
সংগৃহীত
যুক্তরাজ্যের জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম বিবিসি নতুন করে বয়সভিত্তিক বৈষম্যের (এজিএম) অভিযোগের মুখে পড়েছে। প্রতিষ্ঠানটির চারজন সিনিয়র সাংবাদিক আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ করেছেন যে, দীর্ঘ কর্মজীবনের পরও তাদের মূল্যায়ন না করে কাঠামোগত পরিবর্তনের অজুহাতে চাকরি হারাতে বাধ্য করা হচ্ছে।
সাংবাদিকদের দাবি, তারা সবাই পঞ্চাশোর্ধ এবং প্রত্যেকের সাংবাদিকতায় অভিজ্ঞতা রয়েছে অন্তত ২০ বছর বা তার বেশি। তারা বিবিসির সাম্প্রতিক নিয়োগ ও পুনর্গঠনের প্রক্রিয়াকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিহিত করেছেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, বিবিসি ইচ্ছাকৃতভাবে বয়স্ক কর্মীদের ছাঁটাই করছে এবং তরুণ প্রজন্মকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
সম্প্রতি হোম ও ফরেন নিউজ ডিপার্টমেন্ট একত্র করার অংশ হিসেবে বিবিসি প্রায় ১৩০টি পদ বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। নতুন করে খোলা কিছু পদের জন্য নিয়োগ দেওয়া হলেও সেখানে আবেদনকারীদের কাছ থেকে শুধু শেষ দুই বছরের কর্মপরিচিতি চাওয়া হয়েছে। ফলে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থাকা ব্যক্তিরা আবেদন প্রেক্ষিতেই বাদ পড়েছেন বলে অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন।
তারা আরও বলেছেন, নিয়োগ পরীক্ষায় ডিজিটাল শব্দাবলির উপস্থিতি বা লাইভ নিউজ টার্ম না থাকলে আবেদনকারীদের নম্বর কাটা হচ্ছে। এতে করে যারা মূলত রেডিও বা টিভি ভিত্তিক সাংবাদিকতায় অভ্যস্ত হবেন, তারা স্পষ্টতই বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন।
বিবিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা চাকরির পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে ন্যায্যতা বজায় রাখার চেষ্টা করছে এবং পরিবর্তিত মিডিয়া বাস্তবতায় ডিজিটাল দক্ষতা থাকাই এখন সময়ের চাহিদা। যে-সব কর্মী চাকরি হারাতে পারেন, তাদের জন্য পুনর্বিন্যাস ও সহায়তা কর্মসূচির আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় সাংবাদিক ইউনিয়ন (NUJ) অভিযোগকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং বলেছে, অভিজ্ঞদের বাদ দিয়ে কেবল বয়সের কারণে কর্মক্ষেত্র থেকে সরিয়ে দেওয়া ন্যায্য নয়। তারা বিবিসির ওপর আইনি ও সামাজিক চাপ সৃষ্টি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এই ঘটনাটি গণমাধ্যম জগতে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে বয়স ও অভিজ্ঞতার জায়গা কোথায়, যখন গণমাধ্যম দিন দিন ডিজিটাল হয়ে উঠছে? এখন দেখার বিষয়, আদালত এবং বিবিসি এই পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করে।
হ্যাপী