
বাংলাদেশী পণ্যের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মাছসহ বছরে শত শত কোটি টাকার বাংলাদেশী পণ্য রপ্তানী হয় ভারতের ত্রিপুরায়। গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এ স্থলবন্দর দিয়ে ৫১৪ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছে। যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের চেয়ে ৮৭ কোটি টাকার পণ্য বেশি রপ্তানি হয়েছে। তার মধ্যে মাছ রপ্তানি হয়েছে ২৯৬ কোটি ৬ লাখ ৫২ হাজার ৬১২ টাকা।
আখাউড়া স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৫১৪ কোটি ৩৪ লাখ ২৪ হাজার ৫৯ টাকার বাংলাদেশী পণ্য ত্রিপুরায় রপ্তানী হয়েছে। বিগত অর্থবছরের চেয়ে এই স্থলবন্দর দিয়ে ৮৭ কোটি টাকার বেশি পণ্যরপ্তানি হয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে। এই সময়ে আমদানি করা হয়েছে, ৭ কোটি ৩১ লাখ ৮২ হাজার ৭৫৯ টাকার পণ্য। যা থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ৪ কোটি ১৬ লাখ ৮৪ হাজার ৬১৯ টাকা।
এই স্থল বন্দর দিয়ে মাছ, সিমেন্ট, এল পি জি, হালকা পানীয়, পিভিসি পাইপ, প্লাষ্টিক সামগ্রী ও পাম তেলসহ বিভিন্ন বাংলাদেশী পণ্য সামগ্রী ত্রিপুরায় রপ্তানি হয়। বিপরীতে ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে আমদানি করা হয় জিরা, ডাল, কাজু বাদামসহ কিছু পণ্য সামগ্রী।
আখাউড়া স্থলবন্দরের মাছ রপ্তানী কারক এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক মো: ফারুক মিয়া জানায়, বাংলাদেশী মাছের চাহিদা অনেক বেশী থাকায় অন্যান্য পণ্যের চেয়ে কয়েক গুণ বেশী মাছ রপ্তানী হয় ভারতের ত্রিপুরায়। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন প্রায় অর্ধ কোটি টাকার বেশি মাছ রপ্তানী হয় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে। কোন কারণে মাছ রপ্তানী বন্ধ থাকলে ত্রিপুরার বাজার গুলোতে মাছের চাহিদা বেড়ে যায় বলেও তিনি জানান।
আখাউড়া স্থলবন্দর সিএন্ড এফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি হাসিবুল হোসেন জানান, মাছ ছাড়াও অন্যান্য পণ্যের চাহিদা বাড়ছে ত্রিপুরায়। সিমেন্ট, এল পি জি, পানীয়, পিভিসি পাইপসহ প্লাষ্টিকের নানা সামগ্রী এমনকি পরিশোধিত পাম তেলও বাংলাদেশ থেকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে রপ্তানী হয়। তিনি জানান, ত্রিপুরা থেকে যে পরিমান মালামাল বাংলাদেশে আমদানী হয় বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় তার শতগুণ বেশী পণ্য রপ্তানী হয়। তবে ভারত সরকার সম্প্রতি কয়েকটি পণ্য বাংলাদেশ থেকে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় বেশ ক্ষতির মুখে পড়েছে রপ্তানি কারকরা। প্লাস্টিক সামগ্রী,কাঠের ফার্নিচার, পাট জাতীয় পণ্য, কোমল পানীয়, বর্জ্য তুলাসহ কয়েকটি পণ্য ভারত আমদানি নিষিদ্ধ করায় স্থলবন্দরের রপ্তানিতে বেশ প্রভাব পড়েছে।
আখাউড়া কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো: জাহাঙ্গীর আলম জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত আখাউড়া স্থল বন্দর দিয়ে ৫১৪ কোটি টাকার বেশি মাছসহ বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী রপ্তানি করা হয়েছে। এ সময়ে আমদানি হয়েছে প্রায় ৭ কোটি টাকার পণ্য। এই বন্দর দিয়ে রপ্তানিকৃত পণ্যের মধ্যে মাছ রপ্তানি হয় বেশি। ভারত থেকে কয়েকটি পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়াই রপ্তানিতে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। উল্লেখ্য আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সেভেন সিস্টার খ্যাত সাতটি অঙ্গরাজ্যে বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী রপ্তানি হয়ে থাকে।
রাজু