
ছবিঃ সংগৃহীত
সাবেক রাষ্ট্রদূত এস এম রাশেদ আহমেদ চৌধুরী সম্প্রতি এক টকশোতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থান ও কর্মকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “মোদি যে কার্ডটি খেলছেন, এটি একটি বিপজ্জনক কার্ড। আমি মনে করি, এটি ভারতের জন্য ক্ষতিকর হবে এবং ভারতকে দুর্বল করে ফেলবে।”
চৌধুরী জানান, অনেকেই মনে করছেন ভারত বর্তমানে পাকিস্তানের তুলনায় সামরিক দিক থেকে অনেক এগিয়ে। ২০২৪ সালে ভারতের প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় পাকিস্তানের তুলনায় নয় গুণ বেশি ছিল। তবে তার মতে, শুধু সামরিক খরচের পার্থক্য দিয়ে পাকিস্তানকে দুর্বল ভাবা উচিত নয়। পাকিস্তানের নিজস্ব সামরিক শক্তি, পেশাদার সেনাবাহিনী এবং দেশীয় প্রযুক্তিতে উৎপাদিত অস্ত্রশস্ত্র একে এখনও এক কার্যকর প্রতিপক্ষ হিসেবে ধরে রেখেছে।
তিনি আরও বলেন, “যদিও ভারত এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী, পশ্চিমা দেশ বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে, তবু পাকিস্তানের প্রতিরোধ শক্তিকে খাটো করে দেখা যাবে না। পাকিস্তান কখনও মাথা নত করার দেশ নয়। এ দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই ভারতের কাশ্মীর নীতির সমালোচনা করা উচিত।”
চৌধুরী বলেন, “কাশ্মীরের জনগণ ভারতের এই সিদ্ধান্তকে মেনে নেয়নি। গায়ের জোরে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি অনুযায়ী, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার যেকোনো বিরোধ শান্তিপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের কথা বলা হয়েছিল। তার বিকল্প কিছু হতে পারে না।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “যে নাম ‘সিঁদুর’ দেওয়া হয়েছে, বা ধর্মীয় উপাদানকে সামনে এনে জাতীয়তাবাদ গঠনের চেষ্টা করা হচ্ছে, সেটি একটি বিপজ্জনক প্রবণতা। ইতিহাস বলে, অতিরিক্ত ধর্মীয় রাজনীতি একটি দেশকে ভেতর থেকে দুর্বল করে দেয়। পাকিস্তানের ইতিহাসই এর উদাহরণ।”
বাংলাদেশের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের দেশে সব ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করছে। আমরা বাংলা সংস্কৃতি, সুফিবাদ ও ইসলামিক সহনশীলতার মিশ্রণে গড়ে উঠেছি। হিন্দু, মুসলমান – আমরা সবাই একসাথে বেড়ে উঠেছি। আমি ছোটবেলায় হিন্দু শিক্ষকদের কাছেই সবচেয়ে ভালো শিক্ষা পেয়েছি। আমাদের দেশে কোনোদিন ধর্মকে এভাবে অস্ত্র বানানো হয়নি।”
তিনি শেষ করেন এই মন্তব্য দিয়ে: “মোদি যেভাবে ধর্মের কার্ড খেলছেন, সেটি শুধু ভারতের ভবিষ্যতের জন্য নয়, গোটা উপমহাদেশের জন্যই বিপজ্জনক।”
তথ্যসূত্রঃ https://www.facebook.com/share/1CSAxFTWRk/
মারিয়া