মিতু আহসান
জনকণ্ঠের নিয়মিত ইউটিউব চ্যানেলে বিভিন্ন সফল ব্যক্তিত্বের সঙ্গে আলাপচারিতা দর্শকদের কাছে উপভোগ্য হয়ে উঠছে। সেখানে সক্ষম নারীদের সাফল্য গাঁথা তুলে ধরাও নিয়মিত বিষয়। এবারে উদীয়মান উদ্যোক্তা নারীর কাতারে যুক্ত হয়েছেন মিতু আহসান। ইশরাত পায়েল কথা বলেছেন এই নবীন উদ্যোক্তার সঙ্গে। সাক্ষাতকারের বিস্তারিত
জানাচ্ছেন- অপরাজিতা প্রতিবেদক
শুরুটা কিভাবে হলো?
বিশ্ব রঙের বিপ্লব সাহা এই অভাবনীয় সুযোগটা করে দিয়েছেন। স্বামী রাজু আহসান। তার মাধ্যমেই বিপ্লব সাহার সঙ্গে যোগাযোগ।
পড়াশুনা কোথায় করেছেন?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টেক্সটাইল বিভাগ থেকে স্নাাতক স্নাাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন। কাজটা যখনমাত্র সূচনাকাল সে সময় শুরু হয়ে গেল করোনার মহাদুর্বিপাক। ক্রেতা-বিক্রেতা সর্বজন যেন গৃহবন্দী অবস্থায় আটকা পড়ল। তখনই ভেতরের অদম্য ইচ্ছে থেকেই নিজেকে নতুনভাবে তৈরি করার আগ্রহ উদ্দীপনা জেগে উঠল।
এগিয়ে যাবার গল্প...
করোনার স্থবিরতায় যখন শুরু করলাম সে সময় টানা দুইদিন লাইফ অনুষ্ঠান করাও এক দুর্লভ বিষয়। যারা প্রতিনিয়ত এই কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন তারাই বলতে পারবেন- কিভাবে এই শুরু করাটা এক আকাক্সিক্ষত বিষয় ছাড়াও অসাধ্য কর্মযোগ।
বিশেষ কোন গুণ
কাপড় ধরলেই বুঝতে অসুবিধা হয় না তার গুণমান সম্পর্কে। সম্ভবত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার কারণেই বিষয়টি আয়ত্তে এসেছে।
প্রথম লাইফ করার অভিজ্ঞতা?
টানা দুই দিনে এক হাজারের মতো পণ্য বিক্রি হওয়া পরম আনন্দের ব্যাপার ছিল।
কোন্ কোন্ ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করা হয়?
বিশ^ রং তো আছেই। তাছাড়া আদি ঢাকেশ^রী বস্ত্রালয়, নিউ তাঁত ঘরসহ আরও কিছু ব্র্যান্ড।
নিজের সম্পর্কে কিছু কথা?
সবসময় পরিপাটি হয়ে থাকতে পছন্দ করি। নান্দনিক ভাবে নিজেকে উপস্থাপনা করাও সহজাত বৈশিষ্ট্য। চুপচাপ থাকতে ভাল লাগলেও যখন অনলাইনে যুক্ত হতে হয় কথা বলা ছাড়া বিকল্প কোন পথ থাকেই না।
বেড়ে ওঠাটা কোথায়?
শুধু ঢাকা শহর নয়- একেবারে পুরান ঢাকায়। ব্যক্তিগতভাবে শালীন ও মার্জিত ভাষায় কথা বলতে পছন্দ করি যা পুরান ঢাকার সঙ্গে অনেকটাই অমিল। সংযত, সাবলীল আর পরিচ্ছন্ন বাক্য ব্যয় নিজের ভেতরের বোধ থেকে তৈরি হয়েছে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?
নিজেকে একজন সফল মানুষ হিসেবে কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হওয়াই এই মুহূর্তে আকাক্সিক্ষত বিষয়। নিজেকে ব্যতিক্রমী উপস্থাপনায় হাজির করে আলাদা মাত্রার পণ্য গ্রাহকদের সরবরাহ করাও আন্তরিক ইচ্ছে।
বিভিন্ন গুঞ্জন কি কখনও তাড়া করেছে?
