সংগৃহীত ছবি
শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মধ্যে লিভার অন্যতম, যা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমের মাধ্যমে আমাদের সুস্থ রাখে। শরীর সুস্থ থাকা অনেকটা নির্ভর করে এ লিভারের ওপর। বিভিন্ন কারণে লিভারের কার্যক্ষমতা নষ্ট হতে পারে, যা অনেক সময় জীবনহানিও ঘটাতে পারে। এ লিভারে আক্রান্ত হওয়ার ফলে প্রাণ ঝরছে হাজার হাজার মানুষের। লিভার নষ্টের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে সচেতন থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ দ্রুত চিকিৎসা পেলে লিভারের ক্ষতি প্রতিরোধ করা সম্ভব হতে পারে। এই ব্লগটিতে লিভার নষ্টের কিছু লক্ষণ সাথে কারণ ও প্রতিরোধের ব্যাপারে আলোচনা করবো।
কোন কোন লক্ষণে বুঝবেন লিভার ঠিকমতো কাজ করছে না? চলুন জেনে নিই-
১. ত্বক, চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া
লিভার ঠিকমতো কাজ না করলে অনেক সময় শরীরে বিলিরুবিনের পরিমাণ বাড়ে। তার জন্য ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে পড়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এমন লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
২. শরীরে ফোলা ভাব
বিশেষজ্ঞদের মতে, লিভারের হাল বেহাল হয়ে পড়লে শরীরে পানি জমে যেতে পারে। ফলে চোখ, মুখ, পা এবং পেট ফুলে যায়। তাই শরীর হঠাৎ ফুলে গেলে সচেতন হোন।
৩. খিদা নষ্ট হয়ে যাওয়া
হঠাৎ করেই কি খিদে খুব কমে গিয়েছে? আগে যেই খাবারগুলো খেতেন তা আর মুখে তুলতে ইচ্ছে করছে না। এমনটা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ লিভারের সমস্যা থাকলে এমনটা হয়ে থাকে।
৪. ওজন হ্রাস
লিভার ঠিকমতো কাজ না করতে পারলে হঠাৎ করেই অনেকটা ওজন কমে যেতে পারে। ব্যক্তির চেহারায় হুট করে বিরাট বদল আসে।
এছাড়াও লিভারজনিত সমস্যার আরও কিছু উপসর্গ হলো-
- চুলকানি
- গাঢ় রঙের প্রস্রাব
- ফ্যাকাসে মল
- অল্পতেই রক্তপাত
- শ্বাসকষ্ট
- রাতে ঘুম না আসা ইত্যাদি
এসব উপসর্গ দেখা দিলে সচেতন হোন। দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এতে পরবর্তীতে জটিল রোগ থেকে দূরে থাকা যাবে।
লিভারের কার্যক্রম ভালো রাখতে যেসব কাজ করা প্রয়োজন
- পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন।
- পরিশোধিত এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে যান। এর বদলে বাদাম, বীচি, উদ্ভিজ প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি খান।
- প্রদাহ তৈরি করে এমন তেল খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিন। যেমন : ক্যানোলা, কর্ন, সয়াবিন, সবজির তেল, সূর্যমুখীর তেল ইত্যাদি।
- পরিশোধিত সুগার বাদ দিন।
- সবজি বেশি খান। ম্যাগনেসিয়াম, ফলেট, ভিটামিন-সি ও ভিটামিন-বি জাতীয় খাবার বেশি করে খান।
- মদ্যপান এড়িয়ে চলুন।
- সালফার সমৃদ্ধ খাবার, যেমন—ডিম, ব্রকলি, রসুন, পেঁয়াজ ইত্যাদি খান।
লিভারের রোগের চিকিৎসা
লিভারের রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য যে ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন তা নির্ভর করে আপনি যে ধরনের রোগ নির্ণয় করতে পারেন তার উপর। যদিও নির্দিষ্ট লিভারের সমস্যাগুলি জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে মোকাবেলা করা এবং চিকিত্সা করা যেতে পারে, যেমন অ্যালকোহল ব্যবহার বন্ধ করা বা ওজন হ্রাস করা, লিভারের অন্যান্য ধরণের সমস্যার জন্য ব্যাপক ওষুধ বা এমনকি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। লিভারের রোগ যা শেষ পর্যন্ত যকৃতের ব্যর্থতার দিকে পরিচালিত করে সেই ব্যাধির চিকিৎসার জন্য লিভার ট্রান্সপ্লান্টের প্রয়োজন হতে পারে।
নুসরাত