প্যারিসে গত নবেম্বরে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে সালাহ আবদে সালামকে পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজছিল। শুক্রবার ব্রাসেলসে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্যারিস হামলার জন্য দায়ী সন্দেহভাজনদের ২৬ বছর বয়সী সালামই একমাত্র জীবিত ব্যক্তি। ওই হামলায় ১৩০ জন নিহত হয়েছিল। খবর ইয়াহু নিউজের।
প্যারিস হামলার পর থেকেই ফেরার ছিলেন ফরাসী নাগরিক আবদেসালাম। গত সপ্তাহে ব্রাসেলসে একটি এ্যাপার্টমেন্টে তল্লাশি চালানোর সময় আবদে সালামের আঙ্গুলের ছাপ পাওয়া যায় বলে ব্রাসেলসের প্রসিকিউটররা জানিয়েছেন। তারই সূত্র ধরে শুক্রবার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে গুলি বিনিময় হলে তিনি পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। হামলার একদিন পর জঙ্গী সংগঠন আইএস এর দায় স্বীকার করে। আইএসের দাবি অনুযায়ী তাদের দলের আটজন সদস্য একাজে অংশ নিয়েছিল। এদের মধ্যে সাতজনের পরিচয় পুলিশ শনাক্ত করতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, আবদেসালাম ছিলেন গাড়িচালক। ১৩ নবেম্বর ফ্রান্সের একাধিক স্থানে হামলা চালানো হয়। ধারণা করা হচ্ছে আবদে সালামকে দিয়ে আরেকটি স্থানে হামলা করার পরিকল্পনা গ্রুপটির ছিল। হামলায় অংশ নেয়া তার ভাই ইব্রাহিম আবদে সালাম বুলেভার ভলতেয়ারে একটি কাফেতে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানোর জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন হামলার আগে আবদে সালাম প্যারিসের বাইরে একটি আতশবাজি সামগ্রীর দোকান থেকে ব্যাটারিসহ ১০টি বিস্ফোরক কিনেছিলেন। আবদে সালামের পেশাগত বায়োডাটা বিশ্লেষণ করে ব্রিটেনের ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকা জানতে পেরেছে, পারিবারিক ব্যবসার বাইরে আবদে সালাম রেলওয়ে মেকানিক হিসেবেও দুবছর কাজ করেছেন। আবদে সালাম নিয়মিত পার্টিতে যেতেন। পার্টিতে একজন জুয়াড়ি, মাদকসেবী ও ধূমপায়ী হিসেবে আবদে সালামের কুখ্যাতি ছিল বলে জানা গেছে। তার ফুটবল ও মোটরসাইকেলের বাতিক ছিল বলে তার একজন ছোটবেলার বন্ধু মন্তব্য করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আবদে সালামের মধ্যে কোন ধরনের উগ্রতা কখনই দেখা যায়নি। প্যারিস হামলার পরিকল্পনাকারী হিসেবে নাম এসেছিল আবদে সালামের আরেক বাল্যবন্ধু আবদেল হামিদ আবাউদের। হামলার দুয়েকদিন পর ফরাসী কর্তৃপক্ষের অভিযানে আবাউদ নিহত হন। ১৩ নবেম্বর ওই হামলার আগে থেকেই আবাউদের আচরণ সন্দেহজনক ছিল। ফ্রান্স ও বেলজিয়ামে হামলার পরিকল্পনাকারী সন্দেহে তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। ইন্ডিপেন্ডেন্ট জানিয়েছে, তারা দুজনই ডাকাতির মামলায় গ্রেফতার হয়ে ২০১০ সালে কিছুদিন কারাগারে ছিলেন। কারাবন্দী থাকা অবস্থায় তারা চরমপন্থায় দীক্ষিত হয়ে থাকতে পারেন বলে অনুমান করা হয়। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ বলেছেন, প্যারিস হামলার যারা পরিকল্পনা ও সহায়তা করেছে, অর্থ দিয়ে বা অন্যান্য উপায়ে যারা সহায়তা করেছে তাদে সবাইকে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত অভিযান চলবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: