.
রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন চলতি সপ্তাহে উত্তর কোরিয়া ও ভিয়েতনাম সফর করেন। ২৪ বছর পর উত্তর কোরিয়ায় পা রাখেন রুশ প্রেসিডেন্ট। এ সফরে দেশটির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা চুক্তিসহ কৌশলগত অংশীদারিত্বের একাধিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন তিনি। এরপর পুতিন সেখান থেকে ভিয়েতনাম যান। এ ছাড়া গত মাসে চীন সফরে গিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত গতিতে নতুন জোট তৈরির জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন পুতিন।
সে লক্ষ্যেই চীন, উত্তর কোরিয়াসহ আমেরিকার অন্য প্রতিপক্ষ দেশগুলোতে একের পর এক সফর করছেন তিনি। নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, রাশিয়া যে গতিতে নতুন জোট তৈরি করছে, তাতে আমেরিকা বিস্মিত হয়েছে। এমনকি, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে রাশিয়ার নিরাপত্তা অংশীদারিত্বকে ওয়াশিংটন প্রত্যাশা করেনি। এ সম্পর্কে একজন মার্কিন বিশেষজ্ঞ বলতে বাধ্য হয়েছেন, আমেরিকা দীর্ঘদিন ধরে চীন ও রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করে রাখতে সক্ষম হলেও এখন তা আর সম্ভব হচ্ছে না।
বরং মার্কিন প্রতিপক্ষের সঙ্গে রাশিয়ার নিরাপত্তা সম্পর্ক তৈরির ‘গতি’ এবং ‘গভীরতা’ মাঝে মাঝে মার্কিন গোয়েন্দা বিশ্লেষকদেরকেও বিস্মিত করছে। তিনি আরও বলেন, এতদিন ধরে আমেরিকা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যে প্রভাব-প্রতিপত্তি বজায় রেখেছিল, রাশিয়া ও তার মিত্ররা এখন তাকে সম্মিলিতভাবে পাশ কাটিয়ে চলছে। দুদিনের সফরে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ৩টার দিকে পিয়ংইয়ং পৌঁছান পুতিন। এরপর পুতিন ও উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। সেখানে একটি কৌশলগত প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্ব চুক্তি সই করে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া। এই চুক্তিতে সই করেন বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দুই নেতা। চুক্তিতে এক দেশ আগ্রাসনের শিকার হলে অপর দেশ তার সাহায্যে এগিয়ে আসবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে পুতিন বলেন, দুই দেশের মধ্যে সার্বিক অংশীদারিত্ব চুক্তি সই হয়েছে। এতে আগ্রাসনের শিকার হলে পারস্পরিক সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক কারিগরি সহযোগিতা গড়ে তোলার বিষয়টিও নাকচ করেননি তিনি। এ সময় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন বলেন, তার দেশ কিংবা রাশিয়া কোনো ধরনের ‘ঘটনা বা যুদ্ধের’ মুখে পড়লে কোনো দ্বিধা ছাড়াই এর জবাব দেবে উত্তর কোরিয়া।
অবশ্য ‘ঘটনা’ বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা স্পষ্ট করেননি কিম। উত্তর কোরীয় নেতা আরও বলেন, তার দেশ ও রাশিয়ার মধ্যে ‘জোটগত সম্পর্ক নতুন উচ্চতায়’ উন্নীত হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে সই হওয়া চুক্তিকে ‘সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও আত্মরক্ষামূলক’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এরপর মার্কিন পরামর্শ আগ্রাহ্য করে বৃহস্পতিবার পুতিনকে স্বাগত জানায় ভিয়েতনাম। হ্যানয়ে ২১ বার তোপধ্বনি দিয়ে তাকে স্বাগত জানানো হয়। ভিয়েতনামের শীর্ষ নেতারা মস্কোর সঙ্গে তাদের ‘সমন্বিত কৌশলগত অংশীদারিত্বের’ প্রশংসা করেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার অঙ্গীকার করেছেন। একই দিন উভয় দেশের মধ্যে একাধিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বৈঠকে ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট তো লাম পুনর্নির্বাচনের জন্য পুতিনকে অভিনন্দন জানিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিপুল সমর্থন পাওয়ার জন্য আমাদের কমরেডকে আবারও অভিনন্দন। এটি রুশ জনগণের আস্থার প্রতীক।