
ছবি: সংগৃহীত।
২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের ঘটে যাওয়া গণ-অভ্যুত্থানের সময় ড. তাসনিম জারা একটি ভিডিও শেয়ার করেন যেখানে তিনি গুলি লাগলে কি করতে হবে সে বিষয়ে বলেন। ড. তাসনিম জারা বলেন, গুলি লাগলে তাৎক্ষণিকভাবে কী করবেন, তা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গুলি লাগার পর মাত্র তিন থেকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে রক্তক্ষরণের কারণে মৃত্যুও হতে পারে। তাই প্রথম এবং প্রধান কাজ হলো রক্ত পড়া বন্ধ করা। কিভাবে রক্ত পড়া বন্ধ করবেন, তা সহজভাবে বোঝাচ্ছেন তিনি।
প্রথম কাজ: রক্ত পড়া বন্ধ করা
গুলির আঘাতের পর যে ছিদ্র তৈরি হয়, সেই ছিদ্রটি বন্ধ করা জরুরি। চিকিৎসকদের পরামর্শে হিমোস্ট্যাটিক ড্রেসিং সবচেয়ে কার্যকর, তবে আন্দোলনের পরিস্থিতিতে এটি পাওয়া সম্ভব নয়। তাই ড. তাসনিম জারা তিনটি বিকল্প পদ্ধতির কথা বলেছেন, যেগুলি সাধারণত হাতের কাছে পাওয়া যায়:
সার্জিক্যাল গজ: এটি অনেক ফার্মেসিতে পাওয়া যায় এবং অল্প দামে কিনে রাখা সম্ভব।
পিরিয়ডের ট্যাম্পন: ট্যাম্পন গুলির ছিদ্রের ভেতরে সহজেই ঢুকে যায় এবং রক্ত শুষে নিয়ে ফুলে ওঠে, ফলে রক্তক্ষরণ কমাতে সাহায্য করে।
পরিষ্কার কাপড়: যদি উপরের কিছু না পাওয়া যায়, তাহলে পরিষ্কার কাপড়ও ব্যবহার করা যেতে পারে।
এই তিনটি বিকল্পের মধ্যে যেটি আপনার কাছে পাওয়া যাবে, সেটি দিয়ে গুলির ছিদ্র বন্ধ করুন। এরপর, আহত জায়গায় চাপ প্রয়োগ করুন যাতে রক্তক্ষরণ কমে যায়।
দ্বিতীয় কাজ: চাপ প্রয়োগ
এক্ষেত্রে, প্রেসার ড্রেসিং বা প্রেসার ব্যান্ডেজ সবচেয়ে কার্যকর, তবে যদি আন্দোলনের মাঠে এটি সম্ভব না হয়, তাহলে যেকোনো পরিষ্কার কাপড় বা ব্যান্ডেজ দিয়ে আহত জায়গাটিতে চাপ প্রয়োগ করতে হবে। বিশেষ করে, বাচ্চাদের ডাইপার বা মেয়েদের স্যানিটারি প্যাড খুব ভালো কাজ করতে পারে, কারণ এগুলি পরিষ্কার থাকে এবং কিছুটা ভারী হওয়ায় অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করতে সাহায্য করে। এগুলোর নরম দিকটি কাটা জায়গার উপরে রেখে হাত দিয়ে শক্তভাবে চাপ দিন।
এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ এক বিষয় হলো, শুধু কাপড় বা ব্যান্ডেজ দিয়েই চাপ না দিয়ে, তার সাথে সাথে আহত জায়গায় হাত দিয়ে চাপ দিয়ে রাখবেন। আপনি প্রয়োজনে হাঁটু দিয়েও চাপ প্রয়োগ করতে পারেন।
তৃতীয় কাজ: টর্নিকেট ব্যবহার
যদি রক্তক্ষরণ বন্ধ না হয় এবং কাপড়টি রক্তে ভিজে যায়, তাহলে টর্নিকেট ব্যবহার করতে হবে। টর্নিকেট সাধারণত ২-৩ ইঞ্চি উপরে গুলির জায়গা থেকে বাঁধতে হবে। টর্নিকেট ব্যবহারের পরে, যদি রক্ত বন্ধ না হয়, তাহলে আবার আরেকটি টর্নিকেট ব্যবহার করা যেতে পারে। ফার্মেসিতে এটি ১২০-১৩০ টাকায় পাওয়া যায়, এবং আগে থেকে এটি সংগ্রহ করে রাখা যেতে পারে।
জরুরি দিক: হাসপাতালের দিকে দ্রুত স্থানান্তর
গুলির আঘাতের পর যত দ্রুত সম্ভব আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালের ইমারজেন্সি বিভাগে নিয়ে যেতে হবে। যেতে যেতে, এই প্রাথমিক চিকিৎসাগুলি যতটুকু সম্ভব করা উচিত।
ব্যাগে কি কি রাখা প্রয়োজন
১. টর্নিকেট
২. ব্যান্ডেজ
৩. ট্যাম্পন
৪. ডাইপার বা স্যানিটারি ন্যাপকিন
এই পরিস্থিতিতে এই সরঞ্জামগুলি আপনার কাছে থাকলে তাৎক্ষণিকভাবে সাহায্য করতে পারে।
নুসরাত