ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

জাপানের যে ডিম খেলে দশ বছর আয়ু বাড়ে!

প্রকাশিত: ২১:১৭, ২১ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ২১:২৩, ২১ এপ্রিল ২০২৫

জাপানের যে ডিম খেলে দশ বছর আয়ু বাড়ে!

ছবি: প্রতীকী

জাপানের হাকোন অঞ্চলের একটি বিস্ময়কর প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থান হলো ওওয়াকুদানি। সক্রিয় আগ্নেয়গিরি ঘেরা একটি উপত্যকা, যাকে স্থানীয়ভাবে ‘জিগোকুদানি’ বা ‘নরকের উপত্যকা’ নামে ডাকা হয়। তবে এই জায়গার আলোচিত আকর্ষণ শুধু ধোঁয়া ওঠা পাহাড় নয়, বরং এক ধরনের বিশেষভাবে সিদ্ধ করা ডিম, যা এখানকার সালফারসমৃদ্ধ পানিতে ফোটানোর পরে খোসায় কালো রঙ ধারণ করে। এই ডিমকে স্থানীয়রা ভালোবেসে ডাকেন ‘কুরো-তামাগো’।

এই ডিম আসলে একদম সাধারণ মুরগির ডিম। কিন্তু এগুলোকে ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এক ঘণ্টা ধরে প্রাকৃতিক উষ্ণ জলে সিদ্ধ করা হয়। এরপর ১৫ মিনিট ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে স্টিম বা ভাপে রাখা হয়। জল ও বাষ্পে থাকা সালফার ও লোহার প্রভাবে ডিমের খোসা কালো হয়ে যায়। ঠিক যেন আগ্নেয়গিরির ছাইয়ে রঙিন কোনো রহস্যময় খাদ্য!

এই ডিম একদম নিরাপদ এবং খেতে বেশ সুস্বাদু। অনেকের বিশ্বাস, এই ডিম খেলে ১০ বছর বা গড়ে পাঁচ থেকে সাত বছর পর্যন্ত আয়ু বাড়ে! ফলে যারা জীবনে একটু বাড়তি সৌভাগ্য চান, তারা এখানে এসে এই ডিম চেখে দেখতেই পারেন।

এই ডিমের কেমন দাম এবং কোথায় কিনতে পাবেন—
বর্তমানে (এপ্রিল ২০২৪ পর্যন্ত) চারটি ডিমের মূল্য ¥৫০০ ইয়েন। ওওয়াকুদানি স্টেশনের কাছে অবস্থিত ‘ওওয়াকুদানি কুরোতামাগোকান’ নামের দোকানে এই ডিম পাওয়া যায়। দোকানে আরও নানা ধরনের ওমিয়াগে (স্যুভেনির) বিক্রি হয়, যেমন কালো ডিম আকৃতির মঞ্জু (মিষ্টি পেস্টভরা বান) ও সুস্বাদু বিস্কুট।

প্রাকৃতিক পথ আর গাইডেড ট্যুর
যদিও উপত্যকার প্রকৃত সিদ্ধ ডিম সাইট বা ‘নেচার স্টাডি পাথ’ দেখতে হলে নির্দিষ্ট গাইডেড ট্যুরের মাধ্যমেই যেতে হয়। ২০১৫ সাল থেকে সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য এই পথ বন্ধ, এবং বর্তমানে দিনে চারবার গাইডেড ট্যুর হয়। এর জন্য অবশ্যই আগাম বুকিং দিতে হবে। তবে এই পথে ডিম কেনা সম্ভব নয়। এই পথ কেবল সাইট দেখা ও জানার জন্য উন্মুক্ত।

আপনি যদি প্রকৃতি, আগ্নেয়গিরি আর অদ্ভুত কিন্তু আকর্ষণীয় খাদ্য পছন্দ করেন, তাহলে আপনার জন্য এটি এক দুর্দান্ত গন্তব্য হতে পারে। আপনি হাকোন থেকে ট্রেনে চেপে ওওয়াকুদানি পৌঁছাতে পারেন।


এছাড়া পরিষ্কার দিনে এখান থেকে দেখা যায় জাপানের প্রতীক মাউন্ট ফুজি। আর তার সামনে ধোঁয়ায় মোড়া কালো ডিম হাতে ছবি তুলতে ভুল করেন না পর্যটকরা। যেন প্রকৃতির রহস্য আর খাদ্যের ঐতিহ্য এক ফ্রেমে ধরা পড়ে!

 

 

তথ্যসূত্র

জাপান ট্রাভেল 


 

সুরাইয়া

×