ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মেরুদণ্ড টিউমারের আধুনিক চিকিৎসা

ডা. হারাধন দেবনাথ

প্রকাশিত: ০১:৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০২৩

মেরুদণ্ড টিউমারের আধুনিক চিকিৎসা

মানবদেহের মেরুদণ্ডের ভেতর দিয়ে চলে গেছে স্নায়ুরজ্জু বা স্পাইনাল কর্ড

মানবদেহের মেরুদণ্ডের ভেতর দিয়ে চলে গেছে স্নায়ুরজ্জু বা স্পাইনাল কর্ড। মস্তিষ্ক থেকে প্রান্তিক স্নায়ু পর্যন্ত আমাদের শরীরের সব সংকেত এই স্পাইনাল কর্ড হয়ে প্রবাহিত হয়। স্পাইনাল কর্ডের ভেতরে ও এর আশপাশে অস্বাভাবিকভাবে টিস্যু বা কোষ বেড়ে যেতে পারে। এমনকি ছোট ছোট পি- তৈরি হতে পারে। আকস্মিকভাবে কোষ বেড়ে যাওয়া কিংবা আগে কখনোই ছিল না, এমন পি- তৈরি হওয়াকে স্পাইনাল কর্ডের টিউমার বা মেরুদ-ের টিউমার বলা হয়ে থাকে।
মেরুদ-ের টিউমারের কারণ
বেশির ভাগ সময় মেরুদ-ের টিউমার কেন হয়, তা স্পষ্ট করে বলা মুশকিল। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা মেরুদ-ের কর্ডে টিউমারের পেছনে ত্রুটিযুক্ত জিনকে দায়ী করেন। তবে এসব জিনগত ত্রুটি মানুষ জন্মগত বা উত্তরাধিকার সূত্রে পায় নাকি সময় ও বয়সের সঙ্গে সঙ্গে শরীরে বিকশিত হয়, সেই সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যায় না। তবে অনেক সময় ক্ষতিকর পরিবেশে দীর্ঘদিন বসবাস, নির্দিষ্ট ক্ষতিকারক রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসার কারণে মেরুদ-ে টিউমার হতে পারে।
যেভাবে বুঝবেন-
মেরুদ-ের টিউমার হলে মানবদেহে এর কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। আসুন জেনে নিই সেসব উপসর্গ-
মেরুদ-ের কোনো একটি নির্দিষ্ট জায়গায় (টিউমারটি যেখানে রয়েছে) তীব্র ব্যথা হতে পারে।
সার্বক্ষণিক পিঠে ব্যথা অনুভব করা। ব্যথা পিঠের ওপরের ও নিচের অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
পিঠের ব্যথা দিন দিন বাড়তেই থাকে। কোনোভাবেই কমতে চায় না।
অনুভূতিহীনতা, অসাড় বোধ করা। তাপ ও শীতের মতো অনুভূতি বুঝতে না পারা।
অন্ত্র ও মূত্রাশয়ের কার্যকারিতা হ্রাস পেতে পারে।
চলাফেরা করতে অসুবিধা বোধ করা। অনেক সময় রোগী বাহ্যিক কোনো কারণ ছাড়াই পড়ে যেতে পারে।
কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে ব্যথা বেশি অনুভব হতে পারে।
পক্ষাঘাত, অর্থাৎ হঠাৎ করে পা বা হাত অবশ হয়ে যেতে পারে, কিংবা এমন অনুভূতি হতে পারে।
অনেক সময় মানবদেহের অন্য কোনো অঙ্গের টিউমার ও ক্যান্সার মেরুদ-ে ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিশেষ করে প্রোস্টেট ও কিডনির ক্যান্সার মেরুদ-ে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। আবার কখনো কখনো টিউমার মেরুরজ্জুর আবরণীতে হতে পারে। পরবর্তী সময়ে যা ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে। তাই উপসর্গ দেখা দিলে কিংবা সন্দেহ হলে সময় নষ্ট না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

লেখক : অধ্যাপক, নিউরোসার্জারি বিভাগ 
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।
চেম্বার : ল্যাবএইড হসপিটাল, (দ্বিতীয় তলা) ধানম-ি, ঢাকা।
০১৭১১-৩৫-৪১-২০, হটলাইন : ১০৬০৬ 

×