ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৮ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

ফিলিস্তিনি-আমেরিকান শিশুকে ২৬ বার ছুরিকাঘাতে হত্যা, দণ্ডিত গৃহকর্তার কারাগারে মৃত্যু

প্রকাশিত: ২৩:৫৮, ২৭ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০০:০২, ২৮ জুলাই ২০২৫

ফিলিস্তিনি-আমেরিকান শিশুকে ২৬ বার ছুরিকাঘাতে হত্যা, দণ্ডিত গৃহকর্তার কারাগারে মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৫৩ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত জোসেফ জুবা নামের এক গৃহকর্তা কারাগারে মারা গেছেন। তার নৃশংস হামলায় নিহত হয়েছিল ৬ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি-আমেরিকান শিশু ওয়াদি আলফাইউমি এবং আহত হয়েছিলেন তার মা হানান শাহিন।

জোসেফ জুবা নামের ওই ৭৩ বছর বয়সী ব্যক্তি গত বছর অক্টোবর মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের প্লেইনফিল্ড এলাকায় শিশুটি ও তার মায়ের ওপর হামলা চালান। ধর্মীয় বিদ্বেষপ্রসূত এ হামলার পেছনে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধকে দায়ী করা হয়, যা ঘটনার কয়েক দিন আগেই শুরু হয়েছিল।

গত ফেব্রুয়ারিতে হত্যাকাণ্ড, হত্যাচেষ্টাসহ ঘৃণামূলক অপরাধে যুক্তরাষ্ট্রের এক আদালত জুবাকে দোষী সাব্যস্ত করেন। চলতি বছরের গত তিন মাস আগেই তাকে ৫৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) কারাগারে তার মৃত্যু হয় বলে উইল কাউন্টি শেরিফ অফিস এক বিবৃতিতে জানায়।

যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম অধিকার সংস্থা ‘কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (সিএআইআর)’–এর শিকাগো শাখার নির্বাহী পরিচালক আহমেদ রেহাব বলেন, ‘এই বিকৃত মানসিকতার ঘৃণাকামী মানুষটি মারা গেছে, কিন্তু ঘৃণার আগুন এখনও নিভেনি।’

আদালতের শুনানিতে শিশু ওয়াদির মা হানান শাহিনের বর্ণনা এবং তার তড়িঘড়ি করে দেওয়া ৯১১ কলের রেকর্ড শুনানো হয়। প্রদর্শন করা হয় রক্তাক্ত অপরাধস্থলের ছবি ও পুলিশি ভিডিও ফুটেজ। এসব তথ্য উপস্থাপনের পর বিচারক মাত্র ৯০ মিনিটের শুনানি শেষে রায় ঘোষণা করেন।

জানা গেছে, হামলার সময় শাহিন ও তার ছেলে ওয়াদি আলফাইউমি ঘাতক জুবার বাড়ির ভাড়াটিয়া ছিলেন। তারা জুবার প্লেইনফিল্ডের বাড়ির কক্ষে ভাড়া থাকতেন। শিশু ওয়াদির মায়ের ভাষ্য অনুযায়ী, জুবা প্রথমে তাকে আক্রমণ করেন এবং বলেন মুসলিম হওয়ায় তাদের এই বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে। এরপর তিনি শিশুটিকে আক্রমণ করেন।

জানা যায়, জুবা কোমরের বেল্ট থেকে ছুরি বের করে শিশুটিকে ২৬ বার ছুরিকাঘাত করেন। ছুরিটি তখনো শিশুটির দেহে ঢোকানো অবস্থায় ছিল। ছবিগুলো এতটাই মর্মান্তিক ছিল যে বিচারক সেগুলো প্রদর্শনের সময় আদালত কক্ষের দর্শকদের দিক থেকে মনিটর ঘুরিয়ে রাখতে নির্দেশ দেন। উপস্থিত ছিলেন ওয়াদির স্বজনরাও।

এই হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। প্লেইনফিল্ড ও আশপাশের এলাকায় বসবাসরত ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত অভিবাসীরা বিশেষভাবে ক্ষুব্ধ হন। শিশুটির জানাজায় বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেয় এবং তার স্মরণে একটি খেলার মাঠ উৎসর্গ করে শহর কর্তৃপক্ষ।

 

সূত্র: এপি।

রাকিব

আরো পড়ুন  

×