ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

নির্বিঘ্নে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি বাইডেনের

২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও লড়তে চান ট্রাম্প

জনকণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:৩৪, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও লড়তে চান ট্রাম্প

.

সদ্য অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছিল সবচেয়ে ঘটনাবহুল। প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই নির্বাচনে কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে বাজিমাত করেন ৭৮ বছর বয়সী রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু এরই মধ্যে ফের নির্বাচনে লড়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন নবনির্বাচিত এই প্রেসিডেন্ট।    
তিনি বলেন, সমর্থকরা চাইলে তৃতীয়বারের জন্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হতে আমি রাজি। বুধবার হোয়াইট হাউসে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকের আগে মার্কিন আইনসভার নিশ্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভসের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন ট্রাম্প। ওয়াশিংটনের একটি হোটেলে তাদের সামনে দাঁড়িয়েই তিনি  জানান, সমর্থকরা চাইলে তিনি তৃতীয়বারও প্রেসিডেন্ট হতে রাজি।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সাংবিধানিক বিধি অনুযায়ী, একজন প্রেসিডেন্ট দু’দফায় মোট আট বছর প্রেসিডেন্ট পদে থাকতে পারেন। ট্রাম্প ২০১৬ থেকে ২০২০ পর্যন্ত আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের জয়ী হয়েছেন তিনি। অর্থাৎ, ২০২৮ সালে যখন আমেরিকায় ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে, তখন তার সর্বোচ্চ আট বছরের মেয়াদ পূর্ণ হবে। তারপর তিনি আর প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। তবে সাংবিধানিক বিধিতে বদল আনা হলে ট্রাম্পের ফের হোয়াইট হাউজে ঢোকার পথ প্রশস্ত হবে। পরোক্ষভাবে ট্রাম্প সেই ইঙ্গিতই দিয়ে রাখলেন কিনা, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। খবর স্কাই নিউজ, বিবিসি ও সিএনএন অনলাইনের।
ট্রাম্প বলেন, আমার ধারণা যে, আমি আর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ব না। অবশ্য যদি আপনারা বলেন যে, তিনি ভাল ছিলেন। কিংবা, বিশেষ একজনকে আমরা পেয়েছি, তা হলে আলাদা কথা। ট্রাম্পের এই মন্তব্য নিয়েই আলোচনা শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে ২২তম সংশোধনীতে বলা হয়েছিল, কোনো প্রেসিডেন্টই তৃতীয়বারের জন্য প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। মূলত ক্ষমতার অপব্যবহার রুখতেই এই সংশোধনী আনা হয়। ক্ষমতা ধরে রাখতে ট্রাম্প সেই সাংবিধানিক বিধি বদলাতে চলেছেন কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এরপরই জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান ট্রাম্প। জানুয়ারিতে ক্ষমতা হস্তান্তরের উদ্দেশে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতেও কথা বলেন দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক দুই প্রতিদ্বন্দ্বী। এতে উভয়ই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেন। নির্বাচনে জয় পাওয়ার জন্য ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর নির্বিঘ্নেই হবে বলে আশ্বস্ত করেন বাইডেন।
হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠক প্রায় দুই ঘণ্টা স্থায়ী হয়। হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র কারিন জঁ পিয়েরে বলেন, দেশের ও বিশ্বের মুখোমুখি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ নীতি সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করেন তারা। এটি সত্যিই খুব সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা ছিল। হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান সাংবাদিকদের বলেন, ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার জন্যই ভালো বলে মনে করেন বাইডেন। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন, একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল ইউরোপ আমেরিকাকে যুদ্ধে টেনে আনা থেকে রক্ষা করবে।
তবে ট্রাম্প রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দ্রুত শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে তিনি কীভাবে তা করবেন এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি। ট্রাম্প বলেছেন, কথোপকথনের সময় তিনি ও বাইডেন মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে খুব বেশি কথা বলেছেন। ট্রাম্প আরো বলেন, আমাদের অবস্থান ঠিক কোথায় এ নিয়ে আমি তার (বাইডেনের) মতামত জানতে চেয়েছিলাম।  বাইডেন সেগুলো আমাকে জানিয়েছেন। তিনি খুব বিনয়ী ছিলেন। ২০২০ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পকে পরাজিত করেছিলেন ডেমোক্র্যাট বাইডেন। তবে রিপাবলিকান ট্রাম্পের সঙ্গে একটি বিপর্যয়কর বিতর্কের পর জুলাইয়ে ২০২৪ সালের নির্বাচনী দৌড় থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। তখন দলের পক্ষ থেকে প্রার্থী হন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। তিনি ট্রাম্পের কাছে হেরে যান। দীর্ঘদিন ধরে একে অপরকে তীব্র সমালোচনা করেছেন বাইডেন ও ট্রাম্প। বাইডেন ৮১ বছর বয়সে ট্রাম্পকে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। অন্যদিকে ট্রাম্প বাইডেনকে অযোগ্য বলে অভিহিত করেছেন। ২০২০ সালের নির্বাচনে ব্যাপক জালিয়াতির ভিত্তিহীন দাবি তুলেছিলেন তিনি, যা নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত।

 

×