
বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে হৃদরোগ, আর এর পেছনে সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো হার্টের রক্তনালীতে ব্লকেজ বা করোনারি আর্টারি ডিজিজ। কিন্তু সুখবর হচ্ছে bআপনি যদি প্রাথমিক লক্ষণগুলো চিনতে পারেন, তাহলে অনেক আগেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি এড়াতে সময়মতো চিকিৎসা নেওয়াই হতে পারে জীবন বাঁচানোর চাবিকাঠি। চলুন জেনে নিই, কোন কোন লক্ষণ দেখলে সাবধান হওয়া জরুরি-
বুকে ব্যথা বা চাপ অনুভব
হার্টের রক্তনালী ব্লক হয়ে যাওয়ার সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো বুকে ব্যথা বা চাপ লাগা। হাঁটা, ব্যায়াম কিংবা মানসিক চাপের সময় এই অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। কখনও কখনও বিশ্রামের সময়ও এই ব্যথা হতে পারে। যদি ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা খুব তীব্র হয়, তাহলে অবহেলা না করে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
শ্বাসকষ্ট অনুভব
হার্টে যথাযথ রক্ত ও অক্সিজেন না পৌঁছালে আপনি স্বাভাবিক কাজেও হাঁপিয়ে যেতে পারেন। হঠাৎ হঠাৎ শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া বা দীর্ঘশ্বাস নিতে না পারার অনুভূতি রক্তনালীতে ব্লকেজের ইঙ্গিত হতে পারে।
অস্বাভাবিক ক্লান্তি
বিএলকে-ম্যাক্স হার্ট অ্যান্ড ভাসকুলার ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর ড. অবিনাশ ভার্মার মতে, "যদি আপনি খুব বেশি কাজ না করেও দুর্বল বা ক্লান্ত বোধ করেন, তাহলে এটা হতে পারে হার্ট ঠিকমতো রক্ত পাম্প করতে পারছে না। যখন রক্তনালী ব্লক হয়, তখন শরীর স্বাভাবিক কাজ করতে অতিরিক্ত চেষ্টা করে, যা ক্লান্তি বাড়িয়ে দেয়।"
মাথা ঘোরা বা হালকা মাথা লাগা
রক্তনালী ব্লক থাকলে হার্ট থেকে ব্রেনে পর্যাপ্ত রক্ত যেতে পারে না। এর ফলে মাথা ঘোরা বা হঠাৎ দুর্বল লাগা শুরু হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানুষ অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারে।
হৃদস্পন্দনের গতি বেড়ে যাওয়া বা অনিয়মিত হওয়া
হার্ট যদি অস্বাভাবিকভাবে দ্রুত বা অনিয়মিতভাবে স্পন্দন করে, তাহলে এটা ইঙ্গিত দিতে পারে যে হার্টের কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ব্লক হওয়া রক্তনালীর কারণে হার্ট তার স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারছে না, ফলে এর ছন্দ বিঘ্নিত হয়।
শরীরের অন্যান্য অংশে ব্যথা
সব সময়ই ব্যথা বুকেই হবে, এমন নয়। অনেক সময় এই ব্যথা কাঁধ, হাত, গলা, চোয়াল কিংবা পিঠেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। সাধারণত বাম দিকে এই ব্যথা বেশি অনুভূত হয়, তবে অন্যদিকেও হতে পারে।
ঠান্ডা ঘাম হওয়া
যখন শরীর কোনো বিশেষ কারণ ছাড়াই হঠাৎ ঘেমে যায়, বা আপনি ঠান্ডা ঘামে ভিজে যান, তখন এটা হতে পারে হৃদযন্ত্রে চাপ পড়ার লক্ষণ। বিশেষ করে এই উপসর্গগুলো যদি অন্যান্য উপসর্গের সঙ্গে দেখা দেয়, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে সতর্ক হওয়া উচিত।
উপরের যেকোনো একটি লক্ষণ যদি আপনি নিজে অনুভব করেন বা কাছের কেউ করে থাকেন, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। যত দ্রুত এই সমস্যাগুলোর সঠিক নির্ণয় ও চিকিৎসা শুরু করা যাবে, ততই কমবে জটিলতা এবং বাড়বে সুস্থ জীবনের সম্ভাবনা। হৃদযন্ত্রের যত্ন নিন কারণ প্রতিটি হৃদস্পন্দনই আপনার জীবনের ছন্দ।
সূত্র:https://tinyurl.com/4245k64w
আফরোজা