![নান্দনিক ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে চাই নান্দনিক ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে চাই](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2023May/campus-2-2309301456.jpg)
অধ্যাপক ড. মো. কবির হোসেন
অধ্যাপক ড. মো. কবির হোসেন। ১৯৯১ সালে প্রথম প্রভাষক হিসেবে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) পরিসংখ্যান বিভাগে শিক্ষকতা শুরু করেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম অধ্যাপকও তিনি। এছাড়া একই শিক্ষালয়ে গত ১০ জুলাই রাষ্ট্রপতির নির্দেশক্রমে শিক্ষকদের মধ্য থেকে প্রথম উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন তিনি। নতুন দায়িত্বের অনুভূতি ও পরিকল্পনা বিষয়ে দৈনিক জনকণ্ঠের সঙ্গে কথা হয় উপ-উপাচার্যের। সাক্ষাৎকার
নিয়েছেন শাবি প্রতিনিধি- নোমান মিয়া।
জনকণ্ঠ: দুই দশক পরে নতুন উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় আপনার অনুভূতি জানতে চাই-
উপ-উপাচার্য: রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, যাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতায় উপ-উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছি। এটা আমার জন্য আনন্দের যে, আমি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেছিলাম। তিন দশকের বেশি সময় ধরে শিক্ষকতা করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের পদে আসীন হওয়ায় অনেক সম্মানের। বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতায় ভবিষ্যৎ পথ চলতে চাই।
জনকণ্ঠ: বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কি?
উপ-উপাচার্য: প্রথম ও বৃহৎ পরিকল্পনা হচ্ছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট গঠন করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম এটি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটরা অনেকেই এখন প্রতিষ্ঠিত। আগামী ৬ মাসের মধ্যে সিনেট গঠনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এটা অত্যন্ত জরুরি। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি প্যারামিটারকে যথাযথভাবে ব্যবহার করে আন্তর্জাতিকমানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শাবিকে গড়ে তুলতে চাই। এ ছাড়া ক্যাম্পাসকে নান্দনিকভাবে গড়ে তুলার জন্য অনেক পরিকল্পনা রয়েছে; শিক্ষার্থীরা হতাশা, ক্লান্তি কিংবা হীনম্মন্যতায় ভুগলে ক্যাম্পাস ঘুরলে যাতে তাদের মন প্রফুল্ল হয়ে যায়। এভাবে ক্রমান্বয়ে পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।
জনকণ্ঠ: তিন দশকের বেশি সময় ধরে শিক্ষকতা পেশায় আছেন। শিক্ষার গুণগতমান বজায় রাখতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক নিয়ে আপনার মতামত কি?
উপ-উপাচার্য: আমি হলফ করে বলতে পারি; এ সময়টা কেটেছে তাদেরকে আদর ও ভালোবাসার মাধ্যমে শাসন করে। বিভিন্ন ইস্যুতে তাদেরকে ডেকে নিয়ে বুঝিয়েছি। মাদকাসক্ত শিক্ষার্থীদেরকে বিপথ থেকে ফেরাতে চেষ্টা করেছি। তাই কোনো শিক্ষক যদি শিক্ষার্থীদেরকে নিজেদের সন্তান মনে করে পাঠদান করান, আদর-স্নেহের সংস্পর্শে রাখেন এবং সঠিক পরামর্শ দেন, তাহলে শিক্ষার্থীরা পাঠদানে মনোযোগী হবে। পাশাপাশি তারা একজন সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে। আন্তার্জাতিকমানের গ্রাজুয়েট হবে। তাই শিক্ষকদের প্রতি পরামর্শ থাকবে, আপনারা শিক্ষার্থীদের জন্য অভিভাবকসমতুল্য ভূমিকা রাখার চেষ্টা করবেন।
জনকণ্ঠ: করোনার পরবর্তীতে নানা ইস্যুতে ক্যাম্পাসে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ভবিষ্যতে শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা কেমন থাকবে?
উপ-উপাচার্য: করোনা পরবর্তীতে নানা ইস্যু দেখা গেছে। সকলের চেষ্টায় আমরা সেগুলো কাটিয়ে উঠেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রমের পরিবেশ স্থিতিশীল রাখতে প্রশাসন সর্বদা সচেষ্ট থাকবে। এক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা চাই।
জনকণ্ঠ: বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো ক্লাস, ল্যাবসহ বিভিন্ন ধরনের সংকট রয়েছে। এ সংকট কাটিয়ে উঠতে কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ কি ?
উপ-উপাচার্য : এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২শ’ কোটি ৩৮ লাখ টাকার একটি প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে। এর মাধ্যমে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কোয়ার্টার, ছাত্রছাত্রীদের আবসিক হল, বিভাগের ওয়ার্কশপ নির্মাণসহ বেশ কয়েকটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ৯৮৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকার প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে আগামী একশ’ বছরের ক্লাস, ল্যাব, হলসংকট থাকবে না। এসব প্রকল্প তদারকির জন্য উপাচার্য ৯ সদস্যের কমিটি করেছেন। সেখানে আমি আহ্বায়ক হিসেবে আছি।
জনকণ্ঠ: আগামী ৪ বছর পর ক্যাম্পাসকে কোন্ পর্যায়ে দেখতে চান?
উপ-উপাচার্য: শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি পুরোপুরো সবুজ ক্যাম্পাস উপহার দিতে চাই। একইসঙ্গে এ প্রতিষ্ঠান শুধু দেশের মধ্যে শীর্ষ নয়; আন্তজার্তিক অঙ্গনে অন্যতম স্থান করে নেবে। এজন্য গবেষণা, উদ্ভাবন, শিক্ষার গুণগতমানে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়ের জন্য এসব জরুরি। আশা করি আগামী ৪-৫ বছর পর ক্যাম্পাস হবে নান্দনিক, অবকাঠামোগত ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ঈর্ষণীয় সাফল্যের।