ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৭ আগস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২

যুদ্ধের মাঝেও গোপন ব্যবস্থায় সরকারি কর্মচারীদের নগদ বেতন দিচ্ছে হামাস

প্রকাশিত: ০৮:৩০, ৭ আগস্ট ২০২৫

যুদ্ধের মাঝেও গোপন ব্যবস্থায় সরকারি কর্মচারীদের নগদ বেতন দিচ্ছে হামাস

ছবিঃ সংগৃহীত

দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধের মধ্যেও হামাস ৩০ হাজার সরকারি কর্মচারীর বেতন প্রদানের জন্য একটি গোপন নগদ-ভিত্তিক পদ্ধতি ব্যবহার করছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, প্রতিজন কর্মচারী প্রতি ১০ সপ্তাহ অন্তর তাঁদের পূর্বের মূল বেতনের মাত্র ২০ শতাংশেরও কম পাচ্ছেন। গত সপ্তাহে তিনজন কর্মচারী নিশ্চিত করেছেন যে তাঁরা প্রায় ৩০০ ডলার করে পেয়েছেন।

দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ, চরম খাদ্যাভাব এবং ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির মধ্যে এই ক্ষুদ্র বেতন সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

গাজায় কোনো কার্যকর ব্যাংকিং ব্যবস্থা না থাকায় বেতন সংগ্রহও হয়ে উঠেছে ঝুঁকিপূর্ণ। কর্মচারীরা সাধারণত নিজেদের বা তাঁদের স্ত্রীদের মোবাইলে একটি ‘চা খাওয়ার আমন্ত্রণ’ বার্তা পান, যেখানে নির্দিষ্ট সময় ও স্থানে গিয়ে এক ‘বন্ধুর’ সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়।

সেখানে একজন ব্যক্তি হঠাৎ উপস্থিত হয়ে হাতে একটি সিল করা খাম দিয়ে চলে যান। হামাসের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মচারী বলেন, “প্রতিবার বেতন তুলতে যাওয়ার সময় স্ত্রী ও সন্তানদের বিদায় জানাই। জানি না ফিরতে পারব কি না।”

এক স্কুলশিক্ষক জানান, তিনি ১,০০০ শেকেল (প্রায় ৩০০ ডলার) পেয়েছেন, যার বেশিরভাগই পুরনো ও ছেঁড়া নোট। “শুধু ২০০ শেকেল ব্যবহারযোগ্য ছিল। বাকিটা নিয়ে কী করব বুঝি না।”

ইসরায়েল মার্চ মাসে হামাসের অর্থ বিভাগের প্রধান ইসমাইল বারহুমকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে। তবে হামাস কীভাবে এখনো বেতন দিতে পারছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

বিবিসির কাছে এক উচ্চপদস্থ হামাস কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার আগেই হামাস ৭০০ মিলিয়ন ডলার এবং বিপুল শেকেল মজুত করে রেখেছিল, যা টানেলে সংরক্ষিত ছিল। এসব তদারকি করতেন হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার ও তাঁর ভাই মোহাম্মদ, যাদের ইসরায়েল পরে হত্যা করেছে।

যুদ্ধ চলাকালেও হামাস ব্যবসায়ীদের ওপর কর আরোপ করেছে এবং সিগারেট শতগুণ দামে বিক্রি করে অর্থ সংগ্রহ করছে।

স্থানীয় জরুরি কমিটির মাধ্যমে শুধুমাত্র হামাস সমর্থকদের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করায় জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভ বেড়েছে।

ইসরায়েল অভিযোগ করেছে, যুদ্ধবিরতির সময় ঢুকানো সহায়তা হামাস চুরি করেছে। যদিও হামাস তা অস্বীকার করেছে, তবে গাজা থেকে বিবিসি’র সূত্র বলেছে, তখনও হামাস উল্লেখযোগ্য সহায়তা গ্রহণ করেছে।

এক হতভাগ্য নারী নিসরিন খালেদ বলেন, “আমার সন্তানরা শুধু ক্ষুধার জন্য নয়, পাশের হামাস সমর্থকদের খাবার পেয়ে কান্না করত। আমাদের দুর্ভোগের জন্য তারাই কি দায়ী নয়?”

সূত্রঃ বিবিসি 

নোভা

×