ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২২ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২

করোনার টিকা নেওয়ার পর ঝাপসা হচ্ছে দৃষ্টি, বলছে গবেষণা

প্রকাশিত: ১৯:৫০, ২১ জুলাই ২০২৫

করোনার টিকা নেওয়ার পর ঝাপসা হচ্ছে দৃষ্টি, বলছে গবেষণা

ছবি: সংগৃহীত

২০২০ সালে করোনা মহামারিতে কেঁপে ওঠে সারা বিশ্ব। এই মরণঘাতী মহামারি বদলে দেয় সভ্যতার ছক। থমকে যায় পৃথিবী, স্তব্ধ হয়ে পড়ে জনজীবন। লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়, অসংখ্য পরিবার হারায় তাদের প্রিয়জনকে। বিপর্যস্ত হয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, ভেঙে পড়ে চিকিৎসা পরিকাঠামো।

এমন সময় বিজ্ঞানীরা তড়িঘড়ি করে নামেন প্রতিষেধক তৈরির লড়াইয়ে। দ্রুত উদ্ভাবিত হয় করোনার টিকা—ফাইজার, সিনোফার্ম, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, মডার্নার মত ভ্যাকসিন। এই টিকাগুলো একদিকে যেমন প্রাণ বাঁচিয়েছে, বিপর্যয় ঠেকিয়েছে, তেমনি সময়ের সাথে সাথে এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন।

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, ফাইজার-বায়োএনটেকের কোভিড-১৯ টিকা চোখের কর্নিয়ায় ক্ষতি করতে পারে। বিশেষ করে চোখের স্বচ্ছ সামনের অংশ, যাকে কর্নিয়া বলা হয়—সেখানে অবস্থিত এন্ডোথেলিয়াল কোষে প্রভাব ফেলতে পারে এই টিকা।

১৮ জুলাই এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল। সংবাদমাধ্যমটি জানায়, তুরস্কে ৬৪ জন মানুষের উপর চালানো গবেষণায় দেখা গেছে, দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার দুই মাস পর টিকা গ্রহণকারীদের চোখের কর্নিয়া সামান্য মোটা হয়ে যায় এবং এন্ডোথেলিয়াল কোষের সংখ্যা ৮ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসে। কোষের স্বাভাবিক ছয়কোণা গঠন এবং তার গঠনের ভেতরে বৈচিত্র্য বেড়ে যায়, যা চোখের উপর চাপ বা কোষ ক্ষয়ের ইঙ্গিত দেয়।

স্বাস্থ্যবান মানুষের চোখে তাৎক্ষণিক সমস্যা না হলেও যাদের চোখে আগে থেকেই অস্ত্রোপচার হয়েছে বা কর্নিয়ায় সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য এই পরিবর্তন দীর্ঘমেয়াদে দৃষ্টিশক্তির ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

গবেষণায় অংশ নেয়া ব্যক্তিদের চোখে অত্যাধুনিক যন্ত্রে কর্নিয়াল টপোগ্রাফি ও স্পেকুলার মাইক্রোস্কোপি ব্যবহার করে কর্নিয়ার পুরুত্ব ও কোষের গঠন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।

তবে গবেষকরা বলছেন, এই ফলাফলে ভয়ের কিছু নেই। টিকা নেওয়া বন্ধের কোন কারণ নেই। বরং চোখে যদি আগে থেকেই কোন সমস্যা থাকে, তাহলে টিকার পর নিয়মিত পরীক্ষা করানো ও চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

শেখ ফরিদ 

×