
ছবি: সংগৃহীত
ভারত মহাসাগর অঞ্চলে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা ক্রমেই তীব্রতর হচ্ছে। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, গুরুত্বপূর্ণ এই বাণিজ্য রুটে ভারতের শক্তিশালী নৌ উপস্থিতি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাচ্ছে।ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত মহাসাগরের দিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপে যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি যৌথ সামরিক ঘাঁটিও রয়েছে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) মুম্বাইয়ে নৌবাহিনীর বহরে একটি সাবমেরিন ও দুটি যুদ্ধজাহাজ সংযুক্তির অনুষ্ঠানে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ভারতের মোট বাণিজ্যের প্রায় ৯৫ শতাংশ ভারত মহাসাগর অঞ্চলের সঙ্গে জড়িত। ভূ-রাজনৈতিক কারণে এই অঞ্চলটি আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর প্রতিযোগিতার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, চীনের নৌবাহিনীর ব্যাপক সম্প্রসারণ ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগ বাড়িয়েছে। চীনের নৌবাহিনীতে বর্তমানে ৩৭০টিরও বেশি জাহাজ রয়েছে, যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় নৌবহর। ২০২০ সালে হিমালয় সীমান্তে চীন-ভারত সংঘাতে ভারতের ২৪ সেনা নিহত হওয়ার পর দুই দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। যদিও পরবর্তী সময়ে সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে উভয় দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, তবে এখনো সীমান্তে অচলাবস্থা রয়ে গেছে।
ভারত মহাসাগরে চীনের প্রভাব মোকাবিলায় ভারত ২০৩৫ সালের মধ্যে ১৭৫ জাহাজের শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে। স্থানীয়ভাবে নির্মিত সরঞ্জাম ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে দেশটি। তবে বিশ্লেষকদের মতে, নৌবাহিনী সম্প্রসারণে ভারতের অগ্রগতি চীনের তুলনায় ধীর। চীন যেখানে বছরে প্রায় ১৪টি যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ করে, সেখানে ভারত নির্মাণ করে মাত্র চারটি।
এছাড়া, ভারত মহাসাগরের দিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, যা এই অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতাকে আরও জটিল করে তুলেছে। চীনের বিনিয়োগ ও উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশগুলোতে প্রভাব বিস্তারের জবাবে ভারতও বাংলাদেশ, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানে কৌশলগত সম্পর্ক জোরদারের চেষ্টা করছে। রাজনাথ সিংয়ের মতে, এই অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারতীয় নৌবাহিনীর শক্তিশালী উপস্থিতি অপরিহার্য।
সূত্র: রয়টার্স
তাবিব