
ইউক্রেন যুদ্ধ থামার কোনো ইঙ্গিত নেই। বরং দিন যত যাচ্ছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ততই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। সম্প্রতি তিনি আবারও ঘোষণা করেছেন, “সমগ্র ইউক্রেনই রাশিয়ার।” এই মন্তব্য নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে ইউরোপজুড়ে।
গত ২০ জুন সেন্ট পিটার্সবার্গ ইকোনমিক ফোরামে ভাষণ দিতে গিয়ে পুতিন বলেন, “রাশিয়ান ও ইউক্রেনীয়রা একই জাতি। এই অর্থে, সমগ্র ইউক্রেন আমাদের। আমাদের একটি পুরনো প্রবাদ আছে, যেখানে রাশিয়ান সৈন্য পা রাখে, সেটাই আমাদের।”
এই বক্তব্যের পর ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা তীব্র প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “রাশিয়ান সৈন্য যেখানে পা রাখে, সেখানে শুধু ধ্বংস আর মৃত্যু নিয়ে আসে।”
পরদিন (২১ জুন) টেলিগ্রামে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি লেখেন, “পুতিন কেবল ইউক্রেনই নয়, বেলারুশ, বাল্টিক রাষ্ট্র, মলদোভা, ককেশাস এবং কাজাখস্তান নিয়েও আগ্রহী।”
অন্যদিকে ইউক্রেনের ইউরোপীয় মিত্ররা চলতি বছরে দেশটিকে ৩৫ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ন্যাটোর নতুন মহাসচিব মার্ক রুটে জানান, এই সহায়তা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সাময়িকভাবে বন্ধ থাকা সামরিক সাহায্যের ঘাটতি কিছুটা পূরণ করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউরোপের এই সহায়তা ইতোমধ্যে ৪০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। গত বছর পুরো বছর মিলিয়ে সহায়তা ছিল ৫০ বিলিয়ন ডলার।
পুতিন যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে ইউক্রেনের মিত্রদের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের দাবি করেছেন। শনিবার (২৮ জুন) ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভও একই দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
জার্মানির ডের স্পিগেল প্রকাশিত এক ফাঁস হওয়া নথিতে বলা হয়েছে, “মস্কো ২০৩০ সালের মধ্যে ন্যাটোর সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।” এতে রাশিয়াকে ‘অস্তিত্বের হুমকি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে জার্মান সেনাবাহিনীর পরিকল্পনাকারীরা।
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মেরৎজ বলেন, “বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোর সতর্কতা আমরা উপেক্ষা করেছি। এখন আর পিছু হটার সুযোগ নেই।”
রাশিয়ার এই আগ্রাসী অবস্থানের প্রেক্ষাপটে বেলারুশ, লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া ও এস্তোনিয়াসহ পূর্ব ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। এর ফলে ন্যাটো জোট আবারও বৃহৎ পরিসরে নিজেকে সংগঠিত করতে শুরু করেছে।
মিমিয়া