ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৮ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২

সংস্কৃতি সংবাদ

সুন্দরের প্রতিচ্ছবিময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত উৎসব

সংস্কৃতি প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০০:২৪, ৮ মে ২০২৫

সুন্দরের প্রতিচ্ছবিময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত উৎসব

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংগীত উৎসবের একটি বৃন্ধ পরিবেশনা

বৈশাখী সকাল থেকেই সুর সফরের সূচনা হয়। সেই সুরেলা শব্দধ্বনি বিকেল গড়িয়ে রাত অবধি রাঙিয়েছে শ্রোতার হৃদয়। সুরের পরিভ্রমণে উচাটন হয়েছে মন। আর এই সংগীতাসরে গান শুনিয়েছে গানের শিক্ষার্থী থেকে আমন্ত্রিত প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পীরা। উপস্থাপিত হয়েছে একক থেকে দলীয় পরিবেশনা। গাওয়া হয়েছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ, জাতীয় কবি নজরুল থেকে ফকির লালন সাঁইয়ের গান।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সমান্তরালে সাধারণ শ্রোতারাও উপভোগ করেছেন বৈচিত্র্যময়  সেসব পরিবেশনা। এভাবেই সুন্দরের ছবি এঁকে বুধবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ আয়োজিত চতুর্থ সংগীত উৎসব। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান মাঠে অনুষ্ঠিত সংগীতাসরটি উৎসর্গ করা হয় সংগীত বিভাগের অকালপ্রয়াত কৃতী শিক্ষার্থী প্রত্যাশা মজুমদারকে। প্রত্যাশাকে হারানোর শোক অনুপ্রেরণার উৎস হয়েছে।

এবারের সাংস্কৃতিক মিলনমেলায় সম্মাননা প্রদান করা হয় প্রখ্যাত নজরুলসংগীত শিল্পী ও স্বাধীন বাংলা বেতারের কণ্ঠযোদ্ধা শাহীন সামাদকে। 
সংগীত উৎসবের উদ্বোধন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমীন।

স্বাগত বক্তব্য দেন সংগীত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আলী এফ. এম রেজোয়ান। সভাপতিত্ব করেন সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ঝুমুর আহমেদ। এ সময় পরিবেশিত হয় ‘ধ্বনিল আহ্বান’ এবং ‘ও আলোর পথযাত্রী’ শীর্ষক উদ্বোধনী সংগীত। 
তিন পর্বে বিভক্ত আয়োজনের পরিবেশনা পর্বে সম্মেলক কণ্ঠে গাওয়া হয়েছে সলিল চৌধুরী রচিত ‘শান্তির গান’। সেই সূত্রে অনেকগুলো কণ্ঠ মিলে গেছে এক স্বরে। বিভেদের উল্টোপিঠে ঐক্য ও শান্তির প্রত্যাশায় উচ্চারিত হয়েছেÑ আমাদের নানান মতে নানান দলে দলাদলি/কেউবা চলে ডাইনে বা কেউ বাঁয়ে চলি ...। পরিবেশিত হয়েছে নজরুলসংগীতের মূল গান ও ভাঙা গান। রাগ নটবেহাগের আশ্রয়ে নজরুলসংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা শুনিয়েছে  ‘রুমঝুম রুমঝুম নূপুর বোলে’ ও ‘শুকনো পাতার নূপুর পায়ে’।

পরিবেশিত হয়েছে মেঠোপথের সুর¯œাত লোকসংগীত। বৃন্দ কণ্ঠে শিক্ষার্থীরা গেয়েছে ‘নাও ছাড়িয়া দে পাল উড়াইয়া দে’ ও ‘কই যাওরে পদ্মার ঢেউ’ শীর্ষক সংগীত। এ ছাড়া সম্মেলক কণ্ঠের পরিবেশনায় গীত হয়েছে ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’। ছিল শাস্ত্রীয় সংগীতের পরিবেশনা। অতিথি শিল্পী হিসেবে গানে গানে শ্রোতার হৃদয় রাঙান লাইসা আহমদ লিসা, খায়রুল আনাম শাকিল, প্রিয়াংকা গোপ, সাগর বাউলসহ খ্যাতিমান শিল্পীরা। এ ছাড়া শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে একক সংগীত পরিবেশন করেন অণিমা রায়, মাহমুদুল হাসান, স্বর্ণা তালুকদার, ফাইম হাসান, অনন্যা আচার্যী প্রমুখ।
প্রথম অধিবেশনে সার্বিক স্বরূপ সমীক্ষণ-সংগীত ও সংবিৎ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এ বিষয়ক প্রবন্ধ পাঠ করেন সংগীত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আলী এফ. এম রেজোয়ান। আলোচনায় অংশ নেন সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মাদ আলী নকী।

×