ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

আজ বিশ্ব মা দিবস

মা আমার পৃথিবী

প্রকাশিত: ১৮:৩৮, ১০ মে ২০২৫; আপডেট: ১৯:০৮, ১০ মে ২০২৫

মা আমার পৃথিবী

মা। ভীষণ ছোট্ট এই একটা শব্দের মাঝে মিশে আছে বিশ্বের ভালবাসা। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম সম্পর্ক হলো ‘মা’। মা কখনো জীবনে হাজির হয়েছেন আবেগের আশ্রয় ভূমিকায়, আবার কখনো হয়ে উঠেছেন সংগ্রাম, আত্মত্যাগ, অধ্যবসায় ও সাফল্যের চাবিকাঠি। মা দিবস আরও একবার মায়ের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশের এক অন্যতম মুহূর্ত। এবারের মা দিবসে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণ শিক্ষার্থীদের ভাবনা ও প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেছেন-
মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ


মহীয়সী গর্ভধারিণী

সানজিদা আক্তার সেতু

‘মা’ যা এক অতুলনীয় অনুভূতির নাম। প্রিয় মা! মা এক অহ্মরের নামটির মধ্যে যেন মধু মাখা। মা সন্তানের এই সু সম্পর্ক যুগ যুগ ধরে টিকে থাকে যেন মানুষের হৃদয়ে। আমি আমার মায়ের কাছে চিরঋনী। জীবনের নৈতিকতা, বুদ্ধি, এবং সকল শিক্ষা আমি আমার মায়ের কাছে থেকে গ্রহণ করেছি। একজন মা ও যে বাবার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে সন্তানকে আগলে রেখে সুন্দর আগামীর পথ দেখাতে পারেন, তার বাস্তব উদাহরণ হচ্ছেন আমার মা। তিনি একটি পরিবারের আলোকবর্তিকা। আমার দৃষ্টিতে তিনি একজন মহীয়সী নারী। আমাদের প্রত্যেককেই তার মাকে ভালোবাসতে হবে, সম্মান করতে হবে কিন্তু সেটা কেবল একদিনের জন্য না। কেবল মা দিবসেই মাকে উপহার দিয়ে, কেক কেটে আমাদের দায়িত্ব যেনো শেষ না হয়ে যায়। মায়ের খেয়াল রাখতে হবে রোজ, মায়ের যত্ন নিতে হবে, ভালোবাসতে হবে। ছোটবেলায় আমাদের শখ আহ্লাদ পূরণের দায়িত্ব যেমন ছিলো মায়ের, তেমনি এখন আমাদের মায়ের শখ আহ্লাদ পূরণের দায়িত্ব নিতে হবে। কেননা এই পৃথিবীতে ভালোবাসার উদার উদাহরণ কেবল মায়ের পক্ষেই সৃষ্টি করা সম্ভব। অসাধারণ মায়ের ভালোবাসার কাছেই পৃথিবীর সকল ভালবাসা হার মানে। ভালো থাকুক পৃথিবীর প্রতিটা মা!

সানজিদা আক্তার সেতু
শিক্ষার্থী, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


