
যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিদেশি সহায়তা ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছে। মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, আগামী ১ জুলাই থেকে ইউএসএআইডি (ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট) আর কোনো সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়নে জড়িত থাকবে না। এই দায়িত্ব এখন থেকে সরাসরি গ্রহণ করবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর।
রুবিও এক বিবৃতিতে বলেন, “যেসব বিদেশি সহায়তা কর্মসূচি প্রশাসনের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং আমেরিকার স্বার্থকে এগিয়ে নিয়ে যায়, সেগুলো এখন থেকে পররাষ্ট্র দপ্তরের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। এতে জবাবদিহিতা, কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি ও দক্ষতা আরও বাড়বে।”
তিনি বলেন, “প্রত্যেক সরকারি কর্মচারীর উচিত আমেরিকান নাগরিকদের স্বার্থ রক্ষা করা এবং নিশ্চিত করা যে, তারা যে কর্মসূচিতে অর্থ ব্যয় করছেন তা জাতীয় স্বার্থে অবদান রাখছে।”
রুবিও অভিযোগ করেন, দীর্ঘ কয়েক দশকে ৭১৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যয় করেও ইউএসএআইডি সেই মানদণ্ডে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে। তার ভাষায়, “শীতল যুদ্ধ-পরবর্তী যুগে ইউএসএআইডি করদাতাদের অর্থে একটি বৈশ্বিক এনজিও শিল্প-জট গড়ে তুলেছে, যার বাস্তব প্রভাব প্রায় অদৃশ্য।”
তিনি আরও দাবি করেন, ইউএসএআইডি’র সহায়তা কার্যক্রমে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি, বরং অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বেড়েছে এবং বেড়েছে আমেরিকাবিরোধী মনোভাব।
“সরকার অনুমোদিত অদক্ষতার এই যুগের এখন আনুষ্ঠানিক অবসান ঘটলো,” বলেন রুবিও।
এই পদক্ষেপের পেছনে রয়েছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ইউএসএআইডি বাতিলের পরিকল্পনা। তখন থেকেই অধিকাংশ চুক্তি বাতিল, হাজার হাজার পদের সমাপ্তি এবং বিশ্বজুড়ে ইউএসএআইডি-র কর্মীদের প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানোর মতো পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
রুবিও জানান, ছয় সপ্তাহের পর্যালোচনার পর ইউএসএআইডি’র ৮৩ শতাংশ কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে।
১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত ইউএসএআইডি ২০২৩ অর্থবছরে ৪০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বাজেট পরিচালনা করেছে। তবে গত মাসে মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদ একটি প্যাকেজ অনুমোদন করে, যার মাধ্যমে ইউএসএআইডি’র বাজেট থেকে ৮.৩ বিলিয়ন ডলার সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে এই রদবদল বৈশ্বিক সহায়তা ব্যবস্থার ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত। দীর্ঘদিনের বিতর্কিত সহায়তা কার্যক্রমের অবসান ঘটিয়ে এবার সরাসরি স্টেট ডিপার্টমেন্টের মাধ্যমে সহায়তা পৌঁছে দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র, যাতে খরচের প্রতিটি ডলার আরও কার্যকর ও কৌশলগতভাবে ব্যবহৃত হয়। ইউএসএআইডি’র বিদায় ঘটলেও এর ভবিষ্যৎ সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত হবে নাকি নতুন কাঠামোয় রূপান্তরিত হবে, তা এখন সময়ই বলে দেবে।
সূত্র:https://tinyurl.com/2y7kcdxm
আফরোজা