ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

ঢাবিতে অনুমতি না দিয়ে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের বিবৃতিতে নাম, ক্ষোভ প্রকাশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২১:৪৬, ১০ জুলাই ২০২৫

ঢাবিতে অনুমতি না দিয়ে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের বিবৃতিতে নাম, ক্ষোভ প্রকাশ

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একাংশ শিক্ষক দেশের সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার প্রেক্ষিতে ‘মব সন্ত্রাস’ বা গণহিংসার বিরুদ্ধে বিবৃতি দিলেও তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। প্রকাশিত বিবৃতিতে ৭১ জন শিক্ষকের নাম উল্লেখ করা হলেও, একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করেছেন—তাদের পূর্বানুমতি ছাড়াই বিবৃতিতে তাদের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা।

বুধবার (৯ জুলাই) বিকালে প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে গণহিংসার নিন্দা জানিয়ে প্রতিরোধের আহ্বান জানানো হয়। বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে "মব ও মানবাধিকার ইস্যুতে উদ্বেগ জানিয়ে ঢাবির ‘আওয়ামীপন্থী’ ৭১ শিক্ষকের বিবৃতি" শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি সামনে আসে।

ভুক্তভোগী শিক্ষকদের প্রতিবাদ

আরবি বিভাগের পাঁচজন শিক্ষক—সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ আরশাদুল হাসান, ড. মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, আহমদ হাসান চৌধুরী, প্রভাষক ইমরান হোসাইন এবং নাঈমুল ইসলাম—এক যৌথ লিখিত বিবৃতিতে জানান, তাদের কোনো ধরনের সম্মতি ছাড়াই বিবৃতিতে নাম ব্যবহার করা হয়েছে।

তারা বলেন: “আমাদের কারও সাথেই এই বিবৃতি বিষয়ে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। আমরা কোনো স্বাক্ষর দেইনি, এমনকি বিষয়টি জানতেও পারিনি। আমাদের নাম এভাবে ব্যবহার সম্পূর্ণ অনৈতিক। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনায় সকলের সতর্কতা কামনা করছি।”

শুধু আরবি বিভাগ নয়, উর্দু বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজাউল করিমও একই অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, “আমি কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই। আমাকে কেউ কিছু জানায়নি, জিজ্ঞেসও করেনি। আজ সংবাদ দেখে আমি বিস্মিত ও মর্মাহত।”

নীল দল ও প্রশাসনের অবস্থান

ঢাবির আওয়ামীপন্থী শিক্ষক সংগঠন ‘নীল দল’-এর আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. আমজাদ আলী বিবৃতি থেকে নিজ সংগঠনের সম্পূর্ণ দায় এড়িয়ে বলেন, “আমি এ বিবৃতির বিষয়ে কিছুই জানি না। এটি নীল দলের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। যারা দিয়েছেন, এটি তাদের ব্যক্তিগত মত। নীল দলের সঙ্গে এ বিবৃতির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।”

এদিকে এ বিষয়ে জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

উঠছে প্রশ্ন: কারা দিল এই বিবৃতি?

৭১ জন শিক্ষকের নাম নিয়ে প্রকাশিত বিবৃতির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। এতে কারা প্রকৃতভাবে যুক্ত ছিলেন এবং কীভাবে নামগুলো যুক্ত হলো—তা এখনো স্পষ্ট নয়। শিক্ষকমহলে বিষয়টি ঘিরে ক্ষোভ ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছে।

শিক্ষকদের সম্মতি ছাড়া তাদের নাম ব্যবহার করা কতটা নৈতিক ও আইনসিদ্ধ, সে প্রশ্নও তুলছেন সংশ্লিষ্টরা।

আসিফ

×