ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী কুঁড়ে ঘর

আপেল মাহমুদ, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, ঠাকুরগাঁও

প্রকাশিত: ১৭:৫৬, ২৩ মে ২০২৫

বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী কুঁড়ে ঘর

ছবি: জনকণ্ঠ


ঠাকুরগাঁও সদরে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খড়-বাশেঁর ছাউনি দিয়ে তৈরি ঘর এখন অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। এক সময়ে ঠাকুরগাঁও সদরে বসবাসের প্রধান ঘর হিসেবে ব্যবহৃত হতো এই সব কুঁড়ে ঘর।

গ্রামের সাধারণ নিম্ন শ্রেণির খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চ শ্রেণির মানুষেরাও ব্যবহার করতেন এই ঘরগুলো।

এক সময় গ্রামে সাধারণত কুঁড়ের ঘরের তুলনায় ইট কিংবা টিনের ঘর ছিল খুবই কম কিন্তু আজ তা কালে আবর্তে সম্পূর্ণ বিপরীত। গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও বাঁশ ও খড় দিয়ে তৈরি কুঁড়ে ঘর এখন চোখে পড়ে খুবই কম। শ্রমজীবী মানুষেরা ধান কাটার পর অবশিষ্ট অংশ দিয়ে নিপুণ হস্তে তৈরি করতো এই কুঁড়ে ঘর।

যারা এই ঘর তৈরি করতে পারদর্শী তাঁদেরকে বলা হয় ছাপরবান। অত্যন্ত আরাম প্রিয় এই ঘর গুলো গরম কালেও ঠান্ডা এবং শীতকালেও এর ভিতরে বেশ গরম অনুভব হতো। আধুনিক যুগের আবর্তে এখনও সেই গ্রামীণ ঐতিহ্যের ঘরের খোঁজ পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে ঠাকুরগাঁও সদরের উপজেলার রুহিয়া ইউনিয়নের ঘনিমহেষপুর গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে এখনও কুঁড়েঘর দেখা গেছে।

তবে খড়ের অভাবে এ ঘরগুলি এখনও ছাউনি দিতে পারছেনা। আগে তো অনেক কৃষক বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করতো। ফলে শক্ত ও মজবুত খড় হতো। বছরের একবার চাউনি দিলে অনন্ত একবছর চলে যেতো। আবার পুরাতন ঐ খড় দিয়ে প্রায় দুমাসের রান্নার কাজ সাড়া যেতো। কিন্তু ঐসব ধান এখন চাষ করা হয়না।

ওইসব ধানের খড় পাওয়া যায় না। ফলে খড়ের অভাবে এক ধরনের সংকট সৃষ্টি হয়েছে এসব ঘরগুলি ছাউনির জন্যে।

তবে অত্যন্ত আরামদায়ক এসব ঘরের মাঝে থাকতে। পাশাপাশি ঘরটিকে সংরক্ষিত রাখতে বাঁশের প্রয়োজন হয়। বাঁশতো আগের তুলনায় অনেক কম। সরকারের উচিত গ্রামীণ ঐতিহ্যের এ ঘরগুলির অস্বিত্ব রক্ষা করা।

গ্রামের আল আমিন বলেন, এক সময় সর্বস্তরের থাকার জায়গার উৎসস্থল ছিলো খড়ের ঘর। সময়ের পরিবর্তনে দালান কোটার আড়ালে এখন খড় বাঁশের কুঁড়ে ঘর। ঐতিহ্যের অংশকে আকঁড়ে ধরে রাখতে সকলের এগিয়ে আসতে উচিত।

সাব্বির

×