
দৈনিক জনকণ্ঠ
অজানা ইতিহাস আর লোককথার এক মিশেল হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলার গোরকুই গ্রামের গোরক্ষনাথ মন্দির ও পাশের শতবর্ষী কূপ। স্থানীয়ভাবে এটি পরিচিত ‘গোরক্ষনাথের আসন’ নামে। আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি বললেই চলে, অথচ এই নিভৃত স্থানটিই একসময় ছিল সাধক ও ভক্তদের অন্যতম মিলনস্থল।
লোকমুখে জানা যায়, বহু শতাব্দী আগে গোরক্ষনাথ সম্প্রদায়ের একজন সাধক এখানে তপস্যায় লিপ্ত ছিলেন। তাঁর স্মৃতিতেই নির্মিত হয় মন্দিরটি। পাশেই খনন করা হয় একটি কূপ, যার জল আজও স্থানীয়রা ‘পবিত্র’ বলে মানেন। অনেকে বিশ্বাস করেন, এই কূপের জল নানা রোগের উপশমে কার্যকর।
ঠাকুরগাঁও জেলা সদর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গোরকুই গ্রাম। রানীশংকৈল উপজেলা সদর থেকে পাকা সড়ক ধারে যেতে সময় লাগে মাত্র ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট। সহজ যাতায়াত ব্যবস্থার কারণে এটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার যথেষ্ট সম্ভাবনা রাখে।
বর্তমানে মন্দিরটি নিয়মিত সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়ছে। স্থানীয়রা প্রতি বছর এখানে ছোট পরিসরে পূজা-পার্বণ ও সাধুসঙ্গের আয়োজন করলেও সরকারি কোনো উদ্যোগ এখনও চোখে পড়েনি। ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক দিক বিবেচনায় স্থানটি সংরক্ষণ প্রয়োজন বলে মনে করেন এলাকাবাসী।
ধর্মীয় পর্যটনের সম্ভাবনাময় স্থান হিসেবে ঠাকুরগাঁওয়ের এই গোরক্ষনাথ মন্দির এক সময় হয়ে উঠতে পারে জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান। ইতিহাস, লোককথা আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব সমন্বয় এই প্রাচীন স্থাপনা, যা নতুন করে তুলে ধরলে সমৃদ্ধ হবে দেশের ঐতিহ্যভান্ডার।
এই নিঃশব্দ ঐতিহ্য যেন হারিয়ে না যায় ইতিহাসের অতলে এখনই সময় তার যথাযথ মূল্যায়নের।
হ্যাপী