ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

গরমে স্বস্তি পেতে

জলি রহমান

প্রকাশিত: ১৭:৪৬, ২৫ মে ২০২৫

গরমে স্বস্তি পেতে

আর কিছুদিন পরেই পালিত হবে মুসলিমদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা বা কুরবানি ঈদ। এই ঈদে প্রকাশ পায় ভোগ ও ত্যাগের মহিমান্বিত রূপ। আর প্রতিটি উৎসবেই সবাই চায় স্বস্তিদায়ক পোশাকে পরিপাটি থাকতে। এবার ঈদে দীর্ঘ ছুটি পাবেন চাকরিজীবীরা। তাই এই সময়ে স্বস্তি ও স্টাইলের সেরা সমন্বয় প্রয়োজন।
প্রচণ্ড গরমে ঘরে আরামের পোশাক নির্বাচন যেন এক ধরনের শিল্প। শহরের কংক্রিটের জঙ্গল হোক বা গ্রামের  খোলা উঠোন তাপমাত্রা যখন বাড়তে থাকে, তখন শরীরকে ঠান্ডা রাখার পাশাপাশি মানসিক স্বস্তিও প্রয়োজন। তাই ঘরের পোশাক হওয়া চাই এমন, যা হবে আরামদায়ক, হালকা, ত্বকবান্ধব এবং একইসঙ্গে রুচিশীল।
উপযুক্ত কাপড়ের নির্বাচন:
গরমকালে ঘরের পোশাকের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কাপড়ের ধরন। হালকা, প্রাকৃতিক ও নিঃশ্বাস নিতে পারে এমন কাপড় গরমে স্বস্তির জন্য অপরিহার্য।
সুতির কাপড়  নিঃসন্দেহে গরমে সবচেয়ে জনপ্রিয় কাপড়। এটি ঘাম শুষে নেয় এবং বাতাস চলাচলে সাহায্য করে। হালকা সুতির নাইটি, কুর্তি বা ওভারসাইজ টি-শার্ট এই সময়ে বেশ জনপ্রিয়।
মসলিন বা লিনেন : সুতির বিকল্প হিসেবে মসলিন বা লিনেনও দারুণ। এগুলো হালকা, নরম এবং দেহে সঠিকভাবে বসে। এদের স্বচ্ছতাও গরমে বাড়তি আরাম  দেয়।
ভিসকস বা রেয়ন : যারা একটু ঘসাঘসিহীন সফট  টেক্সচার পছন্দ করেন, তাদের জন্য রেয়ন বা ভিসকস হতে পারে আরামদায়ক বিকল্প। তবে এগুলো একটু  বেশি ঘাম শোষণ করলে ভারী হয়ে যেতে পারে, তাই বাড়ির ভিতরে ব্যবহারের জন্য ভালো।
ঢিলেঢালা কাটের গুরুত্ব :
গরমে বেশি টাইট পোশাক পরলে শরীরের ওপর চাপ পড়ে। তাই ঢিলেঢালা ফিটের পোশাক হওয়া চাই প্রথম পছন্দ। লুজ টি-শার্ট, কিমোনো স্টাইলের টপস, পালাজ্জো প্যান্ট, নাইট গাউন, কিংবা কটন কামিজ এসবই শরীরকে দেয় পর্যাপ্ত জায়গা ‘শ্বাস’ নেওয়ার জন্য।
রঙে হোক প্রশান্তি :
গরমকালে হালকা রঙ যেমন সাদা, হালকা নীল, প্যাস্টেল গোলাপি, হালকা হলুদ এসব রঙ চোখে ও মনে প্রশান্তি আনে। গাঢ় রঙ যেমন কালো বা গাঢ় নীল তাপ  শোষণ করে বেশি, তাই এগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো।
আরাম ও ব্যক্তিগত স্টাইল:
ঘরে পরার পোশাক মানেই যে একঘেয়ে বা পুরনো জামা হতে হবে তা নয়। আজকাল অনেকেই ঘরের  পোশাকেও রুচিশীল ডিজাইন পছন্দ করেন। সুতির কুর্তি বা নাইট ড্রেসেও নানা কাট ও প্রিন্ট আসছে, যা আপনাকে দিবে স্টাইলের ছোঁয়াও। অনেকেই ঘরের পোশাক হিসেবে ব্যবহার করেন কাইমোনো-স্টাইল গাউন বা কা’ফতান, যেগুলো এখন ফ্যাশনেবল ও আরামদায়ক দুই-ই। এ ছাড়া নরম ওয়েস্টার্ন সেট যেমন ওভারসাইজ টি-শার্ট ও শর্টস কম্বো এখন তরুণীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। দেশীয় ফ্যাশন হাউজ রঙ বাংলাদেশ, লা রিভ, বিশ্বরঙ, টুয়েলভ, কে ক্র্যফট ও আড়ং সহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাইজে গরমে আরামদায়ক নানা পোশাক পাওয়া যায়। তাই আজই কিনে ফেলুন আপনার পছন্দনীয় আরামদায়ক পোশাকটি।


কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখা প্রয়োজন:
ঘরোয়া স্যান্ডেল বা চপ্পলেও আরাম দরকার। হালকা ফ্ল্যাট চপ্পল ব্যবহার করলে পা ঘামে না এবং ফ্লোরের গরমে পোড়া লাগে না।
গরমে হাফ স্লিভ বা স্লিভলেস পোশাকই সেরা। যারা পর্দার কারণে ফুল স্লিভ পরেন, তারা হালকা গজে তৈরি ঢিলেঢালা কামিজ পরতে পারেন।
গরমে ঘরের পোশাকে আরাম মানেই শুধু স্বস্তি নয়। এটি এক ধরনের স্ব-যত্নও বটে। সারাদিনের ক্লান্তি, বাইরের কাজের চাপ বা পরিবারের দেখভাল সবই সহজ হয় যখন আপনি নিজে আরামে থাকেন।
কাজেই গরমে নিজের জন্য বেছে নিন এমন পোশাক, যা আপনাকে রাখবে হালকা, প্রশান্ত এবং আত্মবিশ্বাসী।
শরীর যদি আরামে থাকে, মনও ভালো থাকে। আর এই স্বস্তিই আপনাকে দেবে দিনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একধরনের মানসিক প্রশান্তি।

প্যানেল

×