
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি কানাডার সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য আলোচনা "তাৎক্ষণিকভাবে" বন্ধ করে দিচ্ছেন। এর পেছনে কারণ হিসেবে তিনি কানাডার নতুন কর নীতিকে দায়ী করেছেন, যা প্রযুক্তি জায়ান্টদের লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়েছে।
ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে এ ঘোষণা দেন, যখন দুই প্রতিবেশী দেশ মধ্য জুলাইয়ের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার জন্য আলোচনা চালাচ্ছিল। এর আগে উভয় দেশ একে অপরের পণ্যে শুল্ক আরোপ করেছে, এবং ট্রাম্প "অর্থনৈতিক শক্তি প্রয়োগ করে" কানাডাকে সংযুক্ত করার হুমকিও দিয়েছিলেন।
শুক্রবার ট্রাম্প বলেন, ডিজিটাল পরিষেবায় "অত্যন্ত অবমাননাকর কর" আরোপ করায় তিনি আলোচনা শেষ করছেন। তিনি বলেন, আগামী সাত দিনের মধ্যে কানাডা থেকে আমদানি হওয়া পণ্যে নতুন শুল্ক ঘোষণা করবেন।
ট্রাম্প লিখেন:
"আমরা এই মর্মে ঘোষণা করছি যে কানাডার সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য আলোচনা এখনই বন্ধ করা হলো।"
"তাদের জানিয়ে দেওয়া হবে আগামী সাত দিনের মধ্যে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবসা করতে কী পরিমাণ শুল্ক দেবে।"
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, "অর্থনৈতিকভাবে, আমাদের হাতে কানাডার ওপর অনেক শক্তি রয়েছে। আমি সেটা ব্যবহার করতে চাই না, কিন্তু দরকার হলে করবো।"
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কারনি জানান, তারা আলোচনা চালিয়ে যাবেন।
"আমরা এই জটিল আলোচনা চালিয়ে যাব, কানাডীয়দের স্বার্থে," বলেন তিনি।
ডিজিটাল কর নিয়ে দ্বন্দ্ব
কানাডার ৩% ডিজিটাল পরিষেবা কর গত বছর চালু হয় এবং এটি মার্কিন কোম্পানিগুলোর—যেমন অ্যামাজন, অ্যাপল এবং গুগল—জন্য বছরে ২ বিলিয়নের বেশি খরচ বাড়াবে বলে অনুমান। এই কর নিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক বেশ কিছুদিন ধরেই টানাপোড়েনের মধ্যে রয়েছে।
ট্রাম্প এবং কারনি জুনের মাঝামাঝি জি৭ সম্মেলনে একমত হয়েছিলেন যে ৩০ দিনের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে। তবে ট্রাম্পের সর্বশেষ ঘোষণায় সেই সময়সীমা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
ব্যবসায়ী মহলের প্রতিক্রিয়া
কানাডার চেম্বার অব কমার্সের প্রধান নির্বাহী বলেন, "চুক্তি যত ঘনিয়ে আসছে, ততই এ ধরনের চমকপ্রদ সিদ্ধান্ত আশা করতে হবে।" ব্যবসায়ী মহলের কেউ কেউ সরকারের প্রতি কর প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে।
একজন সিনেটর বলেন, ট্রাম্প এই ধরনের হুমকি দিয়ে কেবল আলোচনায় চাপ বাড়াতে চাইছেন।
শুল্ক যুদ্ধে উত্তেজনা
যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই কিছু কানাডীয় পণ্যে ২৫% শুল্ক আরোপ করেছে, যুক্তি হিসেবে বলা হয়েছে সীমান্তে মাদক চোরাচালানের আশঙ্কা। এর পাশাপাশি গাড়ি, স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম পণ্যে নতুন শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যা সরবরাহ চেইনে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে।
যদিও পরে ব্যবসায়ী চাপের মুখে কিছু পণ্যে ছাড় দেওয়া হয়, কিন্তু সম্পর্কের উত্তেজনা থেকেই গেছে। ট্রাম্পের সর্বশেষ ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজার কিছুটা পড়ে যায়, তবে দিন শেষে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ রেকর্ড উচ্চতায় বন্ধ হয়।
Jahan