ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

গাছ লাগান গৃহ ও কর্মস্থলে

প্রকাশিত: ১০:৩৫, ২৬ আগস্ট ২০১৯

গাছ লাগান গৃহ ও কর্মস্থলে

পানির অপর নাম যেমন জীবন, তেমনি গাছের অপর নামও জীবন। গাছ পৃথিবীতে মানুষসহ সমস্ত প্রাণিকুলকে অক্সিজেন দেয়। গাছ আমাদের পরম বন্ধু, শুধু অক্সিজেনই না পরিবেশ সুরক্ষা অবদান রাখে। তাই আমরা যেখানেই বসবাস করি না কেন, গাছ বন্ধুকে আমাদের পাশে রাখা উচিত আমাদের প্রয়োজনে। বিশেষ করে যারা শহরে বসবাস করি। জ্যাম, ধুলাবালি, গাছহীন পরিবেশ। এই পরিবেশ থেকে একটু হলেও মুক্তি পেতে পেতে নিজেদের অফিস, ফ্ল্যাট, ঘরে সবুজ গাছ লাগাই। কিন্তু প্রশ্ন হলো আমরা কিভাবে কোথায় গাছ লাগাব? ঢাকায় তো ফাকা জায়গা নেই। আসুন জেনে নেয়া যাক এই বিষয়ে : আমাদের জায়গা কম হওয়াতে এমন কিছু গাছ লাগাতে হবে, যা আকারে ছোট কিন্তু অক্সিজেন সরবরাহ করে অনেক বেশি। আর গাছ লাগানোর জায়গা হবে ঘরের দেয়াল, খাবার টেবিল, ফাঁকা বেলকোনি, রুমের দরজার পাশে। আর এসব জায়গায় গাছ লাগাতে হলে অবশ্যই টব ব্যবহার করতে হবে সবুজ ঘর তৈরির জন্য। নিম্নের গাছগুলো আমরা ঘরে লাগাতে পারি : পিসলিলি : সাপের ফনার মতো দেখতে ফুলটির নামই পিসলিলি। দেখতে খুব সুন্দর এই ফুলটির পরিচর্যা করা খুবই সহজ। যে কোন বাড়িতে উজ্জ্বল করতে পারে এই ফুল। খুব কম তাপমাত্রা এমনকি ছায়াময় পরিবেশেও বাঁচতে পারে বলে এই ফুল ঘরের ভেতর রাখা যায়। ঘরের ভেতরের বিষাক্ত বাতাস কমিয়ে দিতে পারে এই গাছ। চমৎকার বায়ু পরিশোধক গাছ এটি। এটি সূর্যের আলোতে না রাখাই ভাল। স্বাভাবিক পরিমাণে পানি দিলেই যথেষ্ট। ঘরের বাতাস থেকে বেনজিন, ট্রাইক্লোরোইথিলিন, ফর্মালডিহাইড, জাইলিন শোষণ করে। ফলে ইনডোর প্লান্ট হিসেবে এর কদর রয়েছে। গ্রীষ্মকালে এর ফুল ফোটে। তাই গাছটি বাড়িতে থাকলে আপনি সর্বদা সুগন্ধে আচ্ছন্ন থাকতে পারবেন। ক্যাকটাস : ক্যাকটাসের জন্ম আমেরিকায়। এটি মরুভূমির গাছ। ক্যাকটাস ঘরের ভেতর রাখা যায়। নিয়মিত পানি দেয়া ছাড়া তেমন যত্নের প্রয়োজন পড়ে না। ক্যাকটাস আপনার ঘর, অফিসকে সাজিয়ে রাখার মতো গাছ। কাঁটাযুক্ত শরীর নিয়েও আপনার ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেবে এই গাছ। ক্যাকটাস গাছ বেশি আলো পছন্দ করে বলে বেশি আলো আছে এমন জানালার কাছে রাখা যায়। মানি প্লান্ট : গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীতসহ সকল আবহাওয়ার সব ধরনের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে মানি প্লান্ট। ভেতরে-বাইরে, রোদেও বেড়ে ওঠে এই গাছ। ঘর-বাড়ির সৌন্দর্য বাড়াতে বাড়ির গেট, ছাদ, ফ্রিজের ওপর এ গাছ রাখা যায়। গবেষকদের মতে, বসতবাড়ি, অফিসে মানি প্লান্ট রাখলে ক্ষতিকারক সিএফসি ও ওজন গ্যাস শুষে নেয় এবং এসব ক্ষতিকারক গ্যাস থেকে আমাদের রক্ষা করে। ফার্ন : আমাদের ঘরের ভেতর অনেক সময় এক ধরনের অস্বস্তিকর গন্ধ হয়। মাঝে মাঝে ঘরের ভেতর গুমোট পরিবেশ বিরাজ করে। এ সবকিছু দূর করতে পারে এই গাছ। এই গাছটি পর্দা। আসবাবপত্র, রঙে থাকা ফর্মালডিহাইডকে দূর করে দিয়ে ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ করে দেয়। ছোট পাম ট্রি : নাসার গবেষকরা গবেষণায় দেখেছেন যে ইনডোর প্লান্টগুলো ঘরের ভেতরের বিষাক্ত বায়ুকে শোষণ করে। এ গাছগুলো ঘরের বায়ুকে পরিষ্কার রাখতে অধিক কার্যকর। ঘরের ভেতরের দূষিত বায়ুতে ফর্মালডিহাইড, জৈব উপাদান, কার্বন মনোক্সাইড এবং নাইট্রোজেন অক্সাইড ইত্যাদি থাকে। এ সবের ফলে মাথাব্যথা, এলার্জি দেখা যায়। এসব থেকে লেডি পাম, এরেকা পাম, খেজুর পাম প্লান্টগুলো আমাদের মুক্ত রাখতে পারে। নিম গাছ ও তুলসী গাছ : নিম ও তুলসী গাছ হলো ঔষধি গাছ। এসব গাছ বাড়ির ও ঘরের বাতাসকে রোগজীবাণু মুক্ত রাখতে সাহায্য করে। উপরেরর গাছগুলো লাগিয়ে আমরা একটি মনোরম পরিবেশ পেতে পারি। গাছ ছাড়া যেহেতু আমাদের চলে না। তাই গাছের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ঘর-বাড়ির সঙ্গে নিজেকেও সবুজ করে তুলব। সুস্থ ও সুন্দর জীবনযাপন করব- এই প্রত্যাশা রইল।
×