম—মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বাড়ায় এবং নিউরোনের মধ্যে নতুন সংযোগ তৈরি করে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত শরীরচর্চা হিপোক্যাম্পাস নামক মস্তিষ্কের অংশকে সক্রিয় করে তোলে, যেটি আমাদের শেখা ও স্মৃতির সঙ্গে জড়িত। বিশেষ করে বয়স্কদের ক্ষেত্রে শরীরচর্চা আলঝেইমার ও ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমাতে পারে।
২. ধ্যান (মেডিটেশন) – মন নিয়ন্ত্রণ মানেই মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধ্যান নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। নিউরোসায়েন্টিস্টরা দেখেছেন, প্রতিদিন মাত্র ১০-১৫ মিনিট গভীর মনোযোগে ধ্যান করলে মস্তিষ্কের গ্রে ম্যাটার ঘনত্ব বাড়ে—যা মনোযোগ, আবেগ নিয়ন্ত্রণ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে।
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, ৮ সপ্তাহের ধ্যান অনুশীলনে অংশগ্রহণকারীদের মস্তিষ্কের এমিগডালা (যা ভয় ও দুশ্চিন্তার সঙ্গে জড়িত) ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে যায়, ফলে তারা চাপের মধ্যে থেকেও সুস্থ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
প্রযুক্তির জগতে টিকে থাকতে হলে শুধু স্মার্ট ফোন নয়, স্মার্ট ব্রেইনও দরকার। আর সেটা গড়ে তুলতে চাই না কোনো ওষুধ, চাই শুধু একটু নিয়মিত অভ্যাস আর মানসিক যত্ন। প্রতিদিন কিছুটা সময় রাখুন শরীরচর্চা আর ধ্যানে—দেখবেন, আপনার মস্তিষ্কই হয়ে উঠবে আপনার সবচেয়ে বড় শক্তি।
নুসরাত