
ইরানে ইসরায়েলের ব্যাপক বিমান হামলা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য আসছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি হামলার পরিকল্পনার পুরোপুরি বিষয়ে অবগত ছিলেন। অথচ বৃহস্পতিবার তিনি প্রকাশ্যে বলেছিলেন, এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সক্রিয় ভূমিকা নেই।
প্রথমে রিপাবলিকান সিনেটর মার্কো রুবিও ইসরায়েলের এই হামলাকে “একতরফা অভিযান” হিসেবে উল্লেখ করেন। কিন্তু শুক্রবার সকালে ট্রাম্প বলেন, তিনি এই পরিকল্পনা সম্পর্কে পুরো জানতেন এবং ইরানকে ৬০ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছাতে।
“আজ হচ্ছে সেই আল্টিমেটামের ৬১তম দিন,” ট্রুথ সোশ্যাল-এ এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন।
“আমি তাদের (ইরান) কী করতে হবে তা বলেছিলাম, কিন্তু তারা সেটা পারলো না।”
ট্রাম্পের এই ব্যাখা যেন ‘ভালো পুলিশ–খারাপ পুলিশ’ কৌশল। একদিকে তিনি চেষ্টা করছেন ইরানকে আলোচনায় ফেরাতে, অন্যদিকে ইসরায়েলকে দিয়ে কঠোর বার্তা দিচ্ছেন। উল্লেখযোগ্য যে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক বরাবরই টানাপোড়েনপূর্ণ।
বৃহস্পতিবারের বক্তব্যে ইরান হামলার বিরোধিতা করলেও এখন ট্রাম্প বলছেন, এই হামলা ছিল মূলত তার কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ।
এদিকে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ভারত মহাসাগরের প্রত্যন্ত দ্বীপ দিয়েগো গার্সিয়ায় তাদের বিমানঘাঁটিতে বি-৫২ বোমারু বিমান মোতায়েন করেছে। মার্চের শেষ দিক থেকে সেখানে বি-২ স্টিলথ বোমারুও রাখা হয়েছে। বছরের শুরুতে ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে হামলায় এই ঘাঁটি থেকে বিমান উড়েছে। ফলে যদি যুক্তরাষ্ট্র ইরান বিরোধী যুদ্ধে সরাসরি যুক্ত হয়, এই ঘাঁটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তবে ইসরায়েলের আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের পেছনে অন্য ব্যাখ্যাও থাকতে পারে— বিশেষ করে গত বছর ইরান যে নজিরবিহীন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল তার প্রেক্ষিতে।
তবে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ইরানের ‘ফোর্ডো’ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র লক্ষ্যবস্তু হয়নি। গভীর ভূগর্ভে অবস্থিত এই স্থাপনাটি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রথম ধাপে এটি অক্ষত থাকায় স্পষ্ট, ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি।
সূত্র - https://www.theguardian.com/us-news/2025/jun/13/trump-iran-israel-attacks-response
সানজানা