
৪৮ তম বিসিএস, বিশেষ করে চিকিৎসকদের জন্য, একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। কিন্তু এ নিয়ে অনেকের মধ্যেই দুশ্চিন্তা কাজ করছে—সময় খুব কম, প্রস্তুতির চাপ বেশি, দুই ধরনের সিলেবাস মাথায় রাখতে হচ্ছে। তবে এই চাপ বা অনিশ্চয়তা থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব—যদি প্রস্তুতির কৌশলটা বাস্তবভিত্তিক হয়।
প্রথমেই যেটা মনে রাখা দরকার—এই অল্প সময়ের মধ্যে এমন কিছু অসাধারণ প্রিপারেশন সম্ভব নয়, যেটা কাউকে হঠাৎ করে অনেক এগিয়ে নিয়ে যাবে, আবার কারও অবস্থান একেবারে নিচে নামিয়ে দেবে। এই সময়টা মূলত নিজের আগে শেখা বিষয়গুলো ঝালিয়ে নেওয়ার এবং যেখানে দুর্বলতা আছে, সেখানে ফোকাস দেওয়ার সময়।
এই পরীক্ষার চ্যালেঞ্জটা হলো—এতে জেনারেল বিসিএসের অনেক বিষয় যেমন আছে, তেমনি আছে মেডিকেল সায়েন্সের পূর্ণ পাঠ্যসূচিও। ফলে দেখা যাচ্ছে, কেউ জেনারেল পার্টে ভালো, কেউ আবার মেডিকেলে।
এই বাস্তবতা মাথায় রেখে প্রস্তুতির পরিকল্পনাটাও হওয়া উচিত ব্যক্তিভিত্তিক।
যেমন:
-
যারা জেনারেল বিসিএস নিয়ে আগে থেকে পড়েছেন, তারা এই কয়দিনে মেডিকেল অংশ থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন চর্চা করতে পারেন।
-
আর যাদের মেডিকেল অংশ ভালোভাবে পড়া আছে, তাদের উচিত জেনারেল বিসিএসের পুরোনো প্রশ্নগুলো সলভ করা, অথবা টপিকভিত্তিক গাইড দেখে নেওয়া।
এই কয়েক দিনের মধ্যে পুরো সিলেবাস কাভার করতে যাওয়া অর্থহীন চাপের সৃষ্টি করবে। বরং ফোকাস হওয়া উচিত—"আমি কোন কোন অংশে দুর্বল, এবং কীভাবে সবচেয়ে কম সময়ে বেশি কার্যকর প্রস্তুতি নেওয়া যায়।"
এছাড়া আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো মনস্তাত্ত্বিক প্রস্তুতি। অনেকেই পরীক্ষাকে এতটাই ‘লাইফ অ্যান্ড ডেথ’ ইস্যু বানিয়ে ফেলেন, যে মানসিক চাপেই পারফরম্যান্স ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বলা ভালো, একটা পরীক্ষা কখনোই জীবনের শেষ সুযোগ নয়। দরজা বন্ধ হলে নতুন দরজা খুলতে বেশি সময় লাগে না—এই মানসিকতা থাকলে প্রস্তুতির সময়ও ভারসাম্য রাখা যায়, পরীক্ষার হলে মাথাও ঠান্ডা থাকে।
সব মিলিয়ে বলা যায়—
-
সময়ের সীমাবদ্ধতা মেনে,
-
নিজের দুর্বল জায়গায় মনোযোগ দিয়ে,
-
পুরোনো শেখাকে ভরসা করে,
-
এবং অতি প্রত্যাশা থেকে বেরিয়ে এসে প্রস্তুতি নিলে,
এই ৪২তম বিসিএসও জয় করা সম্ভব।
সানজানা