ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আছে বাধা ও ঝুঁকি তবু যাত্রা থেমে নেই

জান্নাতুল রুহানি

প্রকাশিত: ০১:২৮, ১৮ নভেম্বর ২০২২

আছে বাধা ও ঝুঁকি তবু যাত্রা থেমে নেই

দেশের কর্মক্ষেত্রে বাড়ছে নারীর অংশগ্রহণ

দেশের কর্মক্ষেত্রে বাড়ছে নারীর অংশগ্রহণ। জিডিপিতেও নারীর অবদান বাড়ছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণের হার ৩৮ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ ২০১৬-১৭ সালের শ্রমশক্তি জরিপেও কর্মক্ষেত্রে নারী হিস্যা কাছাকাছি থাকার কথা বলা হয়েছে, যা ১৯৭৪ সালে ছিল মাত্র ৪ শতাংশ। আর কর্মজীবী নারীর বড় অংশটি কাজ করেন ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায়।

কিন্তু এসব নারীদের কর্মক্ষেত্রে যাতায়াতের ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হতে হয়। হয়রানির শিকার হন অন্যান্য নারী যাত্রীরাও। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক প্রতিবেদন বলছে, দেশের শতকরা ৯৪ ভাগ নারী কোনো না কোনোভাবে গণপরিবহনে হয়রানির শিকার হন। গণপরিবহনের সমস্যা নারীর এগিয়ে যাওয়ার পথে অন্যতম বাধা। হয়রানি এড়াতে অনেক নারীই এখন গণপরিবহনের বিকল্প হিসেবে ব্যক্তিগত গাড়ি, স্ক্রুটি অথবা সাইকেল বেছে নিচ্ছেন। এসবের পাশাপাশি রাইড শেয়ারিংয়ের হিস্যাও বাড়ছে। নিরাপত্তার কারণে নারীদের যাতায়াতের ধরনে পরিবর্তন আনতে সক্ষম হচ্ছে এ সেবা।
ভোগান্তিহীন ও স্বাচ্ছন্দ্য যাতায়াতে অনেক নারীই বর্তমানে রাইডশেয়ারিংয়ের ওপর নির্ভর করছে। বাংলাদেশে যেসব প্রতিষ্ঠান রাইড শেয়ারিং সেবা দিয়ে থাকে তারমধ্যে অন্যতম উবার। বৈশ্বিক এ প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সালের ইকোনমিক ইমপ্যাক্ট রিপোর্ট অনুসারে, ৯৬ শতাংশ নারী যাত্রী বলেছেন, তাদের উবার বেছে নেওয়ার পেছনে নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।

একইসঙ্গে নারীদের গণপরিবহনের চেয়ে রাইডশেয়ারিং বেশি পছন্দ করার পেছনে আরও বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম হলো অনডিম্যান্ড ট্রান্সপোর্টেশন অর্থাৎ যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গা থেকে একটি বাটন ট্যাপ করলেই আরামদায়ক রাইড চলে আসে যাত্রীর দরজায়। রাইড শেয়ারিং সার্ভিসে ২৪ ঘণ্টাই এ সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে, যা গণপরিবহনে নেই। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে সহজে রাইড পাওয়া নিয়ে বেশকিছু অভিযোগের কথাও শোনা যায়।
নারীর নিরাপত্তার বিষয়টিকেই রাইডশেয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। এ কারণে রাইডশেয়ারিং অ্যাপে রয়েছে নিরাপত্তা ফিচারস্। নারীরা অ্যাপটির সেফটি ফিচারের সঙ্গে নিরাপদ এবং আরামদায়ক রাইড উপভোগ করতে পারেন। পাঁচজন বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে যাতায়াতের স্ট্যাটাস শেয়ার করা, লাইভ জিপিএস ট্র্যাকিং, ভেরিফাইড পার্টনার, ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ৯৯৯ সেবা, যেকোনো সময় যেকোনো ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য একটি ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (আইআরটি), ভ্রমণের সময় যেকোনো সমস্যা রিপোর্ট করার জন্য একটি হেল্পলাইনের মতো সুরক্ষাসহ সমস্ত রাইডে টু-ওয়ে ফিডব্যাকের সুবিধা আছে অ্যাপে।
রয়েছে বীমা সুবিধাও।

রাইডশেয়ারিং প্ল্যাটফর্মের ট্রিপগুলোতে চালক এবং যাত্রী উভয়ের জন্য বীমা সুবিধা রয়েছে। অ্যাপ ব্যবহারকালীন দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু, দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে স্থায়ী শারীরিক বিকলাঙ্গতা এবং হাসপাতালে ভর্তিসহ সবধরনের মেডিক্যাল স্বাস্থ্যসেবায় কভারেজ পাওয়া যায়। প্রয়োজন অনুযায়ী রয়েছে কার শেয়ারিং, বাইক শেয়ারিং এবং অটো-শেয়ারিং সেবাও। রাইড শেয়ারিংয়ের এমন সব সুবিধার জন্য যেকোনো প্রয়োজনে এমনকি অফিসের কাজের উদ্দেশ্যে শহরের বাইরে যেতে চাইলেও এটি হতে পারে দারুণ একটি সুযোগ। এজন্য নারীরা গণপরিবহনের হয়রানি এবং নিরাপত্তার কথা ভেবে স্বাচ্ছন্দ্যে এ সেবা গ্রহণ করছে।

×