আসলে বিভিন্ন শিল্পে হরেক রকম মতবিরোধে, নিজের অপরিমেয় ব্যক্তিসত্তায় কখনও বা কিছু সমস্যা তো তৈরিই হয়। তবে এসব আমলে নিতে চাই না। সততা আর নিষ্ঠার সাথে নিজের ব্যবসায়িক আঙিনায় সফলতাকে ধরতে চাই। আর এটাই একমাত্র লক্ষ্য। গুঞ্জন কিংবা রেষারেষিকে যথাসম্ভব পাশ কাটাতে চাই।
কোন ধরনের অপ্রীতিকর মন্তব্য?
না কখনই কোন বাজে মন্তব্য শুনতে হয়ইনি। বরং দর্শক গ্রাহকদের ভাল রিভিও আমাকে সবসময় উৎসাহিত করেছে। যা এই সময়ের অনেক বড় প্রাপ্তি। যা ভাল লাগার বিষয়ই শুধু নয় অনেকের আশীর্বাদও বটে। আসলে স্বল্প কথায় বলাও মুশকিল।
স্বাচ্ছন্দ্যের পোশাক কোন্টি?
পাশ্চাত্যের শার্ট প্যান্টই সবচাইতে আরামদায়ক পোশাক আমার মতে। তবে শাড়িও আমার অনেক পছন্দের।
প্রথম কার কাছ থেকে শাড়ি পরা শিখা?
অবশ্যই স্নেহময়ী জননী মায়ের কাছ থেকে। বিয়ের পর নিজেই শাড়ি পরতে পারি। স্বামী কিংবা কাউকে শাড়ি ধরতে হয় না।
শাড়িতে নিজেকে ছাড়া আর কাকে বেশি ভাল লাগে?
আমার বড় বোনকে। আর জয়া আহসানকেও খুব ভাল লাগে শাড়িতে। তিনি তো চিরসবুজ এক স্নিগ্ধ নারী ব্যক্তিত্ব। জানি না জয়া আহসান কিভাবে তার স্বাস্থ্য আর সৌন্দর্যকে ধরে রেখেছেন। সত্যিই প্রশংসার যোগ্য।
কার ওপর বেশি আস্থা কিংবা বিশ^াস রাখতে পারেন?
বিয়ের আগে মা-ই ছিলেন আমার পরম আস্থাভাজন। আর এখন কাছের মানুষ স্বামীর ওপর পরম নির্ভর করা যায়।
রাজ্জাক-শাবানা জুটি আর রাজ্জাক-ববিতা কাকে বেশি পছন্দ?
রাজ্জাক-ববিতা। তবে রাজ্জাক-শাবানাও পছন্দ করার মতোই জুটি।
ত্রিভুজ সিনেমা বানালে কাকে জুটি হিসেবে নির্বাচন করবেন?
সিয়ামকে। পুজা চেরি ও নুসরাত ফারিয়াকে। তাছাড়া নতুনদের নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী। সেটাই করব ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে।
স্বামী রাজু আহসান সম্পর্কে কিছু বলুন?
করোনার দুঃসময়ে রাজুর আন্তরিক সহযোগিতা ভুলবার নয়। বিভিন্ন জায়গায় যেতে হতো। সেখানে রাজু পাশে দাঁড়িয়েছে নির্দ্বিধায়। তা না হলে কোন কিছুই সম্ভব হতো না। আর সামাজিক যোগাযোগ ব্যবস্থার মতো একটি প্রযুক্তির বিশে^ যেখানে বিভিন্ন অসহনীয় পরিস্থিতির হাতছানি থাকে পদে পদে। তাছাড়া সন্তানদের দেখভালও রাজু করে বিভিন্ন সময়।
নিজেকে উপস্থাপক নাকি প্রমোটার ভাবতে বেশি পছন্দ করেন?
আমি অবশ্যই একজন উপস্থাপক। শুধু তাই নয়, প্রযুক্তির আঙিনায় নিজের প্রোডাক্ট নিজেই বিক্রি করি। সুতরাং সেভাবেই চিন্তা করাটাই বাঞ্ছনীয়। আমার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক গ্রাহকের সেভাবেই থাকতে চাই।
শান্তশিষ্ট, লক্ষ্মীমন্ত মিতু আহসান জনকণ্ঠকে ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় নিলেন।