
ছবি: সংগৃহীত।
নিউইয়র্ক সিটির ডেমোক্রেট মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানি-কে ‘কমিউনিস্ট’ আখ্যা দিয়ে কটাক্ষ করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প প্রকাশ্যে তাকে গ্রেপ্তারের হুমকিও দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
১ জুলাই ওয়াশিংটনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, “মামদানি যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছেন। তিনি অভিবাসন ও শুল্ক কর্তৃপক্ষের কাজে বাধা দিলে তাকে গ্রেপ্তার করা উচিত।”
ট্রাম্পের বক্তব্যের জবাবে জোহরান মামদানি নিউইয়র্কে এক নির্বাচনী র্যালিতে বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন আমাকে গ্রেপ্তার করা উচিত, নির্বাসনে পাঠানো উচিত। তিনি ভুলে গেছেন—আমি নিউইয়র্ক শহরের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম অভিবাসী মেয়র হতে যাচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, “এই শহরের দরকার এমন একজন নেতা যিনি কেবল নির্বাচনে জয় পেতেই আসেননি, বরং সমস্ত শ্রেণি-পেশার মানুষের অধিকার রক্ষায় নেতৃত্ব দিতে চান।”
এদিকে রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান এন্ডি অগলস দাবি করেছেন, মামদানির নাগরিকত্ব বাতিল করা উচিত। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিড জানান, এ বিষয়ে তদন্তের সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী নাগরিকত্ব বাতিল একটি জটিল ও দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া। এর জন্য দরকার শক্ত প্রমাণ ও আদালতের অনুমোদন।
নেভাডা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অধ্যাপক মাইকেল কাগান বলেন, “কোনো ব্যক্তিকে নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করতে হলে তার নাগরিকত্ব আবেদন প্রক্রিয়ায় জালিয়াতির প্রমাণ থাকা আবশ্যক। মামদানির ক্ষেত্রে এমন কোনো প্রমাণ নেই। ট্রাম্প মূলত রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতেই এসব বলছেন।”
ভারতীয় বংশোদ্ভূত জোহরান মামদানি মাত্র সাত বছর বয়সে ১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। তিনি নিউইয়র্কভিত্তিক প্যালেস্টাইন স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস সংগঠনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং ২০২৩ সালে গাজা যুদ্ধবিরতির দাবিতে হোয়াইট হাউসের সামনে অনশন ধর্মঘটে অংশগ্রহণ করেন।
বর্তমানে নিউইয়র্কের প্রগতিশীল তরুণদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে। অনেকে তাকে "আমেরিকান সমাজতন্ত্রের নতুন মুখ" বলে উল্লেখ করছেন।
নুসরাত