
দৈনিক জনকণ্ঠ
ঢাকা, মে ২০২৫ খোসপাঁচড়া, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় স্ক্যাবিস (Scabies) নামে পরিচিত, এটি একটি অত্যন্ত ছোঁয়াচে চর্মরোগ। সারকোপটিস স্ক্যাবিই (Sarcoptes scabiei) নামক এক ধরনের ক্ষুদ্র মাইটের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়। ত্বকের ভেতরে ঢুকে এটি অস্বস্তিকর চুলকানি ও লাল ফুসকুড়ির সৃষ্টি করে।
প্রধান লক্ষণ:
- রাতে বেশি চুলকানি
- আঙুলের ফাঁক, কবজি, কোমর, ও ত্বকের ভাঁজে লাল ফুসকুড়ি
- পরিবারের একাধিক সদস্যের একই উপসর্গ
কীভাবে ছড়ায়?
এই রোগ ছড়াতে পারে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে, অথবা একই তোয়ালে, বিছানা বা কাপড় ব্যবহারের মাধ্যমে। পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে, দ্রুতই অন্য সদস্যরাও আক্রান্ত হতে পারেন।
প্রতিরোধের উপায়:
- নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা
- ব্যক্তিগত জিনিসপত্র আলাদা রাখা
- পরিবারের সব সদস্যকে একসাথে চিকিৎসা নেওয়া
চিকিৎসা কীভাবে করবেন?
১. Permethrin 5% ক্রিম – সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি ব্যবহার পদ্ধতি:
- গোসল করে শুকানো ত্বকে, গলা থেকে পা পর্যন্ত লাগাতে হবে
- আঙুলের ফাঁক, নাভি, যৌনাঙ্গ, নখের নিচে ক্রিম লাগাতে ভুলবেন না
- ৮–১৪ ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে
- ৭ দিন পর আবার একইভাবে ব্যবহার করতে হবে
২. I-vermectin – ট্যাবলেট, তবে গর্ভবতী নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে সতর্কতা প্রয়োজন
৩. Antihistamines – চুলকানি কমাতে সাহায্য করে, বিশেষত রাতের বেলায়
কীভাবে জীবাণুমুক্ত রাখবেন?
ব্যবহৃত কাপড়, চাদর, তোয়ালে গরম পানিতে ধুয়ে রোদে শুকাতে হবে বিকল্পভাবে কয়েকদিন প্লাস্টিক ব্যাগে ভরে রেখে দিন, যাতে মাইট মারা যায় পরিবারের সবাইকে একসাথে চিকিৎসা করাতে হবে, নইলে রোগ বারবার ফিরে আসতে পারে
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?
- ৭ দিনের বেশি চুলকানি থাকলে
- চিকিৎসা সত্ত্বেও উপসর্গ না কমলে
- একাধিক পরিবারের সদস্য আক্রান্ত হলে
ডা. মো. তানজিলুল ইসলাম বলেন, “খোসপাঁচড়া একেবারেই নিরাময়যোগ্য। তবে এটি ছোঁয়াচে হওয়ায় সময়মতো চিকিৎসা না নিলে পুরো পরিবার আক্রান্ত হতে পারে। তাই উপসর্গ দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।”
ছোট মনে হলেও স্ক্যাবিস একটি গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য সমস্যা। সচেতনতা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণই এই রোগ প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি।
হ্যাপী