ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৭ আগস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিমুখী নীতি!

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৫৫, ৭ আগস্ট ২০২৫; আপডেট: ১১:০০, ৭ আগস্ট ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিমুখী নীতি!

ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০% শুল্ক আরোপ করে ফের একবার পশ্চিমা দেশের ‘দ্বিচারিতা’ সামনে আনলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতীয় জ্বালানি নীতিকে সামনে রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, একইসঙ্গে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনতে থাকা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় শুরু হয়েছে তীব্র কূটনৈতিক বিতর্ক।

সম্প্রতি ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে ভারতের ওপর ২৫% অতিরিক্ত শুল্কসহ মোট ৫০% শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এতে করে ভারত এখন ব্রাজিলের সঙ্গে মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি মার্কিন শুল্কের শিকার হওয়া দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। অন্যদিকে চীন, কানাডা, সুইজারল্যান্ড, ইরাকের ওপর শুল্কের হার যথাক্রমে ৩০%, ৩৫%, ৩৯% ও ৩৫%।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমরা মার্কিন এই সিদ্ধান্তকে অন্যায্য, অযৌক্তিক মনে করি। আমরা রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি করি মূলত ১.৪ বিলিয়ন মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে।”

ভারত এটাও বলেছে যে, রাশিয়ার সঙ্গে তেল ব্যবসা শুধু ভারতই করছে না, বরং ইউরোপীয় অনেক দেশ, এমনকি মার্কিন মিত্ররাও তা করছে, কিন্তু তাদের উপর কোনো শুল্ক নেই।

ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার—২০২৪ সালে দেশটি ৮৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে যুক্তরাষ্ট্রে, যেখানে আমদানি করেছে ৪১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। ফলে ভারতের অনুকূলে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ৪৬ বিলিয়ন ডলার।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো যদিও রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তথাপি বাস্তবতা ভিন্ন। ২০২১ সালে যেখানে ইইউ-র রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য ছিল ২৫৭.৫ বিলিয়ন ইউরো, তা ২০২৪ সালে এসে কমে দাঁড়ায় ৬৭.৫ বিলিয়ন ইউরো।

কিন্তু তারপরও রাশিয়ান এলএনজি (লিকুইফায়েড প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানি ২০২৪ সালে ৯% বেড়েছে। শুধুমাত্র বেলজিয়ামেই রাশিয়ান এলএনজি কেনা বেড়েছে মাসিক ভিত্তিতে ১২%।

বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন রাশিয়ার সবচেয়ে বড় জ্বালানি ক্রেতা হলেও তার উপর এতটা শুল্ক আরোপ করা হয়নি। চীনের রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি ২০২৪ সালে বেড়ে মোট আমদানির ২১.৫ শতাংশে দাঁড়ায়।

এছাড়া চীন ৮.৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন রাশিয়ান এলএনজি আমদানি করেছে এবং একটি বড় গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্পও আলোচনায় রয়েছে।

ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, “প্রত্যেক স্বাধীন দেশেরই নিজস্ব বাণিজ্যিক অংশীদার বেছে নেওয়ার অধিকার রয়েছে। ভারতের ওপর শুল্ক চাপিয়ে তা ক্ষুণ্ন করা হয়েছে।”

যদিও মার্কিন প্রশাসন রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে, তবুও তাদের নিজস্ব বাণিজ্য সম্পর্ক পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। ২০২৪ সালে মার্কিন-রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছিল ৫.২ বিলিয়ন ডলার, যদিও ২০২১ সালে তা ছিল ৩৬ বিলিয়ন।

সূত্র: https://www.ndtv.com/world-news/us-hypocrisy-50-tariff-on-india-zero-on-eu-that-bought-russian-oil-9034696?pfrom=home-ndtvworld_world_top_scroll

মুমু ২

×