ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৭ আগস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২

ইসলামপুরের কৃষকরা বিপাকে, ভরা বর্ষা মৌসুমেও নেই পানি

নিজস্ব সংবাদদাতা, ইসলামপুর, জামালপুর

প্রকাশিত: ১৪:০৫, ৭ আগস্ট ২০২৫

ইসলামপুরের কৃষকরা বিপাকে, ভরা বর্ষা মৌসুমেও নেই পানি

ছবি: সংগৃহীত

ভরা বর্ষা মৌসুম হলেও জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় খাল-বিল, নদী-নালা ও পুকুরে পর্যাপ্ত পানি নেই। ফলে পাট কাটতে ও জাগ দিতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এখানকার কৃষকেরা।

সরেজমিনে উপজেলার গোয়ালেরচর, গাইবান্ধা, চর গোয়ালিনী, চর পুটিমারী, পার্থশী ও পলবান্ধা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে—বন্যার পানি না থাকায় অনেক কৃষক জমির পাট কাটতে পারছেন না। আবার কেউ কেউ কাটা পাট অটোভ্যান, ভটভটি বা মহিষের গাড়িতে দূরবর্তী জলাশয়ে নিয়ে জাগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এতে সময়, শ্রম ও খরচ— তিনটাই বাড়ছে। পানির অভাবে অপরিপক্ব অবস্থায় পাট পচিয়ে আঁশ নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। কেউ কেউ জমির পাশে কাটা পাট ফেলে রেখেছেন, যা রোদে শুকিয়ে আরও ক্ষতির মুখে পড়ছে।

মোহাম্মদপুর মালমারা এলাকার কৃষক লেবু সরকার বলেন, “গতবারের তুলনায় এবার বৃষ্টির পরিমাণ কম। অন্য বছর এই সময়ে খাল-বিল পানিতে ভরে থাকত। এবার পুকুরেও পানি নেই বললেই চলে। তাই বাধ্য হয়ে বাড়ির পাশে সামান্য বৃষ্টির পানি জমা পুকুরে পাট জাগ দিচ্ছি। এতে আঁশ ভালো হচ্ছে না।”

পলবান্ধা এলাকার কৃষক জিন্নাত আহমেদ জানান, “আগে যেসব ডোবায় পানি থাকত, সেগুলো শুকিয়ে গেছে। অন্যের পুকুর ভাড়া নিয়ে জাগ দিতে হচ্ছে।” একই উপজেলার পাটচাষি ওয়াদুজ্জামান বলেন, “দুই বিঘা জমির পাট কেটেছি, কিন্তু জাগ দেওয়ার মতো পানি নেই। রোদে পাট শুকিয়ে যাচ্ছে, মনে হচ্ছে ক্ষতির মুখে পড়ব।”

ইসলামপুর উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এবার উপজেলায় ৭ হাজার ৮৪৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ায় প্রতি বিঘায় ৯ মণ হারে ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল বলেন, “ফলন ও বাজারদরের দিক থেকে এবার কৃষকেরা পাট চাষে লাভবান হবেন বলে আশা করছি। তবে বন্যার অভাবে জাগ দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে, যার জন্য কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”

আসিফ

×