
ছবিঃ সংগৃহীত
কেউ যদি হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান—দিন যায়, মাস যায়, বছর পার হয়, তবু কোনো খোঁজ নেই—তাহলে তার জমি-জমা বা সম্পত্তি কী হবে? পরিবার বা ওয়ারিশরা কি সেটা ভাগ করে নিতে পারবেন? নাকি তাকে মৃত ঘোষণা না করা পর্যন্ত কিছুই করা যাবে না? এই প্রশ্নের উত্তর মেলে বাংলাদেশের দেওয়ানি ও পারিবারিক আইনে, যেখানে নিখোঁজ ব্যক্তির সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার নিয়ম নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের Evidence Act, 1872-এর ধারা ১০৮ অনুযায়ী, যদি কেউ ৭ বছর বা তার বেশি সময় ধরে নিখোঁজ থাকেন এবং তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া না যায়, তাহলে তাকে আইনের চোখে ‘মৃত’ ধরে নেওয়া যায়। অর্থাৎ, যদি কারও নিখোঁজ থাকার সময়কাল ৭ বছর পেরিয়ে যায়, এবং সেই সময়কালে তাঁর জীবিত থাকার কোনো প্রমাণ না থাকে, তাহলে আদালতের মাধ্যমে তাকে মৃত ঘোষণা করা সম্ভব।
এক্ষেত্রে নিখোঁজ ব্যক্তির পরিবার বা ওয়ারিশদের যে কেউ আদালতে আবেদন করতে পারেন, যাতে সেই ব্যক্তিকে ‘মৃত’ ঘোষণা করা হয়। ৭ বছর বা তার বেশি সময় ধরে নিখোঁজ থাকার প্রমাণ, যেমন—পুলিশ রিপোর্ট, পত্র-পত্রিকা, প্রতিবেশীর সাক্ষ্য ইত্যাদি। আদালত যখন তাকে ‘মৃত’ ঘোষণা করবে, তখনই তার সম্পত্তি ভাগ করার বা নামজারি করার আইনি সুযোগ তৈরি হয়।
একবার মৃত ঘোষণা হলে, ওয়ারিশান আইন অনুযায়ী (যদি মুসলিম হন, তাহলে শরিয়া আইন; হিন্দু হলে হিন্দু উত্তরাধিকার আইন) তার স্বামী/স্ত্রী, সন্তান, পিতা-মাতা—প্রত্যেকের অংশ নির্ধারিত নিয়মে ভাগ হবে।
যদি কোনোভাবে নিখোঁজ ব্যক্তি পরে ফিরে আসেন, তাহলে তিনি আদালতে গিয়ে আবার নিজের পরিচয় প্রমাণ করে তার সম্পত্তি ফেরত চাইতে পারেন। তখন ওয়ারিশদের কাছ থেকে সেই অংশ ফিরিয়ে দিতে হতে পারে।
কারও নিখোঁজ থাকার সুযোগ নিয়ে যদি মিথ্যা মামলা করে সম্পত্তি আত্মসাৎ করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে তা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। নিখোঁজ ব্যক্তির সম্পত্তি ভাগ করার জন্য সরাসরি কিছুই করা যায় না—আদালতের ঘোষণা ছাড়া নয়। ৭ বছর নিখোঁজ থাকার পর আদালতে সঠিক প্রক্রিয়ায় আবেদন করলে তবেই মৃত ঘোষণা করে সম্পত্তি বণ্টনের পথ খুলে যায়।
সূত্রঃ https://www.facebook.com/share/r/1GHB6kwuZi/
আরশি