ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৯ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২

ইরানে ফের হামলার হুমকি ট্রাম্পের

তেহরানে হামলায় নিহতদের জানাজায় মানুষের ঢল

জনকণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:৪৭, ২৮ জুন ২০২৫

তেহরানে হামলায় নিহতদের জানাজায় মানুষের ঢল

ইসরাইলি হামলায় নিহত শীর্ষ সামরিক কমান্ডার ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীসহ প্রায় ৬০ জনের রাষ্ট্রীয় জানাজা শনিবার ইরানের রাজধানী তেহরানে অনুষ্ঠিত হয়

ইসরাইলি হামলায় নিহত শীর্ষ সামরিক কমান্ডার ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীসহ প্রায় ৬০ জনের রাষ্ট্রীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে ইরানের রাজধানী তেহরানে। হাজারো মানুষ কালো পোশাক পরে, ইরানি পতাকা হাতে এবং শহীদদের ছবি বহন করে এই আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নেন। শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া জানাজার দৃশ্য সম্প্রচার করে ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। খবর ইরনার।
সম্প্রচারে দেখা যায়, শহীদদের মরদেহ ইরানি পতাকায় মোড়া কফিনে রাখা হয়েছে, প্রতিটি কফিনের ওপর শহীদদের ইউনিফর্ম পরিহিত ছবি সাঁটানো। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। এর আগে ইসরাইল ১২ দিনব্যাপী যুদ্ধ শুরু করে ১৩ জুন থেকে। এই যুদ্ধের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রও ইসরাইলের পক্ষে অংশ নেয়। যুদ্ধের অবসান ঘটে মঙ্গলবার এক যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে। ইসরাইল ও ইরান উভয়ই এই যুদ্ধকে নিজেদের জয় হিসেবে দাবি করেছে। নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে জনতার মধ্যে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানও ছিলেন। একটি মঞ্চে বেশ কয়েকজন নিহত সামরিক কমান্ডারের ছবি রাখা হয়, যার মধ্যে মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি এবং জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরির ছবিও ছিল।
এদিকে ইরানের আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা তাসনিম জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল বিরোধী স্লোগান দিচ্ছিলেন তখন কারও কারও হাতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ছবিও দেখা যায়। হোসেইন সালামি ছিলেন ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড কর্পসের প্রধান এবং ইরানের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তিদের একজন। মোহাম্মদ বাঘেরি ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

গত ১৩ জুন ইরানে আকস্মিক হামলা চালায় ইসরাইল। রাজধানী তেহরানসহ ইরানের বেশ কয়েকটি সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় তেলআবিব। এতে দেশটির কয়েক সামরিক নেতা ও বিজ্ঞানী নিহত হন। জবাবে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় ইরান।
এদিকে ইরানে আবারও বোমা হামলার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেছেন। ট্রাম্প বলেছেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির উপযোগী মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে সক্ষম হলে দেশটিতে আবারও বোমা হামলা করা হবে। এদিকে ইরানের বিরুদ্ধে আরও সামরিক শক্তি প্রয়োগ থেকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিরত রাখার জন্য ডেমোক্র্যাটদের একটি প্রস্তাব মার্কিন সিনেট প্রত্যাখ্যান করেছে।

শনিবার এটি নাকচ করে রিপাবলিকান নেতৃত্বাধীন মার্কিন সিনেট। ট্রাম্প ইরানে আরও বোমা হামলার কথা বিবেচনা করছেন বলার কয়েক ঘণ্টা পরে এটি বাতিল হয়। এ প্রস্তাবে ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে সামরিক পদক্ষেপ নিতে হলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে কংগ্রেসের অনুমোদন নেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু ৫৩-৪৭ ভোটে প্রস্তাবটি বাতিল হয়ে যায়। প্রস্তাবের প্রধান উদ্যোক্তা সিনেটর টিম কেইন বছরের পর বছর ধরেই রিপাবলিকান বা ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্টদের যুদ্ধ ঘোষণার ক্ষমতা সীমিত করার জন্য কাজ করছেন।

কেইন বলেন, তার সর্বশেষ প্রচেষ্টা ছিল এই বিষয়টির ওপর জোর দেওয়া যে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান প্রেসিডেন্টকে নয়, কংগ্রেসকে যুদ্ধ ঘোষণার একমাত্র ক্ষমতা দেয় এবং ইরানের সঙ্গে যে কোনো শত্রুতা, যুদ্ধ ঘোষণা বা সামরিক শক্তি ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট অনুমোদনের মাধ্যমে করতে হবে। এর আগে ট্রাম্প ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির তীব্র সমালোচনা করেন। ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা প্রত্যাহার করেন এবং বলেন যে তেহরান যদি উদ্বেগজনক মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে তবে তিনি আবার ইরানে বোমা হামলার কথা বিবেচনা করবেন।

×