
মৌটুসী বিশ্বাস
নাটকপাড়ার প্রিয় মুখ মৌটুসী বিশ্বাস। খুব বেশি কাজ করছেন না আজকাল। তবে ‘আড়াই মন স্বপ্ন, ‘স্পটলাইট’র মতো গল্প ও চরিত্র পেলে সেটিতে না করছেন না। অভিনেত্রীর ভাষ্য, অভিনয়ের ক্ষুধা তার ক্রমেই বেড়ে চলেছে। একই সঙ্গে অভিনয়ের পাঠ নিতেও মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। সে কারণেই থিয়েটার বটতলার সঙ্গে যুক্ত হয়ে রচনা করে যাচ্ছেন অভিনয় জীবনের নতুন অধ্যায়।
সম্প্রতি মঞ্চ নাটকের সঙ্গেও যুক্ত হয়েছেন তিনি। মৌটুসী বলেন, আমি নাট্যসংগঠন বটতলার সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। সামিনা লুৎফা নিত্রা ও কাজী রোকসানা রুমার সঙ্গে কাজ করেছি। ‘তিনকন্যা’ শীর্ষক একটি মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেছি। মঞ্চস্থ’ হয় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে। নিপীড়িত নারীদের উপর নাটকটি নির্মিত হয়েছে। ‘আলী যাকের নতুনের উৎসব’ এ নতুন নাটক ‘সখী রঙ্গমালা’র প্রচারে কাজ করেছি। অভিনয় ছেড়ে দিয়েছি তা নয়। যে অভিনয় আমাকে আনন্দ দেবে সেটাই করছি।
মঞ্চের অভিজ্ঞতা নিয়েও তিনি কথা বলেন। জানান, দারুণ অভিজ্ঞতা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘তিন কন্যার চিত্রনাট্য লিখেছেন সামিনা লুৎফা নিত্রা। নির্দেশনায় ছিলেন মোহাম্মদ আলী হায়দার। এটি আমার মঞ্চে করা প্রথম কাজ। মঞ্চে দাঁড়ানোর আগে শঙ্কায় থাকলেও পরে উতরে যাই। অন্যদিকে শাহীন আখতার রচিত ‘সখী রঙ্গমালা’ উপন্যাসকে নাট্যরূপ দিয়েছেন সামিনা লুৎফা নিত্রা ও সৌম্য সরকার।
গত ২৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার নাগরিক নাট্য সম্প্রদায় ও মঙ্গলদ্বীপ ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘আলী যাকের নতুনের উৎসব’-এ নাটকটির প্রথম প্রদর্শনী সম্পন্ন হয়। ‘সখী রঙ্গমালা’ বিশাল আয়োজন। অনেকেই এর সঙ্গে যুক্ত আছে। বটতলা ধীরে ধীরে ডানা মেলছে। অনেককেই তাদের ডানার ছায়ায় নিয়ে আসছে। তার মধ্যে আমিও একজন। গেল কয়েক মাস সকলে প্রচুর পরিশ্রম করেছেন। আমাকে প্রতিদিন যেতে হয়নি। যেহেতু প্রচারে ছিলাম।
ইতিবাচক পরিবেশ থাকলে নিজেও ইতিবাচক হয়ে ওঠা যায়। আমার এ রকম একটি অভিজ্ঞতা হয়েছে। এই অভিজ্ঞতার মাঝে থাকতে চাই। এ অভিনেত্রী এখন একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ‘স্পিচ অ্যান্ড ড্রামা’ বিষয়ক কর্মশালায় শিশুদের নিয়ে কাজ করছেন। একজন ট্রেইনার হিসেবে তিনি আছেন। তিনি বলেন, আমার শিক্ষার্থীরা তিন থেকে দশ বছরের শিশু। অভিনেত্রী বলেন, ছয় মাসের এ কর্মশালার জন্য আমি বটতলার কাছে কৃতজ্ঞ। শিশুরা আমাকে সামনে থেকে দেখছে।
কিন্ত আমার পেছনে বটতলা যেমন আছে, স্কুলও আছে। নতুন করে শিখছি। নতুন করে ভাবছি। ভালো লাগছে। এ ছাড়া কৃষিকাজ তো আছেই। বেকার বসে নেই এটুকু বলতে পারি। কৃষি কাজ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুলনায় কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত আছি। ওখানে আদার চারা লাগিয়েছিলাম। এখন সে আদা বাজারে বিক্রির সময় হয়েছে। টেলিভিশন ওটিটি আমার জন্য এখন আদার ব্যাপারী হয়ে জাহাজের খবর নেওয়ার মতো। তবে, গল্প চরিত্র পা-ুলিপি পছন্দ হলে অবশ্যই কাজ করব।
অভিনয়ের বিভিন্ন কর্মশালায় অংশ নিচ্ছি। টেলিভিশনে কেন কম কাজ করছেন সেটিও তিনি তুলে ধরেন। আজকাল টেলিভিশনের গল্প তাকে টানে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন। নাটককন্যা বলেন, পা-ুলিপি আসছে। সিনোপসিস আসছে।
কিন্তু ভালো লাগছে না। এতদিন ভালো না লাগলেও নিজেকে ধাক্কা দিয়ে দিয়ে কাজ করেছি। আর করতে চাই না। তার কথা থেকে বোঝা গেল, পরিচিতি কিংবা জনপ্রিয়তার মোহে এখন আর তিনি অভিনয় করতে চান না। বরং কাজের মধ্য দিয়েই দর্শকমনে দাগ কাটতে চান।