ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৫ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

নজরুল পদকে পেলেন দুই কিংবদন্তি: সঙ্গীতে ইয়াকুব আলী, গবেষণায় রশিদুন নবী

অনলাইন রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:০৩, ২৪ মে ২০২৫

নজরুল পদকে পেলেন দুই কিংবদন্তি: সঙ্গীতে ইয়াকুব আলী, গবেষণায় রশিদুন নবী

ছবি: সংগৃহীত

এ বছর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মাননা “নজরুল পদক ২০২৫” পাচ্ছেন গবেষণায় অধ্যাপক ড. রশিদুন নবী এবং সঙ্গীতে জনাব ইয়াকুব আলী খান। সংশ্লিষ্ট কমিটির সভায় তারা চূড়ান্তভাবে মনোনীত হন।

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, নজরুল গবেষক ও সঙ্গীতজ্ঞ অধ্যাপক ড. রশিদুন নবী ১৯৫৭ সালের ১ জানুয়ারি মাগুরা জেলার শালিখা থানার অন্তর্গত দরিখাটোর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আব্দুস সামাদ ও মাতা সৈয়দা রাবেয়া খাতুন। ১৯৭১ সালে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বাংলা এবং সঙ্গীতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ, লেখক, গবেষক ও লোকসাহিত্য বিশারদ অধ্যাপক ড. আবুল আহসান চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে ‘নজরুল সঙ্গীত : শিল্পরূপ ও সুরবৈচিত্র্য’ বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

তাঁর সঙ্গীতগুরুদের মধ্যে উস্তাদ ফুল মোহাম্মদ, উস্তাদ নারায়ণচন্দ্র বসাক, উস্তাদ সৈয়দ জাকির হোসেন, শেখ লুৎফর রহমান, সুধীন দাশ, খালিদ হোসেন ও আবদুল লতিফ অন্যতম। দীর্ঘদিন তিনি নজরুল ইনস্টিটিউটে নজরুল গবেষণায় নিবেদিত ছিলেন। সর্বশেষ তিনি ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সঙ্গীত বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে অবসরে যান। তিনি একাধারে গবেষক, প্রশিক্ষক, শিল্পী, স্বরলিপিকার ও সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবে দেশ-বিদেশে সুপরিচিত। তিনি সর্বাধিকসংখ্যক—৩১৭৪টি নজরুল সঙ্গীতের সংকলন গ্রন্থ ‘নজরুল সংগীত সংগ্রহ’-এর সম্পাদক।

নজরুল পদক প্রাপ্তি সম্পর্কে ড. রশিদুন নবী বলেন, “যেকোনো প্রাপ্তি আনন্দের। এটি পরিতৃপ্তি এবং কাজের অনুপ্রেরণা—দুটোই বাড়িয়ে দেয়। শুদ্ধ নজরুল সঙ্গীত চর্চায় আমি নিরলসভাবে কাজ করে গেছি এবং এখনো করছি। প্রাপ্তির আশায় নয়, বরং দায়িত্ববোধ থেকে। যদিও এখন চারপাশে দেখি—টিভি ও ইউটিউবে যাদের মুখ বেশি দেখা যায়, তাদেরকেই বড় বড় পদ বা সম্মাননা দেওয়া হয়। সেই হিসেবে একজন নিভৃতচারী হিসেবে আমাকে খুঁজে বের করে পদক দেওয়া—এই আনন্দটা একটু বেশিই।”

সঙ্গীত সাধক ইয়াকুব আলী খান ১৯৫৬ সালের ১০ আগস্ট টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার কাজিরপাচুরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি সঙ্গীতমুগ্ধ ছিলেন। তালিকার শীর্ষে ছিল আব্বাস উদ্দীন ও নজরুল সঙ্গীত। বাবু পূর্ণ চন্দ্র সূত্রধর ছিলেন তাঁর প্রথম সঙ্গীত শিক্ষক। ‘পাটিওয়ালা’ ও ‘কিরানা’ ঘরানার ওপর তাঁর বিশেষ দখল ছিল। ফলে তিনি ‘মিরপুর ঘরানা’ নামে নতুন আঙ্গিকের বাংলা সঙ্গীতধারা চালু করেন। তিনি নজরুল একাডেমিসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান, পরীক্ষক ও প্রশিক্ষক হিসেবে এখনো দায়িত্ব পালন করছেন।

এ বছর গুণী এই দুই সঙ্গীতজ্ঞকে নজরুল পদক দেওয়ায় নজরুল বিষয়ক বিভিন্ন সংগঠন পদক প্রদানকারী কমিটিকে সাধুবাদ জানিয়েছে।

শহীদ

×