
ছবিঃ সংগৃহীত
সাম্প্রতিক সময়ে সিঙ্গাপুর, হংকংসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশে করোনা সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তবে স্বস্তির খবর হলো—ভারতের করোনা পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
কী বলছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়?
১২ মে থেকে ১৯ মে পর্যন্ত সারা দেশে নতুন করে ১৬৪ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে কেরালায় সবচেয়ে বেশি ৬৯ জন, মহারাষ্ট্রে ৪৪ জন এবং তামিলনাড়ুতে ৩৪ জন। অন্যান্য রাজ্যের মধ্যে কর্ণাটক, গুজরাট, দিল্লি, রাজস্থান, হরিয়ানা ও সিকিম থেকেও কিছু নতুন কেস পাওয়া গেছে।
তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—এই নতুন আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় সবাই হালকা উপসর্গে ভুগছেন। কারোরই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হয়নি।
কোন ভ্যারিয়েন্ট ঘিরে বাড়ছে দুশ্চিন্তা?
এই নতুন সংক্রমণের পেছনে রয়েছে JN.1 নামের একটি ভ্যারিয়েন্ট, যা ওমিক্রনের একটি নতুন রূপ। এর মধ্যে আবার LF.7 ও NB.1.8 নামে দুটি পরিবর্তিত রূপ বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে এখনো এই ভ্যারিয়েন্ট খুব বেশি ভয়ংকর হয়ে ওঠেনি।
মুম্বাইয়ে দুটি মৃত্যু, তবে কোভিড নয় মূল কারণ
মুম্বাইয়ের কেম হাসপাতালে দু’জন করোনা পজিটিভ রোগীর মৃত্যু হয়েছে—একজন ১৪ বছরের কিশোরী এবং একজন ৫৪ বছরের মহিলা। তবে হাসপাতাল জানায়, এদের মৃত্যুর মূল কারণ করোনা নয়। একজনের ছিল কিডনির জটিল রোগ, আর অন্যজন ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন।
মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের বার্তা—আতঙ্ক নয়, সচেতন থাকুন
বৃহন্মুম্বই পুরসভা (BMC) জানায়, শহরে করোনা নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। তারা প্রস্তুত রয়েছে—যদি রোগী বাড়ে, দ্রুত বেড এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যাবে।
বিদেশে পরিস্থিতি কেমন?
- সিঙ্গাপুরে এক সপ্তাহে প্রায় ১৪,২০০ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন।
- হংকংয়েও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, বিশেষ করে গুরুতর রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে।
- চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ডের মতো দেশগুলিও নতুন ঢেউয়ের মোকাবেলায় টিকা ও সতর্কতা জোরদার করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগ
এই নতুন পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) একটি বৈশ্বিক মহামারী প্রস্তুতি চুক্তিতে সায় দিয়েছে। এতে ১২৪টি দেশ সমর্থন জানিয়েছে। ভবিষ্যতে মহামারী এলে কীভাবে ওষুধ, টিকা ও চিকিৎসা সবার জন্য সহজলভ্য করা যায়, সেই পরিকল্পনা নিয়েই এই চুক্তি।
ভারতে এখন পর্যন্ত করোনা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু যেহেতু বাইরের দেশে সংক্রমণ বাড়ছে, তাই সতর্কতা অবলম্বন করাই শ্রেয়। মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, ভিড় এড়িয়ে চলা—এসব অভ্যাস আবার ফিরিয়ে আনলে ভালোই হবে।
মারিয়া