ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

চোখের ক্যান্সার: প্রাথমিক যে ৭ উপসর্গ অবহেলা করলেই বিপদ

প্রকাশিত: ০৯:০০, ২৬ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০৯:০২, ২৬ জুলাই ২০২৫

চোখের ক্যান্সার: প্রাথমিক যে ৭ উপসর্গ অবহেলা করলেই বিপদ

ছবি: সংগৃহীত

চোখের ক্যান্সার একটি গুরুতর রোগ, যেখানে চোখ বা চোখের আশপাশের টিস্যুতে অস্বাভাবিক কোষ অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। চোখের ক্যান্সারের প্রধানত তিনটি ধরণ রয়েছেপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দেখা যায় ‘ইন্ট্রাওকুলার মেলানোমা’, শিশুদের মধ্যে হয় ‘রেটিনোব্লাস্টোমা’, এবং দুর্বল রোগপ্রতিরোধক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্যে দেখা যায় ‘লিম্ফোমা’। চোখের আইরিস, রেটিনা কিংবা আশপাশের টিস্যুতেও এই ক্যান্সার তৈরি হতে পারে।

এই রোগের উপসর্গগুলো ধীরে ধীরে প্রকাশ পায় বলে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা কঠিন হয়। তাই নিয়মিত চোখের পরীক্ষা ও প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে সচেতনতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

চোখের ক্যান্সারের যে লক্ষণগুলো অবহেলা করবেন না:

১. ঝাপসা বা বিকৃত দৃষ্টি

চোখের ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর একটি হলো দৃষ্টির সমস্যা। চোখে ফোকাস করতে কষ্ট হওয়া, সোজা লাইন বেঁকে দেখা, বস্তু স্পষ্টভাবে না দেখা, কিংবা কোনো বস্তুকে বিকৃতভাবে দেখা যেতে পারে। কখনো রঙ কম উজ্জ্বল মনে হতে পারে বা চোখের সামনে ছায়ার মতো কিছু দেখা যেতে পারে।

২. চোখে আলোর ঝলকানি বা ফ্লোটার

চোখের সামনে হঠাৎ করে আলোর ঝলকানি, কালো দাগ বা দৃষ্টিতে ভাসমান রেখার মতো কিছু দেখা যাওয়া চোখের ক্যান্সারের আরেকটি লক্ষণ। এগুলো চোখের ভিতরে টিউমার বৃদ্ধির কারণে রেটিনার উপর চাপ সৃষ্টি হলে দেখা দিতে পারে।

৩. চোখের রঙিন অংশে (আইরিস) বা সাদা অংশে কালো দাগ

চোখের আইরিস বা সাদা অংশে নতুন কোনো গাঢ় বা অস্বাভাবিক দাগ দেখা গেলে তা বিপদের ইঙ্গিত হতে পারে। এই দাগগুলো সাধারণত দ্রুত বাড়ে, অসমান সীমারেখা থাকে এবং স্পর্শ করলে উঁচু অনুভব হয়। এটি সাধারণ ফ্রেকলের (ছোপ ছোপ দাগ) চেয়ে আলাদা।

৪. পিউপিলের (চোখের মধ্যের কালো অংশ) আকার বা আকৃতির পরিবর্তন

স্বাভাবিকভাবে দুই চোখের পিউপিল গোলাকার ও একই আকারের হয়। কিন্তু যদি পিউপিল অসমান, ডিম্বাকার বা আলোতে ঠিকভাবে প্রতিক্রিয়া না দেখায়, তাহলে তা টিউমারজনিত সমস্যা হতে পারে।

৫. পার্শ্বদৃষ্টির (peripheral vision) হ্রাস

যদি পাশের দিকের বস্তু না দেখা যায় বা মাথা ঘোরাতে হয়, তাহলে তা চোখের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। এটি রেটিনা বা অপটিক নার্ভ আক্রান্ত হলে হয়। এই লক্ষণটি সাধারণত ব্যথাবিহীন হয়, ফলে দেরিতে বোঝা যায়।

৬. চোখ ফোলা বা চোখে গাঁট তৈরি হওয়া

চোখের পেছনে টিউমার থাকলে তা চোখকে সামনে ঠেলে দিতে পারে, ফলে চোখ ফোলা বা বাইরের অংশে গাঁট দেখা যায়। এসব গাঁট বেশিরভাগ সময়ে অস্বস্তিকর ও বিরক্তিকর হয়ে ওঠে। যদি কোনো গাঁট ভালো না হয় বা বাড়তে থাকে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

৭. চোখে লালচেভাব, জ্বালা বা ব্যথা

চোখে দীর্ঘস্থায়ী লালভাব, জ্বালা বা ব্যথা চোখের ক্যান্সারের প্রাথমিক ইঙ্গিত হতে পারে। টিউমার বৃদ্ধি পেলে চোখের অভ্যন্তরে চাপ বেড়ে যায় ও রক্তনালিগুলো ফুলে ওঠে, যা ব্যথার কারণ হয়।

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?

উপরে উল্লিখিত যেকোনো উপসর্গ যদি এক সপ্তাহের মধ্যে সেরে না যায় বা সময়ের সঙ্গে আরও খারাপ হয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যাদের চোখ হালকা রঙের, পরিবারে মেলানোমার ইতিহাস আছে বা অতিরিক্ত রোদে থাকার অভ্যাস রয়েছেতাঁদের নিয়মিত চোখের পরীক্ষা করা দরকার।

বি.দ্র.: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যভিত্তিক, কোনোভাবেই চিকিৎসা পরামর্শ হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। চোখে কোনো ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

 

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

রাকিব

×