ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২

পাকিস্তানে ভবন ধসে নিহত ২১, ধ্বংসস্তূপে এখনও আটকা বহু

প্রকাশিত: ০০:৪২, ৬ জুলাই ২০২৫

পাকিস্তানে ভবন ধসে নিহত ২১, ধ্বংসস্তূপে এখনও আটকা বহু

পাকিস্তানের করাচিতে একটি আবাসিক ভবন ধসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২১ জনে দাঁড়িয়েছে। শনিবার দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান চালায় স্থানীয় দমকলকর্মীরা।

শহরের লিয়ারি এলাকার দরিদ্রপল্লীতে শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে চারতলা ভবনটি হঠাৎ ভেঙে পড়ে। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার পর ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়া মানুষদের খুঁজে বের করতে প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।

জেলা প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জাবেদ নবি খোসো জানিয়েছেন, “শনিবার রাত পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ জনে। উদ্ধার অভিযান এখনও চলমান রয়েছে।”

প্রশাসন জানিয়েছে, ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। তবে ভবনের মালিক ও কিছু বাসিন্দা দাবি করেছেন, তারা কোনো নোটিশ পাননি।

এক বাসিন্দা ইমরান খাসখেলি বলেন, “আপনারা কী মনে করেন, আমরা পাগল যে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পরিবার নিয়ে থাকবো? আমরা কোনো নোটিশ পাইনি।”

তবে তিনি স্বীকার করেন, শুক্রবার সকালেই ভবনের পিলারে ফাটল দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে সব দরজায় কড়া নেড়ে লোকজনকে বেরিয়ে যেতে বলেন। “আমি বারবার বলেছি, কিন্তু অনেকে কথা শোনেনি। এরপরই ভবনটি ধসে পড়ে।”

৫৪ বছরের দেব রাজ ধ্বংসস্তূপের পাশে দাঁড়িয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার মেয়ে ধ্বংসস্তূপের নিচে। মাত্র ছয় মাস আগে তার বিয়ে হয়েছিল। ও ছিল আমাদের চোখের মণি।”

৭০ বছর বয়সী ঝুমহো মাহেশ্বরীর পরিবারও ভবনটিতে বসবাস করত। সকালে কাজে বের হওয়ার পরই ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা। তিনি বলেন, “আমার কিছুই অবশিষ্ট নেই। পুরো পরিবার ধ্বংসস্তূপের নিচে। আমি শুধু প্রার্থনা করছি।”

এক বাসিন্দা শঙ্কর কামহো বলেন, “আমার স্ত্রী আমাকে ফোন করে জানায়, ভবন ফেটে যাচ্ছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে যেতে বলি। আমার স্ত্রী মেয়ে নিয়ে বেরিয়ে যায়। ২০ মিনিট পরই ভবনটি ধসে পড়ে।”

প্রশাসন জানিয়েছে, ওই এলাকার আরও ৫০টির বেশি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে শুক্রবার থেকে ৬টি ভবন খালি করে দেওয়া হয়েছে।

ধ্বংসস্তূপের পাশে দাঁড়িয়ে মায়া শাম জি বলেন, “আমার ভাইয়ের পরিবারও ধ্বংসস্তূপের নিচে। আমাদের দুনিয়া যেন শেষ হয়ে গেছে। আমরা অসহায়, শুধু চাই উদ্ধারকর্মীরা আমাদের প্রিয়জনদের জীবিত ফিরিয়ে আনুক।”

মিমিয়া

আরো পড়ুন  

×