নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে নানা বিষয়ে লেখালেখি করেন। সেগুলো নিয়ে আলোচনা-সমালোচনাও হয়। এটিকে কিভাবে নিচ্ছেন?
ফেসবুকে লিখি এক ভাবনা থেকে। লেখার পর সবাই এটিকে অন্যভাবে নেয়। শুরু হয়ে যায় সমালোচনা। তাই আর না লেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ফেসবুকে যাই লিখবো সেটাকে আমার হাজব্যান্ড বা সংসার ভাঙ্গার মধ্যে নিয়ে আসবে কেউ কেউ। সেই কুমিরের রচনার মতো হয়েছে আমার বিষয়টি। অথচ আমি অনেক সময় আমার দেখা চারপাশের বিষয়গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করি। আমি যা লিখি তা শুধু আমার সঙ্গে নয়, আমাদের চারপাশে অহরহ ঘটে থাকে। এটি কি তাদের বোঝার মতো জ্ঞান নেই জানি না।
তার মানে সমালোচনা আপনার পিছনে লেগেই থাকে?
ষোলো কোটি মানুষের ভেতর আমাদের তারকা কতজন? তারকাদের নিয়ে এমন আলোচনা-সমালোচনা থাকবেই। তবে পৃথিবী আমাদের অনেক এগিয়ে গেছে। মায়ের পুনরায় বিয়ে দিবোর জন্য সন্তান পাত্র খোঁজে। সন্তানরা মায়ের পুনরায় বিয়ে মেনে নিচ্ছে। যেটা আমরা ভাবতেই পারতাম না। আমরা এখন সাঞ্জুর মতো সিনেমাও দেখতে পাই। আমাদের এভাবেই আগামী দিনগুলো পার করতে হবে।
কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরের বিষয়টি নিয়ে জানতে চাই? দুজনের মধ্যে এখন আসলে সম্পর্কটা কেমন?
এটি নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। আমি ব্যক্তিগত বিষয়কে কখনো পেশার সঙ্গে এক করে ফেলিনা। আমার বর্তমান স্বামীও সব সময় বলে থাকেন পেশা আর ব্যক্তি জীবনকে এক না করতে। আমার বিয়ের সময়ও আসিফ ভাইকে দাওয়াত করেছি। তিনি তখন আসেননি। এবার আমার মেয়ের অনুষ্ঠানে এসেছেন।
এরসঙ্গে পুরনো বিষয়ের কোন সম্পর্ক নেই বলে মনে করি। আগের বিষয়গুলোতে যদি আমার আপত্তি না থাকতো তাহলে সেটি এতদূর আসতো না। মামলা পর্যন্ত সেই বিষয়গুলো যেত না। উনার সঙ্গেও গান করার প্রশ্ন ওঠে না। যার সঙ্গে একবার এমনটা হয়েছে তার সঙ্গে কিছু করতে চাই না। আরও অনেক আছেন, যদি নতুন কিছু করতে হয় তাদের কাউকে নিয়ে করব।
সঙ্গীতাঙ্গনের খবর কি রাখছেন?
আমার স্বামী যেহেতু একটি বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত তাই গানের বাজার সম্পর্কে আগের থেকে বেশি খবর পাই। সত্যি বলতে গানের জন্য আলাদা কিছু হচ্ছে না। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো নাটক নিয়েই ব্যস্ত। এরমধ্যে হয়তো কিছু গান হচ্ছে। যেটি বলার মতো নয়। ক্যারিয়ারের এ সময়ে এসে তাই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের দুয়ারে ঘুরার ইচ্ছে নেই।
তাহলে শিল্পীদের এখন করণীয় কি?
সারা বিশ্বের বড় বড় শিল্পীরা নিজেরাই ইউটিউব চ্যানেল খুলেছেন। আমাদেরকেও সেই পথে হাঁটতে হবে। আমি এরমধ্যে আমার চ্যানেল থেকে একটি রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রকাশ করেছি। আগেই বলেছি, এ সময়ে এসে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানকে নাম মাত্রে গান দিতে চাই না। তার চেয়ে নিজের চ্যানেলে গান প্রকাশ করাই উত্তম। এখন আমার গানের সংখ্যা বাড়ানোর বয়স না। সেই বয়স পার করে এসেছি। তাই নিজের চ্যানেলে প্রয়োজনে বছরে একটি গান প্রকাশ করব। তবে সেটি নিজের মনের মতো করেই প্রকাশ হবে।
সম্প্রতি একটি রবীন্দ্র সংগীত করলেন। বিশেষ কোনো কারণ আছে?
অল্প সময়ের মধ্যে এ গানটির কাজ শেষ করেছি। ‘তোমায় গান শোনাবো’ শিরোনামের গানটির সঙ্গীতায়োজন করেছেন শাহরিয়ার আলম মার্সেল। এটি রবীন্দ্র প্রয়াণ উপলক্ষে করেছি। তবে মজার বিষয় হলো এটি পুরোপুরী আমার অর্থয়ানে করা হয়েছে। কারণ আমাদের এমন গানের জন্য পৃষ্টপোষ্টকতা খুব বেশি হয়না। আর আমিও এমন একটি গান নিয়ে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের দ্বারে দ্বারে যেতে ইচ্ছুক নই। তাই নিজের চ্যানেলেই গানটি প্রকাশ করেছি। এখন পর্যন্ত যারা শুনেছেন তারা গানটির জন্য প্রশংসা করেছেন। কাউকে না বললে বোঝার উপায় নেই এটি অল্প সময়ের মধ্যে করা একটি গান।
আপনার মেয়ে রোদেলাও গান করছে। তাকে কি গানের পেশায় দেখতে চান?
না। আমি চাই সে পড়ালেখা শেষ করে ভাল কোন একটা চাকরি করুক। তবে সে ভাল গান করে এটি সত্যি। শুধু গানই নয়, সে ভাল নাচে, ভাল আর্টও করে। এছাড়া একেবারে ঘরের লক্ষ্মী মেয়ে। আমার কখন কি প্রয়োজন সে সহজে বুঝতে পারে। নায়লাও ভারি মিষ্টি মেয়ে। ছোটটা তেমন হবে জানি না। তবে আমার বিশ্বাসও সেও দুই বোনের মতোই হবে।