ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৪ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তি

সাগরে লঘুচাপের শঙ্কা, বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৩৩, ২৩ মে ২০২৫

সাগরে লঘুচাপের শঙ্কা, বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে

শুক্রবার দুপুর থেকেই আকাশের মেঘর ঘনঘটা। পরে শুরু হয় ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে তোলা

বাতাসের প্রভাবে সারাদেশেই কম-বেশি বৃষ্টি ঝরছে। দিনের কোনো সময় রোদ থাকলেও মুহূর্তেই কালো মেঘে ঢেকে যাচ্ছে আকাশ। ভ্যাপসা গরম জনজীবনে অস্বস্তি বাড়িয়েছে। এমন অবস্থায় বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। সেই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।  আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বৃহস্পতিবার থেকেই দেশের তিন বন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে। সাগরে বড় আকারের মেঘ সৃষ্টি হওয়ার জন্যই এ সতর্ক সংকেত দেওয়া হয়েছে। এই বৃষ্টি দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১০ দিন ঝরতে পারে।

আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জনকণ্ঠকে জানান, ২৭ মে নাগাদ সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এমন সম্ভাবনাই বেশি। আর লঘুচাপ তৈরি হলে ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’র সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আগামী কয়েকদিন বৃষ্টি প্রসঙ্গে তিনি জানান, নি¤œচাপ বা ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ না হলেও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ জুনের দুই-তিনদিন আগেই মৌসুমি বায়ু দেশে প্রবেশ করবে। ভ্যাপসা গরমের বিষয়ে তিনি জানান, বৃষ্টির ফলে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যায়। আকাশে মেঘও রয়েছে। দুটোই ভ্যাপসা গরমের জন্য দায়ী। কিন্তু কোথাও টানা বৃষ্টি হলে এই অনুভূতি থাকছে না।
ঘূর্ণিঝড়ের পূর্ব শর্ত অনুযায়ী প্রথমে লঘুচাপ, পরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নি¤œচাপের পর একটি ঝড়ো পরিবেশ তৈরি হয়। এবার যে সময়ে এটি হচ্ছে তখন পূর্ণ অমাবশ্যা থাকবে। এ কারণে জোয়ার-ভাটার টানও দেখা যাবে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা জানান, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। দেশের এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পরে আগামী আরও ১০ দিন। বাংলাদেশ সংলগ্ন এলাকায় জড়ো হওয়া গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা আরও ঘনীভূত হয়ে লঘুচাপ তৈরি করতে পারে। তবে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে কি না, তা এখনো বলা যাচ্ছে না। তবে সম্ভাবনা আছে।
শুক্রবার সকাল ৯টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু মিয়ানমারের আকিয়াব উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। এটি আরও অগ্রসর হওয়ার অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। আগামী ২৭ মে পশ্চিমমধ্য এবং তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।
এর আগে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চলতি মাসের শেষদিকে সাগরে একটি নি¤œচাপ হতে পারে। এ থেকে একটি ঘূর্ণিঝড়ও সৃষ্টি হতে পারে।  কাজী জেবুন্নেছা জানান, ২৫ থেকে ২৬ মে সাগরে লঘুচাপের সৃষ্টি হতে পারে। সেটি নি¤œচাপে পরিণত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেখান থেকে ২৮ থেকে ২৯ মের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশ অতিক্রম করতে পারে। তবে এ নিয়ে নিশ্চিত করে এখনো কিছু বলার সময় আসেনি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, শনিবার ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও খুলনা বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

×