ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৮ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২

লাহোর থেকে করাচি—ড্রোনের টুকরোয় ভরে উঠছে পাকিস্তান

প্রকাশিত: ১৭:২১, ৮ মে ২০২৫

লাহোর থেকে করাচি—ড্রোনের টুকরোয় ভরে উঠছে পাকিস্তান

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এর মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, রাতের বেলায় পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে মোট ১২টি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে এবং এই ঘটনার সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চার সদস্য আহত হয়েছেন।

এর একদিন আগে ভারতীয় বাহিনীর হামলায় ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হলে পাকিস্তান শোক প্রকাশ করে এবং নয়াদিল্লির এই কর্মকাণ্ডকে “সন্ত্রাসবাদ” আখ্যা দিয়ে নিয়মিত যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে।

পাকিস্তান সেনাবাহিনী দাবি করে, তারা পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে—যা পরোক্ষভাবে স্বীকার করেছে ভারত, কারণ ভারতীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন তাদের অন্তত তিনটি বিমান নিজেদের ভূখণ্ডেই “দুর্ঘটনাক্রমে বিধ্বস্ত” হয়েছে।

বুধবার, দুই দেশের মধ্যে ভারী গোলাবর্ষণ চলার সময় ভারতীয় হামলার ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ জানানো হয়—যার মধ্যে ছিল পাঞ্জাব প্রদেশের আহমদপুর ইস্ট, মুরিদকে, শিয়ালকোট, শাক্করগড় এবং আজাদ কাশ্মীরের মুজাফ্‌ফরাবাদ ও কোটলির নাম।

আজকের সংবাদ সম্মেলনে লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী জানান, ভূপাতিত ১২টি হ্যারপ ড্রোন ভূপাতিত হয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, অ্যাটক, গুজরানওয়ালা, চাকওয়াল, রাওয়ালপিন্ডি, বাহাওয়ালপুর, মিয়ানো, ছোর এবং করাচির নিকটবর্তী এলাকায়।

তিনি পরে ড্রোনগুলোর ধ্বংসাবশেষের কিছু ছবি সাংবাদিকদের দেখান এবং জানান, এগুলোর ধ্বংসাবশেষ একাধিক স্থানে সংগ্রহ করা হচ্ছে।

“এই ১২টি ড্রোন ছাড়াও একটি ড্রোন লাহোরের কাছে একটি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আংশিক আঘাত হানে,” বলেন তিনি।

“এই হামলায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চার সদস্য আহত হয়েছেন এবং একটি সরঞ্জামে আংশিক ক্ষতি হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, ভারতের এই ড্রোন হামলার ফলে সিন্ধুর মিয়ানো এলাকায় একজন বেসামরিক নাগরিক শহীদ হয়েছেন এবং আরও একজন আহত হয়েছেন।

“আমরা যখন কথা বলছি, তখনো ভারত হ্যারপ ড্রোন পাঠিয়ে চলেছে... এই নগ্ন আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে এবং আমাদের সশস্ত্র বাহিনী উচ্চ সতর্কতায় থেকে তা প্রতিহত করছে।”

তিনি বলেন, “এটি একটি মারাত্মক উসকানিমূলক আচরণ।”

“৬ ও ৭ মে রাতের ব্যর্থ হামলার পর ভারত এই ধরনের কাজ শুরু করেছে, যেখানে তারা উপাসনালয়, বেসামরিক অবকাঠামোতে আঘাত হানে এবং নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ নিরীহ মানুষদের হত্যা করে,” তিনি জানান।

তিনি আরও বলেন, “নিজেদের পাঁচটি বিমান, বহু ড্রোন এবং সীমান্তে উল্লেখযোগ্য প্রাণহানির পর ভারত কার্যত দিশাহীন হয়ে পড়েছে এবং যুক্তির পথ ছেড়ে উত্তেজনার পথেই এগোচ্ছে।”

“ভারত সরকার তাদের অহংকারী মনোভাব পূরণের জন্য যেভাবে এই স্পষ্ট সামরিক আগ্রাসন চালাচ্ছে, তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখে স্পষ্ট। এই কর্মকাণ্ড কেবল অঞ্চল নয়, গোটা বিশ্বের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলছে,” বলেন আইএসপিআর মহাপরিচালক।

শেষে তিনি বলেন, “পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী যেকোনো ধরনের হুমকি মোকাবিলায় সম্পূর্ণ সজাগ রয়েছে।”

 

সূত্র: https://www.dawn.com/news/1909390/dg-ispr-says-four-army-men-injured-as-indian-drone-engaged-near-lahore

আবীর

×