
ছবিঃ সংগৃহীত
দিন শেষে ঘুমাতে যাওয়ার সময় অনেকের মাথায় হুট করে ভিড় করে নানা অপ্রয়োজনীয় চিন্তা। নিস্তব্ধ রাতে যখন চারপাশ শান্ত, তখন মনের ভেতর শুরু হয় অশান্তির দোলা। কেন এমন হয়? আর কিভাবে এই চিন্তার ঢেউকে থামানো যায়?
মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের মস্তিষ্ক দিনের ব্যস্ততা শেষে যখন কিছুটা আরামে আসে, তখন এটি ডিফল্ট মোড নেটওয়ার্ক (DMN)-এ প্রবেশ করে। এই অবস্থায় অতীতের স্মৃতি, ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তা বা যেসব সমস্যা এখনো মস্তিষ্কে অমীমাংসিত, সেগুলো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। বিশেষ করে যাঁরা সারাদিন মানসিক চাপে থাকেন, তাঁদের ক্ষেত্রে রাতের নিস্তব্ধতা উল্টে দুশ্চিন্তার রূপ নেয়।
এছাড়া মোবাইল-ল্যাপটপের স্ক্রিন থেকে আসা নীল আলো মেলাটোনিন হরমোন কমিয়ে দেয়, যা ঘুমের স্বাভাবিকতা নষ্ট করে এবং চিন্তার প্রবাহ বাড়িয়ে তোলে।
সমাধান কী হতে পারে?
ঘুমের আগে রিলাক্সেশন রুটিন
ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা আগে থেকে একটি নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করুন। হালকা গান শুনতে পারেন, গরম পানিতে গোসল করতে পারেন বা প্রিয় বইয়ের কয়েকটি পৃষ্ঠা পড়ে নিতে পারেন।
চিন্তা লিখে ফেলুন
সারাদিনের চিন্তা বা দুশ্চিন্তাগুলো একটি ডায়েরিতে লিখে ফেললে মস্তিষ্ক বুঝতে পারে এগুলো ‘ম্যানেেজড’। ফলে বারবার মাথায় ফিরে আসার সম্ভাবনা কমে।
মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশন
প্রতিদিন ৫-১০ মিনিট শ্বাস-প্রশ্বাসে ফোকাস করে মেডিটেশন করতে পারেন। মনে করুন, চিন্তাগুলো আকাশে ভেসে বেড়ানো মেঘ, আসবে আর চলে যাবে।
স্ক্রিন টাইম কমান
ঘুমানোর অন্তত ৩০ মিনিট আগে ফোন, ট্যাব বা ল্যাপটপ বন্ধ করুন। বদলে হালকা স্ট্রেচিং, ধ্যান বা প্রার্থনা করতে পারেন।
ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলুন
চিন্তাগুলোকে বাস্তব ও অবাস্তব এই দুই ভাগে ভাগ করে ফেলুন। অবাস্তব বা অযৌক্তিক চিন্তাকে পাত্তা না দিয়ে বাস্তব বিষয় নিয়েই মনোযোগ দিন।
শেষে এক গ্লাস গরম দুধ আপনার শরীরকে আরাম দেবে এবং ঘুমাতে সাহায্য করবে।
মনে রাখুন, চিন্তা আসবে—এটাই স্বাভাবিক। তবে সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আপনারই হাতে। আজ রাত থেকেই শুরু করুন ছোট একটি অভ্যাস, যা আপনাকে এনে দেবে প্রশান্ত ঘুম।
ইমরান