
ছবি :সংগৃহীত
ঘুম শুধু বিশ্রামের মাধ্যম নয়, এটি সুস্থ জীবনের অপরিহার্য অংশ। আর এই ঘুমের সময় মাথার নিচে ব্যবহৃত বালিশ যদি সঠিক না হয়, তাহলে তা মারাত্মক শারীরিক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে—বললেন বাত ব্যথা, প্যারালাইসিস ও রিহ্যাব ফিজিও বিশেষজ্ঞ ডাঃ মোঃ সফিউল্যাহ প্রধান।
তিনি বলেন, একজন সুস্থ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ছয় থেকে আট ঘণ্টা রাতের ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অনেকেই এমন ভুলভাবে ঘুমান যা ঘাড়ে গুরুতর ইনজুরির সৃষ্টি করতে পারে। কেউ কেউ খাটের রেলিংয়ে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েন, আবার কেউ দুই-তিনটি বালিশ দিয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েন। এসব অভ্যাস থেকে সৃষ্টি হয় “ডিস্ক প্রোলাপস”-এর মতো জটিল সমস্যা। তখন দেখা দেয়—হাত অবশ হয়ে যাওয়া, শক্তি না পাওয়া, ঘাড় নড়াতে কষ্ট হওয়া ইত্যাদি উপসর্গ।
ডাঃ প্রধান জানান, অধিকাংশ রোগীই জানেন না যে এইসব সমস্যার মূল কারণ হতে পারে অতিরিক্ত বা ভুলভাবে বালিশ ব্যবহার। কেউ কেউ বালিশকে দুই-তিনবার ভাঁজ করে ব্যবহার করেন, আবার কারও বালিশের নিচে পড়ে থাকে শক্ত বস্তু, যেটি তারা খেয়ালই করেন না। কেউ কেউ বসে ঘুমিয়ে পড়েন বা বাস জার্নিতে হঠাৎ ব্রেক কালে ঘাড়ে যে ঝাঁকি লাগে, সেটি “হুইপ-ফ্ল্যাশ ইনজুরি” হিসেবে পরিচিত এবং তা ঘাড়ে স্থায়ী ক্ষতি করতে পারে।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ, ঘাড়ের জন্য পাতলা ও খুবই নরম বালিশ ব্যবহার করা উচিত। তিনি বলেন, “আমি সাজেস্ট করি যে বাচ্চার জন্মের পরে আমরা মা-বোনরা যে বালিশ দেয়, লাইক দ্যাট।” যিনি কাত হয়ে ঘুমান, তিনি চাইলে বালিশটি সামান্য ভাঁজ করে গ্যাপ পূরণ করতে পারেন। তবে কেউই রাতে পুরোটা সময় এক ভঙ্গিমায় থাকেন না; কখনো চিত, কখনো ডান, আবার কখনো বাম দিকে ঘুমান। তাই এমন বালিশই ব্যবহার করা উচিত যা সব অবস্থায় ঘাড়কে সাপোর্ট দেয়।
তিনি আরও বলেন, “যখন চিত হয়ে ঘুমায় তখন যেন দুই তিনটা বালিশ না দেয়, পাতলা একটা বালিশে ঘুমায়।” অতিরিক্ত আরামের জন্য অতিরিক্ত বালিশ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
এছাড়া কোলবালিশ সম্পর্কে তিনি বলেন, “সুস্থ মানুষ কোলবালিশ ইউজ করতে চায়, এটা বেটার। এই কোলবালিশ ল্যাপিং করে ঘুমানোটা ভালো স্বাস্থ্যের জন্য।” তবে মাথার নিচে অবশ্যই পাতলা বালিশ ব্যবহার করাই সঠিক ও স্বাস্থ্যসম্মত।
সা/ই