
ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বজুড়ে বর্তমানে আনুমানিক ৫৪০ মিলিয়ন মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, যার ৯৫% টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগী। এর অধিকাংশই উন্নয়নশীল দেশের নাগরিক। অনুমান করা হচ্ছে, ২০৪০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা ৭৮৩ মিলিয়নে পৌঁছাবে। ভারতে বর্তমানে প্রায় ১০১ মিলিয়ন মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, যা বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
আজকের দিনে ডায়াবেটিস কেবল ধনী, বয়স্ক বা শহুরে জীবনের রোগ নয়। বরং গ্রামীণ ও তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যেও এর বিস্তার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। শুধু আক্রান্তরাই নয়, এর পাশাপাশি আরও প্রায় ১৩৬ মিলিয়ন মানুষ প্রিডায়াবেটিসে ভুগছে, যারা শিগগিরই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। কার্যকর প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনা কৌশল প্রণয়ন না করলে ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে ডায়াবেটিস ও এর জটিলতা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।
ডায়াবেটিস শুধু অর্থনৈতিক নয়, বড় সামাজিক বোঝাও তৈরি করছে। টাইপ ২ ডায়াবেটিসের প্রাথমিক বয়সেই প্রকাশ ঘটছে, যার ফলে কিশোর-কিশোরী ও তরুণরাও আক্রান্ত হচ্ছে। কোনো বয়সে ডায়াবেটিস হওয়াই দুঃখজনক হলেও যখন জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এতে আক্রান্ত হয়, তখন তা ব্যক্তির পরিবার নয়, সমগ্র সমাজ ও দেশের জন্যই বিপদজনক।
সাধারণত ডায়াবেটিসের জটিলতা ধরা পড়ে রোগ নির্ণয়ের ১০-২০ বছর পর। অর্থাৎ, যদি কেউ ৫০ বছর বয়সে আক্রান্ত হয়, তবে ৬৫-৭০ বছর বয়সে জটিলতা দেখা দিতে পারে। কিন্তু যদি ২০ বছর বয়সেই ডায়াবেটিস শুরু হয়, তবে ৩০-৪০ বছর বয়সে কিডনি বিকল, অন্ধত্ব, হার্ট অ্যাটাক কিংবা অঙ্গচ্ছেদ। এইসব মারাত্মক জটিলতার ঝুঁকি বেড়ে যায় বহুগুণে।
এ কারণেই ‘প্রতিরোধই উত্তম চিকিৎসা’এই প্রবাদটি ডায়াবেটিস প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রযোজ্য। ডায়াবেটিস প্রতিরোধের জন্য জীবনের প্রতিটি ধাপেই সচেতনতা ও ঝুঁকি হ্রাসের উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব। বিশেষ করে যাঁদের পরিবারে ডায়াবেটিসের ইতিহাস আছে কিংবা যাঁরা স্থূলতায় ভুগছেন, অথচ রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা এখনো স্বাভাবিক তাঁদের ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরণের প্রতিরোধ ব্যবস্থা ‘প্রাইমর্ডিয়াল প্রিভেনশন’ নামে পরিচিত এবং এটি সবার জন্য প্রযোজ্য।
শহীদ