ভালোবাসার নাম মা

কাব্য সাহা

পৃথিবীর নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, অকৃত্রিম স্নেহ, আত্মিক মায়ার টান, এমন প্রতিটি জানা-অজানা শব্দের সাথে ওতোপ্রোতো ভাবেই মিশে আছে ‘মা’। সমুদ্রের গভীরতা যেমন পরিমাপ করা সম্ভব নয়, তেমনি ভাবে মা’য়ের আত্মত্যাগ তথা ভালোবাসার গভীরতাও পরিমাপ কখনো সম্ভব নয়। পৃথিবীর সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল মা’য়ের কোল, যেখানের শীতলতা সন্তানকে বারংবার টেনে নেয়। মা’য়ের থেকে যেন উন্মুক্ত বইও নিজেকে উজার করে দেওয়ার শিক্ষা নেয় অন্যের জ্ঞানের পরিধি সম্মৃদ্ধির লক্ষ্যে। গর্ভধারণ থেকে শুরু করে সন্তানের জন্য মা’য়ের যে আত্মত্যাগ সে যেন পৃথিবীর সকল কিছুর ঊর্ধ্বে। মা’কে ভালোবাসার জন্য কখনোই নির্দিষ্ট কোনো দিনক্ষণের সীমাবদ্ধতা নেই কিন্তু বিশেষ দিন উদযাপন নিশ্চয়ই মা’য়ের ডোপামিন নিঃসরণ কয়েকগুণ বাড়িয়ে তোলে। ‘মা’ তো কখনো বিনিময় দাবি করেন না কিন্তু মা’য়ের দিনগুলো রঙিন এবং উৎসবমুখর করতে প্রতিটি সন্তানের রয়েছে দায়িত্ববোধ। ‘মা’ হলেন ম্যাজিকম্যান, সন্তানের মুখের হাসির জন্য যিনি সর্বদা প্রস্তুত, তেমনি মায়ের জন্যও প্রতিটি সন্তান হোক সুপারম্যান। প্রতিদিনই হোক মায়ের সাথে সময়ের বিনিময়, মায়ের মুখে হাসি থাকুক সবসময়। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে মা থাকুক স্মরণে। অনেক বেশি ভালোবাসি ‘মা’। ‘মা’ দিবসে আমার এই নিবেদন।

কাব্য সাহা
শিক্ষার্থী, ফার্মেসি বিভাগ
স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ


আজীবন যোদ্ধা-জননী

সানজিদা জান্নাত পিংকি

অবরোধবাসিনীদের মুক্তির জন্য লড়াই করেছেন বহু মহীয়সী।
আমার মা ও আমার কাছে তাদেরই একজন। আশির দশকে উচ্চশিক্ষার প্রবল ইচ্ছা থেকে যে নারী ঘর ছেড়েছেন, সে-ই বা কম কিসে! যেন নিজের জীবনের জাগরণ ঘটানো ও এগিয়ে যাওয়ার প্রখর আন্তরিকতায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন মা। পড়াশোনা শেষে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন উন্নয়নকর্মী হিসেবে। ঋণ বিভাগে নামকরা সব সংস্থায় নারী কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন দাপটের সঙ্গে। নারীর স্বাবলম্বিতার উৎকৃষ্ট উদাহরণ আমি আমার ঘরেই দেখেছি। বড় হয়েছি এক স্বাধীন, শক্তিশালী নারীকে দেখে। আজীবন মায়ের চাইতে বন্ধু রূপেই তাকে বেশি পেয়েছি শুধুমাত্র এই মানুষটার কাছেই আমি ‘ওপেন বুক’ হতে পারি। শ্রাবণ মাসের মতোই আমি কখনো মেঘ, কখনো বৃষ্টি আর কখনো রোদ হয়ে যাই। আর মা তার স্বভাবগত ভাবেই সহ্য করে চলেন আমাকে।
আমাকে সামলে রাখতে গিয়ে মা এক মহীরুহে রূপান্তরিত হয়ে গেছেন নিজের অজান্তেই। বাবার মৃত্যুর পরও যেভাবে সব আগলে রেখেছেন, শূণ্যতা কখনো টের পেতে দেননি। মায়ের সবচেয়ে বড় শক্তি তিনি অপ্রকাশিতভাবে হাসতে পারেন যেকোন কঠিন মুহুর্তে দাঁড়িয়ে। অনেকটা, ‘জাহান্নামে বসিয়া হাসি পুস্পের হাসি’ এর মতো। একই রূপে আমার বাবা, মা, বন্ধু, সম্পদ সবই তিনি। প্রতিনিয়ত শিখছি মায়ের থেকে। আজীবন যোদ্ধার ছায়া তলে নিরাপদ থাকুক পৃথিবীর সকল সন্তানেরা।

সানজিদা জান্নাত পিংকি
শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ
গণ বিশ্ববিদ্যালয়

প্যানেল

×