
ছবি: সংগৃহীত
ইসরাইলের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ইরান সমর্থিত লেবাননের ছায়াযোদ্ধা গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। সংগঠনটির মহাসচিব শেখ নাইম কাসেম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর একটি মাত্র ভুলেই ইসরাইল জর্জরিত হবে মিজাইলের বৃষ্টিতে, আর মাত্র এক ঘণ্টার প্রতিরোধেই ভেঙে পড়বে দখলদার বাহিনীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সম্প্রতি ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর জেনারেল মোহাম্মদ সাঈদ ইজাদীর মৃত্যুবার্ষিকীর ৪০ দিনে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এসব বলেন। তার মতে, যুদ্ধবিরতির আট মাসে ইসরাইল যেভাবে নিজেদের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে, হিজবুল্লাহর আধুনিক ও নির্ভুল অস্ত্রাগারের সামনে তা টিকবে না। তিনি সতর্ক করেন, হিজবুল্লাহ এখনো যুদ্ধবিরোধী চুক্তি মেনে চুপ করে থাকলেও ইসরাইল যদি কোনো উসকানি বা ভুল করে, তার খেসারত দিতে হবে কড়ায় গন্ডায়।
মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্ট বুক অনুসারে, হিজবুল্লাহর হাতে বর্তমানে রয়েছে এক লাখ পাঁচ হাজারেরও বেশি মিজাইল ও রকেট, যেগুলোর অনেকগুলোই ইসরাইলের যেকোনো প্রান্তে আঘাত হানতে সক্ষম। এই অস্ত্রসম্ভারের মধ্যে রয়েছে ড্রোন, ট্যাংকবিধ্বংসী এবং যুদ্ধজাহাজ ধ্বংসকারী অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র, যেগুলোর অনেকটাই ইরান, রাশিয়া ও চীনের তৈরি। ধারণা করা হয়, এসব অস্ত্র হিজবুল্লাহকে সরবরাহ করে থাকে ইরান। ২০২২ সালের হিসাব অনুযায়ী সংগঠনটির যোদ্ধার সংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার, যার মধ্যে ২০ হাজারই পূর্ণকালীন যোদ্ধা।
হিজবুল্লাহ মহাসচিব আরও বলেন, তারা কখনোই লেবাননের সরকারের সঙ্গে করা যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করেনি, কিন্তু প্রতিরোধ শক্তি হিসেবে হিজবুল্লাহ সর্বদা দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষায় প্রস্তুত। অস্ত্রসমর্পণের জন্য আন্তর্জাতিক চাপে তাঁরা মাথা নত করেনি এবং কাসেম সরাসরি প্রশ্ন তোলেন—“হিজবুল্লাহ অস্ত্র ছেড়ে দিলে লেবাননকে কে রক্ষা করবে?” পাশাপাশি তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, হিজবুল্লাহ অস্ত্র ফেলে রাখলেও ইসরাইলের আগ্রাসন বন্ধ হবে না। ফলে যুদ্ধবিরতির আড়ালে নিজেদের আরও শক্তিশালী করেছে হিজবুল্লাহ, যা স্পষ্টতই ভবিষ্যতের যেকোনো সম্ভাব্য সংঘাতের জন্য এক ভয়ঙ্কর পূর্বাভাস।
শেখ ফরিদ