নির্বাচনে হেরে ডিপজলকে ফুলের মালা দিয়ে নিপুণের বরণ
গত ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হন জনপ্রিয় অভিনেতা মিশা সওদাগর এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী হন চলচ্চিত্রের মুভি লর্ড মনোয়ার হোসেন ডিপজল। সাধারণ সম্পাদক পদে ডিপজলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন অভিনেত্রী নিপুণ। নির্বাচনে হেরে অভিনেত্রী নতুন কমিটিকে ফুলের মালা দিয়ে সে সময় বরণ করেন।
একই সময়ে তিনি জানান, ‘তার অধীনে এ নির্বাচন খুব সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকেও তিনি ধন্যবাদ জানান এত সুন্দর একটি নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য’। তবে এক মাস না যেতেই অভিনেত্রী সুর বদলালেন। দুই বছর আগে জায়েদ খানের সঙ্গে হেরে যেভাবে কোর্টের দারস্থ হলেন এবারও সে পথে হাঁটলেন তিনি।
গত ১৫ মে নিপুণের পক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট পলাশ চন্দ্র রায় একটি রিট আবেদন করেন। রিটে নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে এ ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের পাশাপাশি নতুন করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও মিশা-ডিপজলের নেতৃত্বাধীন কমিটির দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়।
এরই পরিপেক্ষিতে সোমবার (২০ মে) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ একটি আদেশ দেন। জানান, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না মনোয়ার হোসেন ডিপজল। নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তারের রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত স্থগিতাদেশ দিয়েছেন পদটিতে। এদিকে নিপুণের এমন কর্মকা-ে সিনেমার অনেকেই তাকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করছেন।
বিশেষ করে সিনিয়র শিল্পীদের মন্তব্য, ‘পুনরায় কোর্টে যাওয়া নিপুণের উচিত হয়নি।’ অন্যদিকে নিপুণ আবার ডিপজলকে ‘অশিক্ষিত’ বলেও মন্তব্য করেন। তার ভাষ্য, স্যরি টু সে, আমাকে বলতে হচ্ছে শিল্পী সমিতিতে এমন একজন সেক্রেটারি পদে এসেছেন যার কোনো শিক্ষা নেই। এটা ২০২৪ সাল। আমরা ২০২৪ সালে দাঁড়িয়ে আছি। এটা অশিক্ষিত লোকদের জায়গা না, এটা আনকালচারদের জায়গা না।
এটা কাজ করে দেখিয়ে দেওয়া লোকদের জায়গা। এরপর নিপুণ বলেন, ‘শুধু কাজ করলেই হবে না। জ্ঞান থাকতে হবে, শিক্ষিত হতে হবে। আমি একজন গ্র্যাজুয়েট। আমার তিন প্রজন্ম গ্র্যাজুয়েট।’ নিপুণের কটাক্ষের জবাব দিয়ে ডিপজল বলেন, ‘তিনি তার বাপকেই অস্বীকার করে। রক্তের সমস্যা না হলে এমন বলতে পারে না। কারণ ও (নিপুণ) যাকে দিয়ে চলচ্চিত্র চিনেছে তাকেই ভুলে গেছে, অস্বীকার করছে। কেস খেলবা আসো। যেটা খেলার মন চায় সেটাই খেলো। আমরা চাই ভদ্রতা ও নম্রতা।
আমরা চাই চলচ্চিত্র কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায় সেদিকেই কাজ করব। আমরা ঝামেলা চাই না।’ ডিপজলকে অশিক্ষিত বলায় সোশ্যাল মিডিয়ায় নিপুণ মারাত্মক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। এই মুহূর্তে নিপুণ লস অ্যাঞ্জেলেসে রয়েছেন। সেখান থেকে তিনি বলেন, নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আসার আগে আমার আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করেছিলাম। তিনি বললেন এক মাস হয়ে গেলেও সমস্যা নেই।
আমার হাতে যেহেতু কারচুপির প্রমাণ আছে, সঠিক বিচার আদালত করবেন। এ মাসের শেষে ঢাকায় ফিরব। আমার কাছে থাকা যথেষ্ট প্রমাণ আদালতে তুললেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।’ ডিপলজল বলেন, ‘নিপুণের পেছনে অবশ্যই বড় কোনো শক্তি আছে। যেহেতু দেশের বাইরে থেকে নিপুণ এসব করছে, সেহেতু বুঝতে হবে তার পেছনের হাত লম্বা।’ এখন সময় বলে দেবে নায়িকা আর ভিলেনের এ হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে কে জেতেন কে হারেন।